কোটা আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
প্রকাশ : ১৩ জুলাই ২০২৪, ১৩: ২৭
আপডেট : ১৪ জুলাই ২০২৪, ০৯: ৩২

কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় মামলা করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সরকারি সম্পত্তি ক্ষয়ক্ষতির অভিযোগে এই মামলা করা হয়। আজ শনিবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন শাহবাগ থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মো. আরশাদ হোসেন। 

মো. আরশাদ হোসেন বলেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে ডিএমপির শাহবাগ থানায় মামলা হয়েছে। সরকারি সম্পত্তি ক্ষয়ক্ষতির অভিযোগ এনে পুলিশ বাদী হয়ে একটি মামলা করেছে। এ ছাড়া সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় তাঁরা বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন।’ 

সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে এক মাসের বেশি সময় ধরে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে চলতি মাসের শুরু থেকে সড়ক-মহাসড়ক, এমনকি রেলপথ অবরোধ করে তাঁরা বিক্ষোভ করলেও সেই অর্থে কোনো বাধা দেয়নি পুলিশ। সরকার বা ক্ষমতাসীনেরাও মোটামুটি চুপচাপ ছিলেন। কিন্তু গতকাল বৃহস্পতিবার হঠাৎ করে বদলে যায় পরিস্থিতি। সব পক্ষের গলা চড়া। সবাই জোরেশোরে জানিয়ে দিল, শিক্ষার্থীদের আর রাস্তায় নামতে দেওয়া হবে না।

আর তারই ধারাবাহিকতায় আন্দোলনের অংশ হিসেবে ‘বাংলা ব্লকেড’ চলাকালে গত বৃহস্পতিবার দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন। এদিন কুমিল্লা ও ঢাকার আগারগাঁওয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি চলাকালে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। এর প্রতিবাদে রাজধানীর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি), কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।

এদিকে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ একাধিক সূত্র বলছে, কোটাব্যবস্থা সংস্কার করে কোন কোটা কীভাবে কমানো যেতে পারে, তা নিয়ে সরকারের ভেতরে আলোচনা শুরু হয়েছে। সরকার চাইছে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি সমাধান দিতে। অনানুষ্ঠানিকভাবে হলেও এ বিষয়ে সরকারের নীতিনির্ধারকদের মধ্যে আলাপ হচ্ছে দফায় দফায়। প্রধানমন্ত্রী চীন থেকে দেশে ফেরার পরও সরকারের উপর মহলে আলাপ হয়েছে বিষয়টি নিয়ে।

এ বিষয়ে জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন গতকাল শুক্রবার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কোর্টের পর্যবেক্ষণগুলো আমাদের আমলে নিতে হবে। এখন এ-সংক্রান্ত বিচার চলমান আছে। তাই ভবিষ্যতে আমাদের কী করণীয়, তা আদালতের পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে বিবেচনা করা যাবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বিচার বিভাগের অনেক পর্যবেক্ষণ আমরা নির্বাহী বিভাগ গ্রহণ করি, বাস্তবায়ন করি।’

সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিল করে ২০১৮ সালে জারি করা পরিপত্র অবৈধ ঘোষণার সংক্ষিপ্ত রায় গত বৃহস্পতিবার প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। সংক্ষিপ্ত রায়ে বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, নাতি-নাতনিদের জন্য কোটা পুনর্বহাল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। একই সঙ্গে জেলা, নারী, প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর জন্য কোটা বজায় রাখতে বলা হয়। সরকার প্রয়োজনে কোটার অনুপাত পরিবর্তন, হ্রাস বা বৃদ্ধি করতে পারবে। আর এই রায় সরকারের ওপর কোনো বাধা সৃষ্টি করবে না। কোনো পাবলিক পরীক্ষায় কোটা পূরণ না হলে সরকার সাধারণ মেধাতালিকা থেকে শূন্য পদ পূরণ করতে পারবে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত