ইসকনকে জঙ্গি সংগঠন আখ্যা দিল হেফাজত

 নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
প্রকাশ : ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২১: ২৮
আপডেট : ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২১: ৪৫
আজ শুক্রবার (৮ নভেম্বর) চট্টগ্রাম নগরের আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ চত্বরে হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশের বিক্ষোভ সমাবেশ। ছবি: আজকের পত্রিকা

ইসকনকে জঙ্গি সংগঠন আখ্যা দিয়ে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের তাদের কোনো ফাঁদে পা না দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। চট্টগ্রামের হাজারি গলিতে দোকানে হামলা, ভাঙচুর ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর অ্যাসিড সন্ত্রাসের প্রতিবাদে আজ শুক্রবার (৮ নভেম্বর) চট্টগ্রাম নগরের আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ চত্বরে জুমার নামাজ শেষে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে এ আহ্বান করা হয়।

সমাবেশে সংগঠনের ছাত্র ও যুববিষয়ক সম্পাদক মাওলানা কামরুল ইসলাম কাশেমী বলেন, ‘হেফাজত ইসলামের দায়িত্ব হচ্ছে মুসলিম সমাজের কাছে তার করণীয় কী, তা অবগত করা। যখন কোনো মোমিন আক্রান্ত হয়, তখন তার পাশে যদি অন্য মোমিনরা না দাঁড়ায়; তাহলে আল্লাহর পক্ষ থেকে আজাব আসে। আমরা সকলেই একটা শান্তিপূর্ণ সমাজ কামনা করি। এ দায় থেকে হেফাজত ইসলাম আজকের বিক্ষোভ সমাবেশ আয়োজন করেছে।’

তিনি বলেন, ‘দেশের শাসনে যে ফ্যাসিবাদ ও নৈরাজ্য ব্যবস্থা সৃষ্টি করেছিল, ছাত্র-জনতা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তা নস্যাৎ করে দিয়েছে। আমাদের প্রধানতম দায়িত্ব হচ্ছে, আমরা যে ১৬ বছর নৈরাজ্যকর অবস্থাতে ছিলাম, এখন যে মুক্ত বাতাসে কথা বলতে পারছি, এই অধিকার যেন আবার হারিয়ে না ফেলি। আমাদের প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমরা যেভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলাম, সেটা ধরে রাখতে হবে। কোনো কারণে, কোনো উসকানিতে তা যেন বিনষ্ট না হয়। আমাদের একতা নষ্ট করতে ভেতরে-বাইরে থেকে ষড়যন্ত্র হচ্ছে।’

ইসকনকে জঙ্গি সংগঠন আখ্যা দিয়ে কাশেমী বলেন, ‘ইসকন নিয়ে আমাদের সুস্পষ্ট বক্তব্য হচ্ছে, ইসকন কোনো ধর্মীয় সংগঠন নয়। ইসকন একটি আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন। ইসকন বিভিন্ন দেশে ইতিমধ্যে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। অতএব ইসকন সনাতনের কোনো ধর্মীয় সংগঠন নয়। ইসকন একটি ইহুদি ও খ্রিষ্টানদের লালিত-পালিত একটি জঙ্গি সংগঠন। তাই আমাদের হিন্দু ভাইদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, আপনারা ইসকনের ফাঁদে পা দেবেন না।’

ইসকন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের শত্রু উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এরই মধ্যে আমরা দেখতে পেয়েছি, আমাদের সনাতন ভাইয়েরা ইসকনের মাধ্যমে নির্যাতিত হয়েছেন। আমি কয়েকটি উদাহরণ দিচ্ছি। ইসকনের অন্যতম নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস, হাটহাজারী মেখলের পুণ্ডরীক ধামের প্রধান। সেখানে এই ইসকনরা আমাদের হিন্দু ভাইদের উচ্ছেদ করে দিয়েছে। কমপক্ষে ৫০ জন হিন্দু ভাইদের উচ্ছেদ করে তাদের জায়গা-জমি জবরদখল করে নিয়েছে।’

কাশেমী আরও বলেন, ‘সেখানে “উদয়ন” নামে আমাদের হিন্দু ভাইদের একটি সংগঠন ছিল, এই চিন্ময় কৃষ্ণ দাস উদয়ন সংগঠনটিকে উচ্ছেদ করে দিয়েছে। সেখানে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের একটি বিদ্যানিকেতন ছিল, তারা সেটিও উচ্ছেদ করে দিয়েছে। হিন্দুদের সমস্ত পূজাগুলো আগে সেখানে হতো, এখন সেখানে লালার পূজা হয়। অন্য কোনো পূজা হয় না সেখানে। এই ইসকনরা শুধু বাংলাদেশের শত্রু নয়, শুধু ইসলামের শত্রু নয়, ওরা আমাদের সনাতন ভাইদেরও শত্রু। অতএব, সনাতন ভাইয়েরা, আপনারা ইসকনদের কোনো ফাঁদে পা দেবেন না। এটাই হলো আমাদের সুস্পষ্ট বার্তা।’

হেফাজতে ইসলাম চট্টগ্রামের নেতা আনোয়ারুল রব্বানি বলেন, ‘এই ইসকনকে বাংলাদেশ থেকে নিষিদ্ধ করতে হবে। অন্যথায় হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশ আরও বড় কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে।’

এ সময় আরও বক্তব্য দেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কমিটির নায়েবে আমির সাজিদুর রহমান, সহদায়িক প্রধান সম্পাদক মাওলানা সাঈমুল্লাহ প্রমুখ।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত