Ajker Patrika

শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলায় নিহতদের স্মরণ, বিচার হয়নি ৮ বছরেও

সাজন আহম্মেদ পাপন, কিশোরগঞ্জ 
আপডেট : ০৭ জুলাই ২০২৪, ১৮: ১৮
শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলায় নিহতদের স্মরণ, বিচার হয়নি ৮ বছরেও

কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলায় নিহতদের স্মরণ করেছে জেলা পুলিশ। আজ রোববার সকালে শোলাকিয়া ঈদগাহসংলগ্ন আজিমউদ্দিন উচ্চবিদ্যালয়ের সামনে কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ ও পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ রাসেল শেখ অস্থায়ী বেদিতে ফুল দিয়ে তাঁদের শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। পরে তাঁরা নিহতদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

এর আগে জেলা পুলিশের আয়োজনে নিহতদের স্মরণে সভা হয়। পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখের সভাপতিত্ব সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ। সভায় বক্তব্য দেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জিল্লুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এম এ আফজল, কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র পারভেজ মিয়া। সভা সঞ্চালনায় ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোস্তাক সরকার। উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) নূরে আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ অ্যান্ড অপস) মোহাম্মদ আল আমিন হোসাইন, কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা প্রমুখ।

এদিকে দীর্ঘ আট বছরেও শোলাকিয়া ঈদগাহ এলাকায় জঙ্গি হামলা মামলার বিচারকাজ শেষ হয়নি। ১০১ জন সাক্ষীর মধ্যে এখন পর্যন্ত ৬০ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। সরকার পক্ষের আইনজীবী (এপিপি) আবু সাঈদ ইমাম বলেন, আসামিদের কারও কারও নামে গুলশানের হলি আর্টিজান মামলাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় মামলা রয়েছে। এ জন্য সব সময় নির্ধারিত তারিখে কিশোরগঞ্জের সন্ত্রাস দমন ট্রাইব্যুনালে তাঁদের হাজির করা যায়নি। এ কারণে সাক্ষ্য গ্রহণ বিলম্বিত হচ্ছে। তবে যে ধরনের সাক্ষ্যপ্রমাণ রয়েছে, তাতে জঙ্গিদের সর্বোচ্চ সাজা হবে। ৩১ জুলাই সাক্ষ্যগ্রহণের পরবর্তী তারিখ ধার্য রয়েছে।

জঙ্গি হামলায় পুলিশ কনস্টেবল আনছারুল হক, জহিরুল ইসলাম ও গৃহবধূ ঝর্ণা রানী ভৌমিক নিহত হন। মারা যান আবির হোসেন নামের এক জঙ্গি। এ ছাড়া ১২ পুলিশ সদস্য ও চার মুসল্লি আহত হন। এ ঘটনায় কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় করা মামলায় ২৪ জনকে আসামি করা হয়। এসব আসামির মধ্যে ১৯ জনই বিভিন্ন সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন। তাই বেঁচে থাকা পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। তাঁরা হলেন কিশোরগঞ্জ শহরের পশ্চিম তারাপাশা গ্রামের জাহিদুল হক তানিম, গাইবান্ধার রাঘবপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধী, চাঁপাইনবাবগঞ্জের হাজারদীঘা গ্রামের মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান, গাইবান্ধার গান্ধারপাড়া গ্রামের আনোয়ার হোসেন ও কুষ্টিয়ার সাদীপুর কাবলীপাড়া গ্রামের আব্দুস সবুর খান হাসান ওরফে সোহেল মাহফুজ।

শোলাকিয়ায় সেদিন হামলার পর দৌড়ে যাচ্ছেন দুই জঙ্গি। ছবি: সিসি ক্যামেরা থেকে নেওয়াযে জানালাটা ভেদ করে গুলি ভেতরে গিয়ে ঝর্ণা রানী মারা যান, ৭ জুলাইয়ের স্মৃতি হিসেবে জানালাটার পাশে টানানো হয় ঝর্ণা রাণীর ছবি। তাঁর স্বামী গৌরাঙ্গ ভৌমিক গত ১৮ জুন মারা গেছেন। তাঁদের সন্তান শুভদেব পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছেন। মায়ের ছবি নিয়ে তিনি এখনো কাঁদেন। বাইরে কোনো কিছুর শব্দ হলেই ভয়ে আঁতকে ওঠেন। রাতে মা মা করে চিৎকার করে প্রায়ই ঘুম থেকে জেগে ওঠেন। ঘুমানোর আগে দরজা-জানালা ভালো করে বন্ধ করতে হয়। তিনি বলেন, ‘বিচার দেখার অপেক্ষায় থাকতে থাকতে বাবা মারা গেছেন। এখন আমরা মায়ের করুণ মৃত্যুর বিচার দেখার অপেক্ষায় আছি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ রাসেল শেখ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পুলিশ গুরুত্ব দিয়ে সফল তদন্ত শেষে মামলাটির অভিযোগপত্র দিয়েছে। এ জঙ্গি হামলা আমাদের জন্যও বিশেষ বার্তা ছিল। আজ আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থা গ্রহণ করে তাদের নির্মূল করতে পারছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার দায়িত্বেও ড. খলিলুর রহমান

ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলের পর আপাতত ভরসা ঢাকা ও সিলেট বিমানবন্দর

বাথরুমে গোপনে নারীদের ভিডিও ধারণ, পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের কর্মচারী আটক

একমাত্র বিদেশি ‘বীর প্রতীক’ ঔডারল্যান্ড, যাঁর জন্য মুক্তিযুদ্ধের অংশ হলো বাটা

নির্বাচন ঘিরে মাঠ প্রশাসন গোছাচ্ছে সরকার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত