১০ টাকার চিতইয়ে ৩০ রকমের ভর্তা খেতে ভোজনরসিকদের ভিড়

টুঙ্গিপাড়া (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি 
আপডেট : ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১৫: ৫৯
Thumbnail image
টুঙ্গিপাড়ার পাটগাতী বাসস্ট্যান্ডে পিঠার দোকানে ভোজন রসিকদের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় ১০ টাকার একটি চিতই পিঠার সঙ্গে বিনা মূল্যে মিলছে ৩০ রকমের ভর্তা। সুস্বাদু ভর্তার টানে বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত পিঠার দোকানে ভিড় লেগে থাকে। আর ভোজনরসিকেরা পরম তৃপ্তির সঙ্গে পিঠার স্বাদ নেন।

জানা যায়, উপজেলার পাটগাতী বাসস্ট্যান্ডে মন্টু মুন্সির পিঠার দোকান বেলা ৩টায় শুরু হয়ে চলে রাত ১২টা পর্যন্ত। ১০ টাকার চিতই পিঠার সঙ্গে এখানে চিংড়িসহ নানা চ্যাপা, পাবদা, পুঁটি, কাচকি, টাকি ও লইট্টা শুঁটকি ভর্তা পাওয়া যায়।

এ ছাড়া নোনা ইলিশ, ডাল, বাদাম, সরিষা, রসুন, কাঁচা মরিচ, শুকনো মরিচ, টমেটো, ধনেপাতা, কালিজিরা, আলু ভর্তা, মিক্সড ভর্তাসহ ৩০ প্রকারের ভর্তা মিলছে।

ভর্তাগুলো পিঠার দোকানের টেবিলে সাজানো। লোভনীয় স্বাদ গ্রহণ করতে এখানে বিভিন্ন বয়সের মানুষের সমাগম ঘটছে। তাঁরা ১০ টাকা দিয়ে একটি চিতই পিঠা কিনে সঙ্গে রকমারি ভর্তার স্বাদ নিতে পারছেন। চিতই পিঠার সঙ্গে পছন্দের বাহারি সব ভর্তার স্বাদ নিয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তুলছেন ভোজনরসিকেরা।

পিঠা বিক্রেতার সহকারী বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘আমরা প্রতিদিন ৩০-৪০ কেজি চালের গুঁড়ো দিয়ে চিতইসহ বিভিন্ন পিঠা বানিয়ে এখানে বিক্রি করি। এতে আমাদের দুই থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত লাভ হয়।’

বিল্লাল হোসেন আরও বলেন, ‘এ শীতের মৌসুমে আমরা পিঠা বিক্রি করি। এ ছাড়া বিভিন্ন সংগঠন থেকে পিকনিকে গেলে তাঁরা পিঠা খাওয়ার জন্য আমাদের সঙ্গে নিয়ে যেতে পারেন। তখন তাঁরা আমাদের যে পিঠা তৈরি করে দিতে বলেন, আমরা সেই পিঠা তৈরি করে দিতে পারব। সুস্বাদু বিভিন্ন পিঠা তৈরির অভিজ্ঞতা আমাদের রয়েছে।’

উপজেলার গিমাডাঙ্গা গ্রামের তরুণ রনি শেখ বলেন, ‘পিঠার সঙ্গে আমাদের এলাকায় সাধারণত ৫-৬ রকমের ভর্তা পাওয়া যেত। এইবার প্রথম টুঙ্গিপাড়ায় ১০ টাকা দিয়ে একটি চিতই পিঠা কিনলে সঙ্গে ৩০ প্রকারের ভর্তা পাওয়া যাচ্ছে। একেক ধরনের ভর্তার স্বাদ একেক রকম। পিঠা খাওয়া শুরু করলে ভর্তা দিয়ে একসঙ্গে ৮-১০টি খেয়ে ফেলি। তাই সন্ধ্যায় ভর্তার টানে এখানে চিতই পিঠা খেতে ছুটে আসি।’

টুঙ্গিপাড়ার পাটগাতী বাসস্ট্যান্ডে পিঠার দোকানে ভোজন রসিকদের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা
টুঙ্গিপাড়ার পাটগাতী বাসস্ট্যান্ডে পিঠার দোকানে ভোজন রসিকদের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা

পিঠা খেতে আসা মেহেদী হাসান বলেন, ‘আমি এ উপজেলায় চাকরি করি। পরিবারের কেউ এখানে থাকে না। তাই পিঠা তৈরি করে খাওয়ার সুযোগ নেই। এ জন্য পিঠা খেতে ইচ্ছা হলে, এখানে চলে আসি। এ দোকানের চিতই পিঠা ও ভর্তা খুবই মজাদার।’

পাটগাতী বাজারের ব্যবসায়ী শ্যামল বিশ্বাস বলেন, শীতকালে বাড়িতে আত্মীয়স্বজন আসলে তাঁদের চিতই পিঠা ও ভর্তা দিয়ে আপ্যায়ন করি। মাত্র কয়েক দিনে এ পিঠার খ্যাতি উপজেলাজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। ছেলে-মেয়েরাও আনন্দের সঙ্গে পিঠা খেতে পারে।

পিঠা বিক্রেতা মন্টু মুন্সি বলেন, ‘আমি ঢাকার যাত্রাবাড়ী, শনির আখড়াসহ বিভিন্ন স্থানে পিঠার দোকান দিয়েছি। এ বছর গ্রামের বাড়িতে চলে এসেছি। ২০ দিন আগে পাটগাতী বাসস্ট্যান্ডে পিঠার দোকান বসিয়েছি।’

মন্টু মুন্সি আরও বলেন, ‘এখানে ভাপা, পাটিসাপটা, ভোসা, চিতইসহ বিভিন্ন ধরনের পিঠা দুপুরের পর থেকে বিক্রি শুরু করি। গভীর রাত পর্যন্ত চলে আমার এ পিঠা বিক্রি। নানা ধরনের পিঠা তৈরি করলেও সব চেয়ে বেশি বিক্রি হয় চিতই পিঠা এবং ভর্তা। আর অনেক সময় ভিড় সামলাতে হিমশিম খেতে হয়। তাই আরও একটি পিঠা বিক্রির দোকান বাড়ানোর চিন্তা করছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কারা পরিদর্শক হলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক

ট্রাম্পের অভিষেক: সি আমন্ত্রণ পেলেও পাননি মোদি, থাকছেন আরও যাঁরা

ট্রাম্পের শপথের আগেই বার্নিকাটসহ তিন কূটনীতিককে পদত্যাগের নির্দেশ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে: সলিমুল্লাহ খান

সংস্কারের কিছু প্রস্তাবে মনঃক্ষুণ্ন বিএনপি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত