গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক ঐক্যের দ্রোহ-দাহ স্বপ্নযাত্রায় ১২ দাবি

ঢাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ১৯: ২৮
আপডেট : ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ২০: ০৮

গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক ঐক্যের দ্রোহ-দাহ স্বপ্নযাত্রায় ১২ দফা দাবি পেশ করা হয়েছে। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এ দাবি পেশ করা হয়। 

উদীচীর সহসভাপতি জামসেদ আনোয়ার তপনের সভাপতিত্বে ঘোষণাপত্র পাঠ করেন চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান লাল্টু। 

এ সময় আলোচনায় অংশ নেন শহীদ আসাদ পরিষদের শামসুজ্জামান মিলন, গণসংস্কৃতি কেন্দ্রের জাকির হোসেন, প্রগতি লেখক সংঘের কোষাধ্যক্ষ দীনবন্ধু দাশ এবং চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন খন্দকার শাহ্ আলম ও সুস্মিতা সুপ্তি। 

বক্তারা বলেন, সংস্কৃতি অঙ্গন অবহেলিত অবস্থায় রয়েছে। এখান থেকে বেরিয়ে সুন্দর মননের সংস্কৃতির দিকে এগোতে হবে। বৈষম্য নিরসনের জন্য দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা, মব জাস্টিস বন্ধ করতে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করার কথাও জানান বক্তারা।

১২ দফা দাবিগুলো হলো—জুলাই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সব অপরাধীর বিচার নিশ্চিত করতে হবে। শহীদ ও আহতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রণয়ন করে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করতে হবে। আহত ব্যক্তিদের উপযুক্ত সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে; দীর্ঘ স্বৈরতান্ত্রিক শাসনের ছত্রচ্ছায়ায় গ্রাম থেকে শহর পর্যন্ত গড়ে ওঠা মধ্যস্বত্বভোগী ও লুটেরা ব্যবসায়িক সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়ে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়ে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে হবে; দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টে উসকানিদাতা অপশক্তির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে; দ্রুততম সময়ে প্রয়োজনীয় সংস্কার কর্মসূচি শেষ করে অবাধ, গ্রহণযোগ্য ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে এবং সংস্কৃতিচর্চার অবাধ ও মুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। 

সাইবার নিরাপত্তা আইনসহ সব নিপীড়নমূলক আইন অবিলম্বে বাতিল করতে হবে; গণ-অভ্যুত্থানে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণকারী সাংস্কৃতিক সংগঠন, শিল্পী, সাহিত্যিক ও সংস্কৃতিকর্মীদের আলোচনার মাধ্যমে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সব সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় গণতন্ত্রায়ন নিশ্চিত করতে হবে, দক্ষ ও যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়োগ দিতে হবে। 

শিল্প–সংস্কৃতির ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় অনুদান প্রদানে গঠিত কমিটি পুনর্গঠন করে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। দলীয়করণ বন্ধ করে জাতীয় সংস্কৃতির পরিপূর্ণ বিকাশে সব প্রতিষ্ঠানের যথাযথ ভূমিকা নিশ্চিত করতে হবে। সংস্কৃতি খাতে জাতীয় বাজেটের কমপক্ষে ২ শতাংশ বরাদ্দ দিতে হবে; দুর্নীতিবাজ আমলা, ব্যবসায়ী এবং বিদেশে অর্থ পাচারকারীদের দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে, তাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে হবে এবং বিদেশে পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে; প্রশাসনের সকল পর্যায়ে ফ্যাসিবাদের দোসরদের অপসারণ করতে হবে এবং নতুন নিয়োগের ক্ষেত্রে দলীয়করণ বন্ধ করার পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে; পাহাড়ে শান্তি ফিরিয়ে আনতে সব রাজনৈতিক দলের সহযোগিতা নিয়ে দ্রুত আলোচনায় বসে সব জাতিসত্তার শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত করে সেখান থেকে সেনা প্রত্যাহারের ব্যবস্থা করতে হবে। 

পাহাড় ও সমতলে বসবাসকারী সব জাতিগোষ্ঠীর সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান করে তাদের ভূমি সমস্যার সমাধান ও সব নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে; রাষ্ট্র ও সমাজের সকল ক্ষেত্রে ধর্ম-বর্ণ-জাতি-লিঙ্গ নির্বিশেষে সব বৈষম্য দূর করে মানুষের অধিকার ও সুযোগের সমতা নিশ্চিত করতে হবে। সংবিধান থেকে সব বৈষম্য, অগণতান্ত্রিক ও সাম্প্রদায়িক উপাদান বিলোপ করতে হবে। শোষণ ও বৈষম্যের অবসান ঘটিয়ে সমতা ও মানবিক মর্যাদাপূর্ণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে; শিক্ষাঙ্গনে অগণতান্ত্রিক সন্ত্রাসী সংগঠনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল সব ছাত্রসংগঠনের রাজনৈতিক এবং সংস্কৃতি চর্চার মুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করাসহ গণতান্ত্রিক সাংস্কৃতিক ঐক্য উত্থাপিত ১২ দফা বাস্তবায়ন করতে হবে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত