ফরিদপুরে গোয়েন্দা পুলিশের উপস্থিতিতে সংবাদ সম্মেলন, কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা

ফরিদপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৯ জুলাই ২০২৪, ১৮: ২৭
আপডেট : ২৯ জুলাই ২০২৪, ২০: ১৮

ফরিদপুরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার উপস্থিতিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি প্রত্যাহার ঘোষণা করেছেন আরমান শিকদার নামে এক শিক্ষার্থী। তিনি ফরিদপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ৬ষ্ঠ সেমিস্টারের শিক্ষার্থী এবং ফরিদপুরের অন্যতম সমন্বয়ক বলে দাবি করেন।

আজ সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ফরিদপুর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে আন্দোলনের কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। মাত্র দেড় মিনিটের মধ্যেই তাঁর লিখিত বক্তব্য শেষ করেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে দুজন শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের মধ্যে রিয়াজ মোল্যা একই প্রতিষ্ঠানের ৬ষ্ঠ সেমিস্টারের শিক্ষার্থী ও রিফাত মিয়া ফরিদপুর উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী বলে পরিচয় দেন।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি সরকার কর্তৃক পূরণ হওয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ফরিদপুরের উদ্যোগে যে সমস্ত আন্দোলন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছিল তা প্রত্যাহার করা হলো। এখন আমাদের শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাই।

লিখিত বক্তব্যে প্রিয় ফরিদপুরবাসী সম্বোধন করে বলা হয়, আপনারা অবগত আছেন যে, সারা বাংলাদেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন হয়। এই আন্দোলনে অনেকে অপ্রত্যাশিতভাবে আহত ও নিহত হয়েছে। এ ছাড়া রাষ্ট্রীয় অনেক সম্পদ, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, সেতু ভবন, বাংলাদেশ টেলিভিশন ভবনসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে, যা কখনোই কাম্য নয়।

আমরা এসব অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিচারের দাবি জানাই। আমাদের প্রধান দাবি ছিল কোটার যৌক্তিক সংস্কার যা ইতিমধ্যেই সরকার আপিল বিভাগের নির্দেশে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করে। এখন সব ধরনের সরকারি চাকরিতে ৯৩ শতাংশ মেধা কোটা, ৫ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা, ২ শতাংশ অন্যান্য কোটা যা সাধারণ শিক্ষার্থীরা সাদরে গ্রহণ করে। এই জন্য গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, প্রধানমন্ত্রীকে অশেষ ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা।

প্রেসক্লাবের বাইরে কর্মসূচি প্রত্যাহার ঘোষণাকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী–সমর্থকদের উপস্থিত থাকতে দেখা যায়।

এ ছাড়া সংবাদ সম্মেলনে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ওসি আব্দুল মতিন, ডিআই–১ আবু নাঈমসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক সদস্য ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ফরিদপুর কোতোয়ালি জোনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মতিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি যেন না ঘটে এবং স্বাভাবিক রাখতে মূলত আমরা সেখানে অবস্থান করেছিলাম। সংবাদ সম্মেলনে বিষয়ে কোনো হস্তক্ষেপ ছিল না।’

এদিকে ফরিদপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই সমন্বয়ককে কোতোয়ালি থানা-পুলিশের একটি মামলায় গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মো. আরাফাত শাহ (২৪) ও জনি বিশ্বাস (২৪)। গতকাল সোমবার তাঁদেরসহ চারটি মামলায় গ্রেপ্তারদের জামিন আবেদন করলে তা না মঞ্জুর করেছেন আদালত।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত