বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) পাকিস্তান কি না সেই প্রশ্ন রেখেছেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেন। তিনি বলেছেন, ‘বুয়েট কি পাকিস্তান যে, ভিসা-পাসপোর্ট নিয়ে যেতে হবে।’ 

গত গত ২৮ মার্চ মধ্যরাতে বুয়েট ক্যাম্পাসে প্রবেশের বিষয়টি উল্লেখ করে আজ রোববার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে এ প্রশ্ন রাখেন সাদ্দাম। ছাত্রলীগ সভাপতির বুয়েটে প্রবেশের পরিপ্রেক্ষিতে সেখানে ছাত্ররাজনীতি প্রতিরোধ আন্দোলন ও ঢুকতে সহযোগিতা করায় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদস্য ও বুয়েট শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ রাহিম রাব্বীর সিট বাতিলের প্রতিবাদে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়। 

সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে যেকোনো জায়গায় প্রবেশের অধিকার আমার রয়েছে। নিরবচ্ছিন্ন সময় কাটানোর জন্য আমি যাই, সংবিধান প্রদত্ত অধিকার হিসেবে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার অধিকার আমার আছে। কাদের কাছে পারমিশন নিতে হবে? যাদের সংবিধান অধিকার দিয়েছে, তাদের মামাবাড়ির আবদারের মত ঠুনকো বানিয়ে দেবেন?’ 

ছাত্রলীগের সভাপতি আরও বলেন, ‘আমরা মেনে নেব বলে যারা আশা করছেন, তারা বোকার স্বর্গে বাস করছে। একটি নন ইস্যুকে ইস্যু বানানো হয়েছে। পৃথিবীর যেকোনো জায়গায় আমার প্রবেশের অধিকার আছে। আমাদের প্রবেশের জায়গা সংকুচিত করে অন্ধকারের চাষাবাদ শুরু করেছেন। ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ হলেও নিষিদ্ধ রাজনীতির নমুনা আমরা ক্ষণে ক্ষণে দেখতে পাচ্ছি।’ 

সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘বুয়েটের সিদ্ধান্ত অন্যায্য, অসাংবিধানিক ও নাগরিক অধিকার বিরোধী। বুয়েটে রাজনীতি নিষিদ্ধের এই নাটক বন্ধ করতে হবে। বুয়েট যে নিয়ম চালু করেছে, তা কালাকানুন। অনতিবিলম্বে বুয়েটে নিয়মতান্ত্রিক ছাত্ররাজনীতি চালু করতে হবে। ইমতিয়াজ রাব্বীর সিট ফিরিয়ে তাঁকে হলে বরণ করে নিতে হবে। অবিলম্বে ছাত্র সংসদ নির্বাচন দিতে হবে। দাবি মানা না হলে ছাত্রলীগ জানে, কীভাবে দাবি আদায় করতে হয়।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘ইমতিয়াজের অপরাধ, সে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে ইফতার বিতরণ করেছে। স্বাধীনতা দিবসে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেছে। নাগরিক হিসেবে রাজনীতি করার অধিকার সবার আছে, কার অনুমতি নিতে হবে? টাঙ্গুয়ার হাওরে যারা গ্রেপ্তার হয়েছে, জামিনে এসে তাঁরা নির্ধারণ করছে—কে ক্লাস করতে পারবে, কে পারবে না। শিক্ষার্থীদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা বুয়েটই বন্ধ রেখেছে। সেখানে নিষিদ্ধ রাজনীতির চাষাবাদ হচ্ছে। 

ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইমতিয়াজ হোসেন রাহিম (ইমতিয়াজ রাব্বী), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন, সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার সভাপতি রাজীবুল ইসলাম বাপ্পি, সাধারণ সম্পাদক সজল কণ্ডু, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি রিয়াজ মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক সাগর আহমেদ শামীম। 

ইমতিয়াজ রাব্বী বলেন, ‘বুয়েটে সুদীর্ঘ রাজনীতির গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস আছে। কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার কারণে তা বন্ধ হতে পারে না, বরং যারা জাতীয় দিবস পালনে বাধা দিয়েছে, বুয়েট প্রশাসনের উচিত তাদের বিচারের আওতায় আনা।’ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তাঁর পাশে দাঁড়ানোয় তাদের ধন্যবাদ জানান ইমতিয়াজ।