রাজধানীর দক্ষিণখানে দেড় বছরের মেয়েকে ঘুম পাড়িয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন গৃহবধূ আয়েশা (২৩)। গতকাল বুধবার রাত ৮টার দিকে ওই গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। 

গৃহবধূ আয়েশা চাঁদপুর সদরের বাখরপুর গ্রামের মো. আলী আহম্মদের মেয়ে। বর্তমানে তিনি দেড় বছরের মেয়ে সুমাইয়াকে নিয়ে বাবার সঙ্গে দক্ষিণখানের নদ্দাপাড়া তালতলা এলাকায় ইকবালের ভাড়াবাড়িতে থাকতেন। 

মৃতের বড় ভাই সুমন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সামনে ঈদ। তাই গত মঙ্গলবার রাতে সুমাইয়ার চুল কাটানো হইছে। ওর জন্য নতুন জামা-কাপড় দেওয়া হইছে। আমার বাবা রডমিস্ত্রির কাজ করেন। গতকাল বুধবার সকালে কাজে বের হইছে। দুপুরে বাসায় এসে খাওয়াদাওয়া শেষে আবার কাজে গেছে। পরে আমার বোন তাঁর মেয়েকে ঘুম পাড়িয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। ঘুম থেকে উঠে যখন সুমাইয়া মা মা বলে চিৎকার করছিল, তখন আশপাশের লোকজন এসে আয়েশাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে আমাদের খবর দেয়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে।’

মৃতের ভাই আরও বলেন, ‘আমার বোনের কারও সঙ্গে কোনো মান-অভিমান ছিল না। কোনো দ্বন্দ্বও ছিল না। কী কারণে আত্মহত্যা করল কিছুই বুঝতে পারছি না। পুলিশ তার মোবাইল তদন্তের জন্য নিয়ে গেছে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্বজন আজকের পত্রিকাকে বলেন, আয়েশার স্বামী নেশাগ্রস্ত ছিলেন, যার কারণে তাঁর সঙ্গে ছয় মাস আগে ডিভোর্স হয়ে গেছে। অতঃপর আরেক যুবকের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন আয়েশা। তাঁর মরদেহ উদ্ধারকালে তাঁর মোবাইলটি সামনে রাখা ছিল এবং ক্যামেরা সামনের দিকে ঘোরানো ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, ভিডিও কলে কাউকে দেখিয়ে আত্মহত্যা করেছে। 

এ বিষয়ে দক্ষিণখান থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রেজিয়া খাতুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় আয়েশা আক্তারের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পরে মরদেহ শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। 

দক্ষিণখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ মামুনুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, মানসিক বিষণ্নতা থেকে আয়েশা আক্তার আত্মহত্যা করেছেন। এ ঘটনায় দক্ষিণখান থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে। আরও বিস্তারিত তদন্তের মাধ্যমে জানা যাবে।