Ajker Patrika

যেকোনো মূল্যে কারখানা সচল রাখতে হবে: শ্রমসচিব

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৮: ৪০
যেকোনো মূল্যে কারখানা সচল রাখতে হবে: শ্রমসচিব

শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেছেন, ‘যেকোনো মূল্যে ইন্ডাস্ট্রি সচল রাখতে হবে। এটা বন্ধ হলে মালিক-শ্রমিক সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। হাজিরা দিয়ে বা দুপুর পর্যন্ত কাজ করে আন্দোলনের জন্য বাইরে বের হয়ে গেলে কাজের ক্ষতি হবে। উৎপাদন কম হবে। এতে করে বায়ারদের চাহিদামতো পণ্য দেওয়া সম্ভব হবে না।’

আজ সোমবার নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়া বিকেএমইএ কার্যালয়ে পোশাক কারখানাসহ বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এ. এইচ. এম সফিকুজ্জামান বলেন, ‘শ্রমিকদের একটি দাবি হলো, বেতন দ্বিগুণ করতে হবে। কিন্তু এটি তো একটি সিস্টেম ওয়েতে হতে হবে। প্রতি বছর ৫ শতাংশ বেতন বাড়ানোর কথা, কিন্তু মূল্যস্ফীতি হয় ১০ শতাংশ। তাহলে তো তাদের খরচ মেটানো সম্ভব হয় না। তাই তাদের বেতন বাড়ানো উচিত, কিন্তু সেটা নিয়ম অনুযায়ী হতে হবে।’

শ্রমসচিব বলেন, ‘সম্প্রতি মালিক–শ্রমিকদের বৈঠক হয়েছে, যেখানে অনেক হট্টগোলের পর মালিকেরা একটি কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে, শ্রমিক অসন্তোষ হলেই ফ্যাক্টরি বন্ধ করা হবে। এটা ঠিক নয়, শ্রমিক ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দকে বলতে দিতে হবে। কথা শোনার মতো ধৈর্য যদি মালিকদের না থাকে, তাহলে কোনো সমাধান হবে না।

কেননা সেনাবাহিনী পাহারা দিয়ে গার্মেন্টস চলতে পারে না। নারায়ণগঞ্জ অবশ্যই একটি মডেলে পরিণত হয়েছে আমাদের সামনে। বিকেএমইএর সভাপতি হাতেম ভাই একটি মডেল তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন।’

 তিনি আরও বলেন, ‘গত ৫ আগস্টের পরিবর্তনের পর সবাই নিজ নিজ সেক্টরে পরিবর্তন চায়। কিন্তু একসঙ্গে তো সব পরিবর্তন সম্ভব না, সকল দাবি একসঙ্গে পূরণ করাও সম্ভব না। শ্রমিকনেতাদের বলব, আপনাদের জন্য আমার দরজা খোলা। আপনাদের যেকোনো অভিযোগ ও সমস্যা আমরা গুরুত্ব সহকারে দেখব।

‘মালিকদের মধ্যে ঐক্য আছে। কিন্তু শ্রমিকদের সংগঠনের কোনো ঐক্য নেই। আপনারা যদি সকলে ঐক্যবদ্ধ হোন, তাহলে আলোচনার টেবিলে সকল সমস্যা সমাধান সম্ভব হবে।’

বিজিএমইএ সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘দেশের পরিস্থিতি যদি স্বাভাবিক না হয়, তাহলে বায়াররা কিন্তু এই দেশে আসবে না, অর্ডার দিতে চাইবে না। এই সংকটের সময় শ্রমিক–মালিক–সরকার আমরা সবাই যদি একসঙ্গে কাজ করতে না পারি, তাহলে সংকট কিন্তু আরও বাড়বে।

‘যেকোনো দাবি থাকতে পারে, সেটা আলোচনার মাধ্যমে শেষ করা যেতে পারে। কিন্তু সেটা না করে ফ্যাক্টরি ভাঙচুর করে, হামলা করে কোনো লাভ হবে না। কাজ বন্ধ রেখে শ্রমিকদের কোনো লাভ হবে না।’

সভাপতির বক্তব্যে বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘শ্রমিকদের যৌক্তিক সব দাবি আমরা পূরণ করব। কিন্তু অযৌক্তিক কোনো দাবি মেনে নেওয়া হবে না। তিনটি বিদেশি ফ্যাক্টরির মালিক এখানে ছিলেন, তাদের বিভিন্ন দেশে ফ্যাক্টরি আছে। তারা বাংলাদেশে আরও বৃহৎ পরিসরে ইনভেস্ট করতে চেয়েছিল। কিন্তু অবস্থা যদি এমন থাকে, তাহলে তারা এই দেশ থেকে তাদের ব্যবসা অন্য দেশে নিয়ে যাবে।’

তিনি বলেন, ‘বিদেশিদের হাতে এই ব্যবসাটা যাতে চলে না যায়। সে জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সব সমস্যার সমাধান করতে হবে। এই দেশটা আমাদের, দেশকে এগিয়ে নিতে মালিক, শ্রমিকসহ সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি। দেশের এই শিল্প যাতে অন্য কোনো দেশে চলে না যায়, সেই লক্ষ্যে সবাইকে সজাগ রাখতে হবে।’

এ ছাড়া বক্তব্য দেন শ্রম মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) তরিকুল আলম, শিল্প পুলিশ সদর দপ্তরের ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল সিবগাত উল্লাহ, নারায়ণগঞ্জ শিল্প পুলিশ-৪ এর অতিরিক্ত ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল আসাদুজ্জামান, জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হক, পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার, জেলা কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল আতিক, বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান ও নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মাসুদুজ্জামান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কক্সবাজারে বিমানঘাঁটিতে গুলি: যা বলছে আইএসপিআর, নিহতের মা-বাবা ও স্থানীয়রা

কক্সবাজার বিমান ঘাঁটিতে দুর্বৃত্তদের হামলা, সংঘর্ষে নিহত ১

ভারতের কাছে হারে পাকিস্তান টিম ম্যানেজমেন্টকে ধুয়ে দিলেন শোয়েব

নতুন রাজনৈতিক দলের নাম ও প্রতীক নিয়ে কী প্রস্তাব এল, জানালেন আখতার

মালিককে ঘরে আটকে রেখে খামারে পেট্রল ঢেলে আগুন, পুড়ল ৮ গরু

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত