১৯০০ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি বাতিলের ষড়যন্ত্র চলছে: সন্তু লারমা

রাঙামাটি প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২১ জুন ২০২৪, ১৫: ০৭
আপডেট : ২১ জুন ২০২৪, ১৮: ০১

পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু লারমা) বলেছেন, ‘১৯০০ সালের পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি বাতিলের ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। রাষ্ট্রের একটি অংশ এটি বাতিলের জন্য গভীর ষড়যন্ত্র করছে। ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে হবে। প্রতিহত করতে না পারলে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর অস্তিত্ব আরও হুমকির মধ্যে পড়বে।’

সন্তু লারমা বলেন, ‘ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। এই আন্দোলনে হেডম্যান (মৌজাপ্রধান) ও কার্বারিদের (গ্রামপ্রধান) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে। গ্রাম ও মৌজাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলনে শামিল হতে হবে।’

আজ শুক্রবার সকালে রাঙামাটি শহরের রাজদ্বীপ এলাকায় সিএইচটি হেডম্যান নেটওয়ার্ক কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত সিএইচটি হেডম্যান সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন সন্তু লারমা।

সন্তু লারমা বলেন, ‘২৬ জুলাই পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি ১৯০০-এর গুরুত্বপূর্ণ ধারা-উপধারা বাতিল সুপারিশের ওপর হাইকোর্টের আপিল বিভাগে শুনানি হবে। এই শাসনবিধি বাতিলের ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করতে হবে। ১৯০০ সালের শাসনবিধি বাতিল হলে পার্বত্য চুক্তি, জেলা পরিষদ, আঞ্চলিক পরিষদের আইন অস্তিত্বের হুমকিতে পড়বে।’

সন্তু লারমা আরও বলেন, ‘১৯৯৭ সালে যে পার্বত্য চুক্তি সম্পাদন হয়েছিল সেটা যাতে মানুষ ভুলে যায়, সে জন্য শাসকগোষ্ঠী তথা সরকার ষড়যন্ত্র করছে। তার অংশ হিসেবে ২৬ বছরেও চুক্তি বাস্তবায়ন করা হয়নি। বরং চুক্তিটি ভুলে যেতে বাধ্য করা হচ্ছে।’

মুখ্য আলোচকের বক্তব্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক কমিটির সভাপতি গৌতম দেওয়ান বলেন, ‘বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার বিএনপি সরকারের আমলের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে পার্বত্য চট্টগ্রাম ১৯০০ সালের শাসনবিধি কার্যকর আইন হিসেবে রায় পেয়েছে। কিন্তু সেই রায়কে কেন আবার রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) চাওয়া হচ্ছে? কার এত আগ্রহ সেটা জানার বিষয়। রায়ের বিরুদ্ধে যারা রিভিউ করেছেন, তাঁরা সমতল এলাকা থেকে আসা পার্বত্য চট্টগ্রামে পুনর্বাসিত সেটেলার। হাইকোর্টে তাঁদের উপস্থিতি দেখা যায় না।’

রায়কে পুনর্বিবেচনা নিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছেন বলে দাবি করেছেন সন্তু লারমা। তিনি বলেন, ‘অ্যাটর্নি জেনারেলের এই ভূমিকাকে মনে হচ্ছে তিনি সরকারের কোনো কিছু নয়। তিনি একজন সরকারবিরোধী। কারণ, অ্যাটর্নি জেনারেল যে ভূমিকা নিয়েছে—এটা সম্পূর্ণ সরকারবিরোধী।’

সম্মেলনে চাকমা সার্কেল চিফ রাজা দেবাশীষ রায় বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি বাতিলের যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, এটা পার্বত্য চট্টগ্রামের জন্য হুমকি। এটি কোনোভাবেই হতে দেওয়া যাবে না। এই ষড়যন্ত্র প্রতিহত আন্দোলনের ডাক এলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে অংশগ্রহণ করতে হবে।’

মং সার্কেল চিফ সাচিংপ্রু চৌধুরী বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি বাতিল ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে আরও কঠিন আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।’

সিএইচটি হেডম্যান নেটওয়ার্কের সভাপতি কংজরি চৌধুরীর সভাপতিত্বে সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন রাঙামাটি জেলা পরিষদের সদস্য সুবির কুমার চাকমা, সিএইচটি হেডম্যান নেটওয়ার্কের সহসভাপতি চিংকিউ রোয়াজা, সাধারণ সম্পাদক শান্তি বিজয় চাকমা এবং হেডম্যান জয়া ত্রিপুরা।

সম্মেলনের সভা শেষে কংজরি চৌধুরীকে সভাপতি ও শান্তি বিজয় চাকমাকে সাধারণ সম্পাদক করে ৩১ সদস্যর তিন বছর মেয়াদি কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটি ঘোষণা করেন সন্তু লারমা।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত