শরিফুল হাসান

ঢাকা: হঠাৎ করেই এলো ফোনটা। আমাদের সঙ্গে থাকা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদের সেই কর্মকর্তার মুখটা বিষণ্ন হয়ে উঠল। ফোনটা শেষ করে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত মুখে তিনি জানালেন, গুলশানে গোলাগুলি চলছে। পুলিশের একজন এএসপি, ওসিসহ অনেকেই আহত। এখুনি যেতে হবে।
সেদিন ছিল শুক্রবার। ১ জুলাই, ২০১৬। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে পুরো ক্যাম্পাস আলোকিত। আমরা কয়েকজন মানুষ রাতে আড্ডা দিচ্ছিলাম যেখানে পুলিশ, সাংবাদিক, বিচারকসহ আরও বেশ কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন। রাত সাড়ে ৯টার পরপরই পুলিশ কর্মকর্তার কাছে ফোনটা এল—গুলশানে ভয়াবহ কোনো হামলা হয়েছে। গোলাগুলি চলছে। আমাদের আড্ডা ভেঙে গেল। সবাই তখন দুশ্চিন্তায়। তবে আসলে ঠিক হয়েছে, কারওই জানা নেই।
আমি তখন প্রথম আলোর সিনিয়র রিপোর্টার। ওই পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে আমিও ছুটলাম গুলশানের উদ্দেশ্যে। নিজের মোটরসাইকেলে। মাথায় তখন নানা প্রশ্ন ঘুরছে। গুলশানের কাছাকাছি গিয়ে দেখি অনেক পথ বন্ধ করে নিরাপত্তা চৌকি বসানো হয়েছে। গুলশান-২ মোড়ে যাওয়ার পর দেখি পুলিশ, র্যাবসহ অনেকের গাড়ি ছুটছে। পিছু নিলাম। ততক্ষণে আরও কয়েকটা ফোনে জেনে গেছি, গুলশানের ৭৯ নম্বরের দিকের কোনো এক রেস্তোরাঁয় হামলা হয়েছে। বড় ঘটনা।
রাত সাড়ে দশটার দিকে ৭৯ নম্বর সড়কের কাছাকাছি পৌঁছালাম। ততক্ষণে রেস্তোরাঁটির চারপাশে পুলিশ আর র্যাবের শত শত সদস্য অবস্থান নিয়েছেন। মনে হচ্ছে কোনো যুদ্ধ শুরু হবে। সাংবাদিকদের ভীড়। একটু পরপর লাইভ। আমার সঙ্গে ছিলেন প্রথম আলোয় তখন আমার সহকর্মী কামরুল হাসান, অন্তু ও জিয়া ইসলাম।
পুলিশ ও হোলি আর্টিজান থেকে পালিয়ে বের হওয়া কয়েকজনের সুবাদে আমরা ততক্ষণে জেনে গেছি, হোলি আর্টিজান বেকারি নামে একটা রেস্তোরাঁর ভেতরে গোলাগুলি ও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। ভেতের অনেক জিম্মি। তাদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। কিন্তু হামলাকারী জঙ্গিদের কাছে অনেক অস্ত্র-বোমা আছে। তাদের হামলায় উদ্ধার অভিযানে আসা পুলিশ সদস্যরাও নিহত হয়েছেন। অনেকে আহত হয়ে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি।
আমরা কয়েকজন তখন ইউনাইটেড হাসপাতালের সামনে গেলাম। কিন্তু তখন বাইরের কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। খবর পেলাম, পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার রবিউল করিম মারা গেছে। আচ্ছা কোন রবিউল?
জানলাম, এই রবিউলই প্রথম আলোর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আমাদের সহকর্মী শামসের আপন বড় ভাই। শামসকে ফোন দিলাম। ওর কান্নায় খুব বেশি কিছু বলতে পারলাম না। নিজেরও চোখ ভিজে গেল। একটু পর শুনলাম বনানী থানার ওসিও হামলায় নিহত হয়েছেন।
বাতাসে তখন নানা গুজব ভেসে বেড়াচ্ছে। আটকে পড়াদের স্বজনেরা বারবার সাংবাদিকদের কাছে জানতে চাইছেন, ভেতরে কী হচ্ছে। আটকা পড়া অনেক পরিবারের সদস্যই সাংবাদিক ও পুলিশের কাছে আসছেন তাঁদের স্বজনদের কাছে। আমরা দেখছি, সেনাবাহিনীসহ বিশেষায়িত নানা বাহিনীর সদস্যরা আসা–যাওয়া করছেন। কিন্তু কারও কাছে সঠিক কোনো উত্তর নেই। ঠিক কী ধরনের অভিযান হবে, সেটাও পরিষ্কার নয়। কিন্তু সবার চোখে–মুখে উদ্বেগ।
এর মধ্যে ৭৫ নম্বর সড়কের কাছাকাছি কোথাও দেখলাম ট্রান্সকম গ্রুপের পরিচালক সিমিন হোসেনকে। প্রথম আলোর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে তাঁকে অনেকবার দেখেছি। কিন্তু তাঁর এমন উদ্বিগ্ন চেহারা কখনো দেখিনি। কাছে গিয়ে জানলাম, সিমিন হোসেনের ছোট ছেলে ফারাজ আইয়াজ হোসেন কানাডা থেকে দেশে এসে তাঁর বন্ধুদের সঙ্গে এই বেকারিতে এসে ভেতের আটকা পড়েছেন। ছেলের জন্য দুশ্চিন্তায় মায়ের এই ছটফটানি।
রাত আড়াইটার দিকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপের সূত্রে জানা গেল, জঙ্গি সংগঠন আইএস এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। সঙ্গে হত্যাযজ্ঞের কয়েকটি ছবি। সেগুলো দেখে পুরো শরীর কেঁপে উঠল। বাংলাদেশে কেন এমন ভয়াবহ হামলা, সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে লাগলাম।
রাত যত বাড়ল, পুলিশ-র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা ও গোয়েন্দা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আনাগোনা তত বাড়ল। আমি দেখলাম, তাঁরা সবাই রাস্তার উল্টোদিকে বিজেএমসির চেয়ারম্যানের বাংলোতে যাচ্ছেন। গলায় পরিচয়পত্র ঝুলিয়ে আমিও বাথরুমে যাওয়ার নাম করে সেখানে ঢুকে গেলাম। গিয়ে দেখি, পুলিশ ও র্যাবের কর্মকর্তারা রেস্তোরাঁ থেকে বের হওয়া কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে ভেতরের অবস্থান বোঝার চেষ্টা করছেন। শুনলাম সেখানে বড় ধরনের অভিযানের প্রস্তুতি চলছে। একটু পরই অভিযান চালানো হবে।
কিন্তু সেই অভিযান আর হয় না। পরে শুনলাম সিলেট থেকে সেনাবাহিনীর কমান্ডোরা আসবেন। তাঁরাই অভিযান চালাবেন। ভোর হয়ে যাবে। আর এই দেরি নিয়ে অনেক পরিবারই ক্ষুব্ধ। তাঁরা চাইছেন, তাঁদের সন্তানদের এখুনি উদ্ধার করে আনা হোক। অবশেষে শেষ রাতে সিলেট থেকে ঢাকায় এল বিশেষ সেই কমান্ডো বাহিনী। তখন হোলি আর্টিজানের চারপাশে প্রচণ্ড কড়াকড়ি। সাংবাদিকসহ সবাইকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে সড়ক থেকে। বৃষ্টিও শুরু হলো। আমি কাছাকাছি কোনো একটা বাড়ির ভেতরে ঢুকে পড়লাম। ততক্ষণে প্রচণ্ড গোলাগুলিতে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে গুলশান এলাকা।
সেনাবাহিনীর কমান্ডোরা ছুটছেন। গুলি করছেন। এসে গেছে সাঁজোয়া যান। আমার কয়েক হাত সামনে থেকেই কমাণ্ডোদের গুলি চালাতে দেখলাম। আমি আমার মোবাইলের ভিডিও অন করলাম, যাতে ছবিগুলো রাখতে পারি। মনে হচ্ছিল হলিউডের কোনো সিনেমা দেখছি। বাস্তবের এই সিনেমার নাম ‘অপারেশন থান্ডারবোল্ট’।
অপরাশেন শেষ হওয়ার পর সিমিন হোসেনের মতোই উদ্বিগ্ন দেখেছিলাম এক বাবাকে। পুলিশসহ যাকে দেখছেন, তাঁকেই ছবি দেখিয়ে বলেছেন, তাঁর ছেলের কোনো খোঁজ আছে কী না। ভদ্রলেকোর নাম জানলাম, শাহরিয়ার খান। ভোরে অভিযানের পর একটি ফোন আসার পর তিনি কাঁদতে কাঁদতে সেজদায় পড়লেন মাটিতে। এর পর শুরু করলেন মোনাজাত। কাছে যেতেই জানালেন, ‘আমার ছেলে বেঁচে আছে।’ কিন্তু তাঁর ছেলেকে উদ্ধার করবে কে?
খুব বেশিক্ষণ লাগেনি এই অভিযানে। আধা ঘণ্টারও কম বোধহয়। সকাল সাড়ে ৮টায় অভিযান শেষ হওয়ার কথা জানায় সেনাবাহিনী। সেনা ও সোয়াট সদস্যরা ফিরে আসতে থাকেন। এর পর আসে অ্যাম্বুলেন্স। বের করা হতে থাকে লাশ। সারাদিন পর দুপুরের দিকে ফিরে আসি। রাত থেকে না খাওয়া। সারারাত জেগে ছিলাম। ক্লান্ত। ঘুমও দরকার।
ঘটনার পাঁচ বছর পেরিয়ে গেছে। স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে মনে হয়, হোলি আর্টিজান হামলা আমাদের আসলেই কাঁপিয়ে দিয়েছিল। এই ঘটনার ছয়দিন পরই কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় হামলা চালায় জঙ্গিরা। সেখানেও দুই পুলিশ সদস্য নিহত হন। গুলিবিনিময়কালে একজন সাধারণ নারী ও একজন জঙ্গি নিহত হয়। বাংলাদেশের সেই সময়টা ছিল আসলেই আতঙ্কের। দুশ্চিন্তার। সেই আতঙ্ক জঙ্গিবাদ নিয়ে। বাংলাদেশের ভবিষ্যত নিয়ে। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সবার চেষ্টায় সেই উদ্বেগ কিছুটা কমেছে।
ওই সময়ের হামলাকারীদের একজনের বাবার একটা কথা আজও মেনে পড়ে। তিনি আমাকে বলেছিলেন, ‘আর কোনো বাবার যেন এমন পরিস্থিতিতে পড়তে না হয়। সব বাবা-মার কাছে আহ্বান, সন্তানদের খোঁজ নিন। কোথায় যায়, কী করে খোঁজ নিন।’
লেখক: ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক

ঢাকা: হঠাৎ করেই এলো ফোনটা। আমাদের সঙ্গে থাকা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদের সেই কর্মকর্তার মুখটা বিষণ্ন হয়ে উঠল। ফোনটা শেষ করে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত মুখে তিনি জানালেন, গুলশানে গোলাগুলি চলছে। পুলিশের একজন এএসপি, ওসিসহ অনেকেই আহত। এখুনি যেতে হবে।
সেদিন ছিল শুক্রবার। ১ জুলাই, ২০১৬। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে পুরো ক্যাম্পাস আলোকিত। আমরা কয়েকজন মানুষ রাতে আড্ডা দিচ্ছিলাম যেখানে পুলিশ, সাংবাদিক, বিচারকসহ আরও বেশ কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন। রাত সাড়ে ৯টার পরপরই পুলিশ কর্মকর্তার কাছে ফোনটা এল—গুলশানে ভয়াবহ কোনো হামলা হয়েছে। গোলাগুলি চলছে। আমাদের আড্ডা ভেঙে গেল। সবাই তখন দুশ্চিন্তায়। তবে আসলে ঠিক হয়েছে, কারওই জানা নেই।
আমি তখন প্রথম আলোর সিনিয়র রিপোর্টার। ওই পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে আমিও ছুটলাম গুলশানের উদ্দেশ্যে। নিজের মোটরসাইকেলে। মাথায় তখন নানা প্রশ্ন ঘুরছে। গুলশানের কাছাকাছি গিয়ে দেখি অনেক পথ বন্ধ করে নিরাপত্তা চৌকি বসানো হয়েছে। গুলশান-২ মোড়ে যাওয়ার পর দেখি পুলিশ, র্যাবসহ অনেকের গাড়ি ছুটছে। পিছু নিলাম। ততক্ষণে আরও কয়েকটা ফোনে জেনে গেছি, গুলশানের ৭৯ নম্বরের দিকের কোনো এক রেস্তোরাঁয় হামলা হয়েছে। বড় ঘটনা।
রাত সাড়ে দশটার দিকে ৭৯ নম্বর সড়কের কাছাকাছি পৌঁছালাম। ততক্ষণে রেস্তোরাঁটির চারপাশে পুলিশ আর র্যাবের শত শত সদস্য অবস্থান নিয়েছেন। মনে হচ্ছে কোনো যুদ্ধ শুরু হবে। সাংবাদিকদের ভীড়। একটু পরপর লাইভ। আমার সঙ্গে ছিলেন প্রথম আলোয় তখন আমার সহকর্মী কামরুল হাসান, অন্তু ও জিয়া ইসলাম।
পুলিশ ও হোলি আর্টিজান থেকে পালিয়ে বের হওয়া কয়েকজনের সুবাদে আমরা ততক্ষণে জেনে গেছি, হোলি আর্টিজান বেকারি নামে একটা রেস্তোরাঁর ভেতরে গোলাগুলি ও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। ভেতের অনেক জিম্মি। তাদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। কিন্তু হামলাকারী জঙ্গিদের কাছে অনেক অস্ত্র-বোমা আছে। তাদের হামলায় উদ্ধার অভিযানে আসা পুলিশ সদস্যরাও নিহত হয়েছেন। অনেকে আহত হয়ে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি।
আমরা কয়েকজন তখন ইউনাইটেড হাসপাতালের সামনে গেলাম। কিন্তু তখন বাইরের কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। খবর পেলাম, পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার রবিউল করিম মারা গেছে। আচ্ছা কোন রবিউল?
জানলাম, এই রবিউলই প্রথম আলোর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আমাদের সহকর্মী শামসের আপন বড় ভাই। শামসকে ফোন দিলাম। ওর কান্নায় খুব বেশি কিছু বলতে পারলাম না। নিজেরও চোখ ভিজে গেল। একটু পর শুনলাম বনানী থানার ওসিও হামলায় নিহত হয়েছেন।
বাতাসে তখন নানা গুজব ভেসে বেড়াচ্ছে। আটকে পড়াদের স্বজনেরা বারবার সাংবাদিকদের কাছে জানতে চাইছেন, ভেতরে কী হচ্ছে। আটকা পড়া অনেক পরিবারের সদস্যই সাংবাদিক ও পুলিশের কাছে আসছেন তাঁদের স্বজনদের কাছে। আমরা দেখছি, সেনাবাহিনীসহ বিশেষায়িত নানা বাহিনীর সদস্যরা আসা–যাওয়া করছেন। কিন্তু কারও কাছে সঠিক কোনো উত্তর নেই। ঠিক কী ধরনের অভিযান হবে, সেটাও পরিষ্কার নয়। কিন্তু সবার চোখে–মুখে উদ্বেগ।
এর মধ্যে ৭৫ নম্বর সড়কের কাছাকাছি কোথাও দেখলাম ট্রান্সকম গ্রুপের পরিচালক সিমিন হোসেনকে। প্রথম আলোর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে তাঁকে অনেকবার দেখেছি। কিন্তু তাঁর এমন উদ্বিগ্ন চেহারা কখনো দেখিনি। কাছে গিয়ে জানলাম, সিমিন হোসেনের ছোট ছেলে ফারাজ আইয়াজ হোসেন কানাডা থেকে দেশে এসে তাঁর বন্ধুদের সঙ্গে এই বেকারিতে এসে ভেতের আটকা পড়েছেন। ছেলের জন্য দুশ্চিন্তায় মায়ের এই ছটফটানি।
রাত আড়াইটার দিকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপের সূত্রে জানা গেল, জঙ্গি সংগঠন আইএস এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। সঙ্গে হত্যাযজ্ঞের কয়েকটি ছবি। সেগুলো দেখে পুরো শরীর কেঁপে উঠল। বাংলাদেশে কেন এমন ভয়াবহ হামলা, সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে লাগলাম।
রাত যত বাড়ল, পুলিশ-র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা ও গোয়েন্দা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আনাগোনা তত বাড়ল। আমি দেখলাম, তাঁরা সবাই রাস্তার উল্টোদিকে বিজেএমসির চেয়ারম্যানের বাংলোতে যাচ্ছেন। গলায় পরিচয়পত্র ঝুলিয়ে আমিও বাথরুমে যাওয়ার নাম করে সেখানে ঢুকে গেলাম। গিয়ে দেখি, পুলিশ ও র্যাবের কর্মকর্তারা রেস্তোরাঁ থেকে বের হওয়া কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে ভেতরের অবস্থান বোঝার চেষ্টা করছেন। শুনলাম সেখানে বড় ধরনের অভিযানের প্রস্তুতি চলছে। একটু পরই অভিযান চালানো হবে।
কিন্তু সেই অভিযান আর হয় না। পরে শুনলাম সিলেট থেকে সেনাবাহিনীর কমান্ডোরা আসবেন। তাঁরাই অভিযান চালাবেন। ভোর হয়ে যাবে। আর এই দেরি নিয়ে অনেক পরিবারই ক্ষুব্ধ। তাঁরা চাইছেন, তাঁদের সন্তানদের এখুনি উদ্ধার করে আনা হোক। অবশেষে শেষ রাতে সিলেট থেকে ঢাকায় এল বিশেষ সেই কমান্ডো বাহিনী। তখন হোলি আর্টিজানের চারপাশে প্রচণ্ড কড়াকড়ি। সাংবাদিকসহ সবাইকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে সড়ক থেকে। বৃষ্টিও শুরু হলো। আমি কাছাকাছি কোনো একটা বাড়ির ভেতরে ঢুকে পড়লাম। ততক্ষণে প্রচণ্ড গোলাগুলিতে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে গুলশান এলাকা।
সেনাবাহিনীর কমান্ডোরা ছুটছেন। গুলি করছেন। এসে গেছে সাঁজোয়া যান। আমার কয়েক হাত সামনে থেকেই কমাণ্ডোদের গুলি চালাতে দেখলাম। আমি আমার মোবাইলের ভিডিও অন করলাম, যাতে ছবিগুলো রাখতে পারি। মনে হচ্ছিল হলিউডের কোনো সিনেমা দেখছি। বাস্তবের এই সিনেমার নাম ‘অপারেশন থান্ডারবোল্ট’।
অপরাশেন শেষ হওয়ার পর সিমিন হোসেনের মতোই উদ্বিগ্ন দেখেছিলাম এক বাবাকে। পুলিশসহ যাকে দেখছেন, তাঁকেই ছবি দেখিয়ে বলেছেন, তাঁর ছেলের কোনো খোঁজ আছে কী না। ভদ্রলেকোর নাম জানলাম, শাহরিয়ার খান। ভোরে অভিযানের পর একটি ফোন আসার পর তিনি কাঁদতে কাঁদতে সেজদায় পড়লেন মাটিতে। এর পর শুরু করলেন মোনাজাত। কাছে যেতেই জানালেন, ‘আমার ছেলে বেঁচে আছে।’ কিন্তু তাঁর ছেলেকে উদ্ধার করবে কে?
খুব বেশিক্ষণ লাগেনি এই অভিযানে। আধা ঘণ্টারও কম বোধহয়। সকাল সাড়ে ৮টায় অভিযান শেষ হওয়ার কথা জানায় সেনাবাহিনী। সেনা ও সোয়াট সদস্যরা ফিরে আসতে থাকেন। এর পর আসে অ্যাম্বুলেন্স। বের করা হতে থাকে লাশ। সারাদিন পর দুপুরের দিকে ফিরে আসি। রাত থেকে না খাওয়া। সারারাত জেগে ছিলাম। ক্লান্ত। ঘুমও দরকার।
ঘটনার পাঁচ বছর পেরিয়ে গেছে। স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে মনে হয়, হোলি আর্টিজান হামলা আমাদের আসলেই কাঁপিয়ে দিয়েছিল। এই ঘটনার ছয়দিন পরই কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় হামলা চালায় জঙ্গিরা। সেখানেও দুই পুলিশ সদস্য নিহত হন। গুলিবিনিময়কালে একজন সাধারণ নারী ও একজন জঙ্গি নিহত হয়। বাংলাদেশের সেই সময়টা ছিল আসলেই আতঙ্কের। দুশ্চিন্তার। সেই আতঙ্ক জঙ্গিবাদ নিয়ে। বাংলাদেশের ভবিষ্যত নিয়ে। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সবার চেষ্টায় সেই উদ্বেগ কিছুটা কমেছে।
ওই সময়ের হামলাকারীদের একজনের বাবার একটা কথা আজও মেনে পড়ে। তিনি আমাকে বলেছিলেন, ‘আর কোনো বাবার যেন এমন পরিস্থিতিতে পড়তে না হয়। সব বাবা-মার কাছে আহ্বান, সন্তানদের খোঁজ নিন। কোথায় যায়, কী করে খোঁজ নিন।’
লেখক: ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদি হত্যার প্রতিবাদে শরীয়তপুর জেলা শহরে মশাল মিছিল করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। গতকাল শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় শহরের জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ চত্বর থেকে মশাল মিছিলটি শুরু হয়।
৪০ মিনিট আগে
সাতক্ষীরার বহুল প্রতীক্ষিত রেললাইনের নির্মাণকাজ এগোচ্ছে কচ্ছপগতিতে। এক যুগ আগে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পর গেল মাসে যশোরের নাভারণ থেকে সাতক্ষীরা পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণের ডিপিপি প্রণয়ন করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
৫ ঘণ্টা আগে
ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলার আমুয়া ইউনিয়নে হাসপাতালসংলগ্ন ধোপাবাড়ির খালের ওপর সেতুর নির্মাণ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও কাজ শেষ হয়নি। দুই পাড়ে খুঁটি (পিলার) নির্মাণ করে বন্ধ রয়েছে কাজ। এতে পাশের ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের সেতু ব্যবহার করতে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের।
৬ ঘণ্টা আগে
ময়মনসিংহের নান্দাইলে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নেতা হাবিবুর রহমান বাচ্চুর বিরুদ্ধে নরসুন্দা নদীর পাড় দখল করে পাকা ভবন নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। মুশুল্লি ইউনিয়নের তারের ঘাট বাজারসংলগ্ন নদীর জায়গা দখল করে দোতলা মার্কেট নির্মাণ করছেন তিনি।
৬ ঘণ্টা আগেশরীয়তপুর প্রতিনিধি

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদি হত্যার প্রতিবাদে শরীয়তপুর জেলা শহরে মশাল মিছিল করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। গতকাল শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় শহরের জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ চত্বর থেকে মশাল মিছিলটি শুরু হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে শরীয়তপুর-ঢাকা সড়কের চৌরঙ্গী মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে প্রায় আধা ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন দলটির নেতা-কর্মীরা। এ সময় হাদি হত্যার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন তাঁরা।
এনসিপির শরীয়তপুর জেলার সদস্যসচিব সবুজ তালুকদার বলেন, ‘হাদি হত্যাকাণ্ড কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। ভিন্নমত দমন ও রাজনৈতিক কণ্ঠরোধের ধারাবাহিকতারই অংশ এই হত্যাকাণ্ড। দিনদুপুরে খুনিরা গুলি করে কীভাবে পালিয়ে গেল? এক সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও খুনিদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আমরা অবিলম্বে এই হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত, প্রকৃত খুনিদের গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। তা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আমিন মোহাম্মদ জিতু বলেন, ‘এটি শুধু একজন ব্যক্তির হত্যাকাণ্ড নয়, এটি মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর সরাসরি আঘাত। এই হত্যার বিচার না হলে তরুণ সমাজ রাজপথে আবারও দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে।’
বিক্ষোভে এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদি হত্যার প্রতিবাদে শরীয়তপুর জেলা শহরে মশাল মিছিল করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। গতকাল শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় শহরের জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ চত্বর থেকে মশাল মিছিলটি শুরু হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে শরীয়তপুর-ঢাকা সড়কের চৌরঙ্গী মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে প্রায় আধা ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন দলটির নেতা-কর্মীরা। এ সময় হাদি হত্যার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন তাঁরা।
এনসিপির শরীয়তপুর জেলার সদস্যসচিব সবুজ তালুকদার বলেন, ‘হাদি হত্যাকাণ্ড কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। ভিন্নমত দমন ও রাজনৈতিক কণ্ঠরোধের ধারাবাহিকতারই অংশ এই হত্যাকাণ্ড। দিনদুপুরে খুনিরা গুলি করে কীভাবে পালিয়ে গেল? এক সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও খুনিদের গ্রেপ্তার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আমরা অবিলম্বে এই হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত, প্রকৃত খুনিদের গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। তা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হব।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আমিন মোহাম্মদ জিতু বলেন, ‘এটি শুধু একজন ব্যক্তির হত্যাকাণ্ড নয়, এটি মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর সরাসরি আঘাত। এই হত্যার বিচার না হলে তরুণ সমাজ রাজপথে আবারও দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে।’
বিক্ষোভে এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

বাতাসে তখন নানা গুজব ভেসে বেড়াচ্ছে। আটকে পড়াদের স্বজনেরা বারবার সাংবাদিকদের কাছে জানতে চাইছেন, ভেতরে কী হচ্ছে। আটকা পড়া অনেক পরিবারের সদস্যই সাংবাদিক ও পুলিশের কাছে আসছেন তাঁদের স্বজনদের কাছে। আমরা দেখছি, সেনাবাহিনীসহ বিশেষায়িত নানা বাহিনীর সদস্যরা আসা–যাওয়া করছেন। কিন্তু কারও কাছে সঠিক কোনো উত্তর ন
০১ জুলাই ২০২১
সাতক্ষীরার বহুল প্রতীক্ষিত রেললাইনের নির্মাণকাজ এগোচ্ছে কচ্ছপগতিতে। এক যুগ আগে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পর গেল মাসে যশোরের নাভারণ থেকে সাতক্ষীরা পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণের ডিপিপি প্রণয়ন করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
৫ ঘণ্টা আগে
ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলার আমুয়া ইউনিয়নে হাসপাতালসংলগ্ন ধোপাবাড়ির খালের ওপর সেতুর নির্মাণ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও কাজ শেষ হয়নি। দুই পাড়ে খুঁটি (পিলার) নির্মাণ করে বন্ধ রয়েছে কাজ। এতে পাশের ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের সেতু ব্যবহার করতে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের।
৬ ঘণ্টা আগে
ময়মনসিংহের নান্দাইলে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নেতা হাবিবুর রহমান বাচ্চুর বিরুদ্ধে নরসুন্দা নদীর পাড় দখল করে পাকা ভবন নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। মুশুল্লি ইউনিয়নের তারের ঘাট বাজারসংলগ্ন নদীর জায়গা দখল করে দোতলা মার্কেট নির্মাণ করছেন তিনি।
৬ ঘণ্টা আগেআবুল কাসেম, সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরার বহুল প্রতীক্ষিত রেললাইনের নির্মাণকাজ এগোচ্ছে কচ্ছপগতিতে। এক যুগ আগে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পর গেল মাসে যশোরের নাভারণ থেকে সাতক্ষীরা পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণের ডিপিপি প্রণয়ন করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
সাতক্ষীরাবাসী বলছে, শত বছরের প্রতীক্ষিত রেললাইন নির্মিত হলে একদিকে যেমন সুন্দরবনকেন্দ্রিক পর্যটন বিকশিত হবে, অন্যদিকে পণ্য পরিবহনে খরচ কমায় ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারিত হবে।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন ও অন্যান্য সূত্রে জানা যায়, ১৯১৪ সালে ব্রিটিশ ভাইসরয় সাতক্ষীরাকে রেললাইনে সংযুক্ত করে সুন্দরবন পর্যন্ত সম্প্রসারণের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই নির্দেশনা বাস্তবায়িত হয়নি। ১৯৫৮ সালে সাতক্ষীরা-ভেটখালি সড়ক নির্মাণের সময় জমি অধিগ্রহণ করেও নির্মিত হয়নি রেললাইন।
দীর্ঘকাল পরে ২০১০ সালে সাতক্ষীরার শ্যামনগরে এক জনসভায় তৎকালীন সরকারপ্রধান নাভারণ-সাতক্ষীরা-মুন্সিগঞ্জ রেললাইন নির্মাণের ঘোষণা দেন। ২০১৩ সালে সম্ভাব্যতা যাচাই করে মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দেয় অস্ট্রেলিয়ার ক্যানারেইল কোম্পানি লিমিটেড। সম্ভাব্যতা যাচাই করতে খরচ হয় ১১ কোটি টাকা। সম্ভাব্যতা ম্যাপে ৯৮ কিলোমিটার রেললাইনে ৮টি স্টেশনের প্রস্তাব রাখা হয়।
এরপর আবারও থেমে যায় রেললাইন নির্মাণের উদোগ। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর রেললাইন স্থাপনের দাবিতে সাতক্ষীরায় বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের ব্যানারে আন্দোলন শুরু হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে নাভারণ-সাতক্ষীরা রেললাইন স্থাপনের উদ্যোগের অংশ হিসেবে যশোর রেলওয়ের পক্ষ থেকে সরেজমিন পরিদর্শন করা হয়। এরপর গত মাসে যশোরের নাভারণ থেকে সাতক্ষীরা পর্যন্ত ৫টি স্টেশনযুক্ত ৪২ কিলোমিটার রেললাইনের ডিপিপি প্রণয়ন করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে জেলা প্রশাসনের একটি সূত্র।
সাতক্ষীরার বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের শেষ জেলা সাতক্ষীরায় ২২ লাখের বেশি মানুষের বাস। এ জেলা থেকে দেশের অন্যান্য স্থানে যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম সড়কপথ। সুন্দরবন, চিংড়ি, আম ও ভোমরা বন্দরের কারণে অর্থনৈতিকভাবে ক্রমেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠায় সাতক্ষীরায় রেললাইন নির্মাণ এখন সময়ের দাবি।
জেলা চিংড়ি চাষি সমিতির সাধারণ সম্পাদক ডা. আবুল কালাম বাবলা বলেন, নৌপথ ও আকাশপথে যাতায়াতের কোনো সুযোগ নেই জেলাবাসীর। রেললাইন নির্মিত হলে মৎস্য খাতের নতুন দিকের সূচনা হবে।
সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলী নূর খান বাবুল বলেন, ‘সাতক্ষীরা থেকে আমরা যে পরিমাণ রাজস্ব সরকারকে দিই, সে ধরনের উন্নয়ন চোখে পড়ে না।’
ভোমরা সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আবু মুসা বলেন, কলকাতা থেকে ভোমরা স্থলবন্দরের দূরত্ব মাত্র ৬০ কিলোমিটার। তাই রেললাইন হলে ভোমরায় ব্যবসা-বাণিজ্যের চিত্র পাল্টে যাবে।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক আফরোজা আখতার বলেন, ‘জিআই পণ্য আম, চিংড়ি এবং ভোমরা স্থলবন্দরের পণ্য পরিবহনের জন্য সাতক্ষীরায় রেললাইন নির্মাণ জরুরি। আমি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে রেললাইন নির্মাণের জন্য যত প্রচেষ্টা রয়েছে, সেটা করব।’

সাতক্ষীরার বহুল প্রতীক্ষিত রেললাইনের নির্মাণকাজ এগোচ্ছে কচ্ছপগতিতে। এক যুগ আগে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পর গেল মাসে যশোরের নাভারণ থেকে সাতক্ষীরা পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণের ডিপিপি প্রণয়ন করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
সাতক্ষীরাবাসী বলছে, শত বছরের প্রতীক্ষিত রেললাইন নির্মিত হলে একদিকে যেমন সুন্দরবনকেন্দ্রিক পর্যটন বিকশিত হবে, অন্যদিকে পণ্য পরিবহনে খরচ কমায় ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারিত হবে।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন ও অন্যান্য সূত্রে জানা যায়, ১৯১৪ সালে ব্রিটিশ ভাইসরয় সাতক্ষীরাকে রেললাইনে সংযুক্ত করে সুন্দরবন পর্যন্ত সম্প্রসারণের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই নির্দেশনা বাস্তবায়িত হয়নি। ১৯৫৮ সালে সাতক্ষীরা-ভেটখালি সড়ক নির্মাণের সময় জমি অধিগ্রহণ করেও নির্মিত হয়নি রেললাইন।
দীর্ঘকাল পরে ২০১০ সালে সাতক্ষীরার শ্যামনগরে এক জনসভায় তৎকালীন সরকারপ্রধান নাভারণ-সাতক্ষীরা-মুন্সিগঞ্জ রেললাইন নির্মাণের ঘোষণা দেন। ২০১৩ সালে সম্ভাব্যতা যাচাই করে মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দেয় অস্ট্রেলিয়ার ক্যানারেইল কোম্পানি লিমিটেড। সম্ভাব্যতা যাচাই করতে খরচ হয় ১১ কোটি টাকা। সম্ভাব্যতা ম্যাপে ৯৮ কিলোমিটার রেললাইনে ৮টি স্টেশনের প্রস্তাব রাখা হয়।
এরপর আবারও থেমে যায় রেললাইন নির্মাণের উদোগ। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর রেললাইন স্থাপনের দাবিতে সাতক্ষীরায় বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের ব্যানারে আন্দোলন শুরু হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে নাভারণ-সাতক্ষীরা রেললাইন স্থাপনের উদ্যোগের অংশ হিসেবে যশোর রেলওয়ের পক্ষ থেকে সরেজমিন পরিদর্শন করা হয়। এরপর গত মাসে যশোরের নাভারণ থেকে সাতক্ষীরা পর্যন্ত ৫টি স্টেশনযুক্ত ৪২ কিলোমিটার রেললাইনের ডিপিপি প্রণয়ন করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে জেলা প্রশাসনের একটি সূত্র।
সাতক্ষীরার বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের শেষ জেলা সাতক্ষীরায় ২২ লাখের বেশি মানুষের বাস। এ জেলা থেকে দেশের অন্যান্য স্থানে যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম সড়কপথ। সুন্দরবন, চিংড়ি, আম ও ভোমরা বন্দরের কারণে অর্থনৈতিকভাবে ক্রমেই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠায় সাতক্ষীরায় রেললাইন নির্মাণ এখন সময়ের দাবি।
জেলা চিংড়ি চাষি সমিতির সাধারণ সম্পাদক ডা. আবুল কালাম বাবলা বলেন, নৌপথ ও আকাশপথে যাতায়াতের কোনো সুযোগ নেই জেলাবাসীর। রেললাইন নির্মিত হলে মৎস্য খাতের নতুন দিকের সূচনা হবে।
সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলী নূর খান বাবুল বলেন, ‘সাতক্ষীরা থেকে আমরা যে পরিমাণ রাজস্ব সরকারকে দিই, সে ধরনের উন্নয়ন চোখে পড়ে না।’
ভোমরা সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক আবু মুসা বলেন, কলকাতা থেকে ভোমরা স্থলবন্দরের দূরত্ব মাত্র ৬০ কিলোমিটার। তাই রেললাইন হলে ভোমরায় ব্যবসা-বাণিজ্যের চিত্র পাল্টে যাবে।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক আফরোজা আখতার বলেন, ‘জিআই পণ্য আম, চিংড়ি এবং ভোমরা স্থলবন্দরের পণ্য পরিবহনের জন্য সাতক্ষীরায় রেললাইন নির্মাণ জরুরি। আমি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে রেললাইন নির্মাণের জন্য যত প্রচেষ্টা রয়েছে, সেটা করব।’

বাতাসে তখন নানা গুজব ভেসে বেড়াচ্ছে। আটকে পড়াদের স্বজনেরা বারবার সাংবাদিকদের কাছে জানতে চাইছেন, ভেতরে কী হচ্ছে। আটকা পড়া অনেক পরিবারের সদস্যই সাংবাদিক ও পুলিশের কাছে আসছেন তাঁদের স্বজনদের কাছে। আমরা দেখছি, সেনাবাহিনীসহ বিশেষায়িত নানা বাহিনীর সদস্যরা আসা–যাওয়া করছেন। কিন্তু কারও কাছে সঠিক কোনো উত্তর ন
০১ জুলাই ২০২১
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদি হত্যার প্রতিবাদে শরীয়তপুর জেলা শহরে মশাল মিছিল করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। গতকাল শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় শহরের জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ চত্বর থেকে মশাল মিছিলটি শুরু হয়।
৪০ মিনিট আগে
ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলার আমুয়া ইউনিয়নে হাসপাতালসংলগ্ন ধোপাবাড়ির খালের ওপর সেতুর নির্মাণ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও কাজ শেষ হয়নি। দুই পাড়ে খুঁটি (পিলার) নির্মাণ করে বন্ধ রয়েছে কাজ। এতে পাশের ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের সেতু ব্যবহার করতে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের।
৬ ঘণ্টা আগে
ময়মনসিংহের নান্দাইলে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নেতা হাবিবুর রহমান বাচ্চুর বিরুদ্ধে নরসুন্দা নদীর পাড় দখল করে পাকা ভবন নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। মুশুল্লি ইউনিয়নের তারের ঘাট বাজারসংলগ্ন নদীর জায়গা দখল করে দোতলা মার্কেট নির্মাণ করছেন তিনি।
৬ ঘণ্টা আগেআরিফ রহমান, ঝালকাঠি

ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলার আমুয়া ইউনিয়নে হাসপাতালসংলগ্ন ধোপাবাড়ির খালের ওপর সেতুর নির্মাণ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও কাজ শেষ হয়নি। দুই পাড়ে খুঁটি (পিলার) নির্মাণ করে বন্ধ রয়েছে কাজ। এতে পাশের ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের সেতু ব্যবহার করতে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ নড়বড়ে ও ভাঙাচোরা ওই সেতু দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। এতে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছে শিক্ষার্থী, নারী, শিশু ও হাসপাতালে আসা রোগীরা।
উপজেলা প্রকৌশল কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স সুপ্তি কনস্ট্রাকশন এবং কবির ট্রেডার্স যৌথভাবে ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রকল্পটির কার্যাদেশ পায়। সেতুটি নির্মাণে ৫ কোটি ৪৩ লাখ ১৯ হাজার ৬৮০ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। নির্মাণকাজ ২০২২ সালের মে মাসে শুরু হয়। ২০২৩ সালের অক্টোবরের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও সেতুর নকশা পরিবর্তনের কারণে প্রকল্পের ব্যয় বাড়িয়ে ৬ কোটি ১৩ লাখ ২৫ হাজার ৪৪৭ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এ জন্য মেয়াদ নির্ধারণ করা হয় চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত। কিন্তু প্রায় ছয় মাস আগে মেয়াদ শেষ হলেও নির্মাণকাজ খুঁটি পর্যন্তই আটকে আছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির মালিকেরা জেলহাজতে থাকা এবং তাঁদের সব ব্যাংক হিসাব স্থগিত রয়েছে। এ কারণে নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে। ঠিকাদারদের পক্ষ থেকে বারবার প্রতিশ্রুতি দিলেও কার্যক্রম শুরু করতে পারছে না।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে প্রকল্প প্রকৌশলী মিলন ঘরামি ও ব্যবস্থাপক মো. বাহাদুর হাওলাদার জানিয়েছেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে কাজ পুনরায় শুরু করা হবে এবং তিন থেকে চার মাসের মধ্যে শেষ করা হবে।
প্রকল্পের অগ্রিম কোনো বিল তোলা হয়েছে কি না জানতে চাইলে উপজেলা উপসহকারী প্রকৌশলী মো. জিয়াউর রহমান বলেন, এখন পর্যন্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অগ্রিম কোনো বিল তোলেনি। তবে কাজের বেশ কয়েকটি মেমো তাঁদের কাছে আছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, ধোপাবাড়ির খাল অনেক প্রশস্ত। এ জন্য স্থানীয়দের কাছে এটি নদী হিসেবে পরিচিত। খালটি বিষখালী নদীর সঙ্গে যুক্ত। খালের ওপর দীর্ঘদিন ধরে একটি কাঠের সেতু রয়েছে। এটি দিয়ে যানবাহন চলাচল করতে পারে না। নড়বড়ে হওয়ায় পথচারীরাও অনেক ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন। সেতুটি শুধু আমুয়া ইউনিয়নের নয়, বরং পুরো কাঁঠালিয়া উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগমাধ্যম। সেতুটিকে কেন্দ্র করে রয়েছে ৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, উপজেলার একমাত্র আমুয়া হাসপাতাল, আমুয়া বন্দর ও তিনটি বড় বাজার। প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ এই সেতু ব্যবহার করছে, যার মধ্যে শিক্ষার্থী, রোগী, ব্যবসায়ী, নারী ও শিশু রয়েছে। বর্ষা মৌসুমে নদীর পানি বাড়লে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে সেতুর কাজ বন্ধ থাকায় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। স্কুলশিক্ষার্থীরা আতঙ্ক নিয়ে কাঠের সেতু পার হয়। রোগী নিয়ে হাসপাতালে যেতে গিয়ে পরিবারগুলোর দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।
আমুয়ার জনপ্রতিনিধি নকিরুল ইসলাম বলেন, ‘সেতুটি আমাদের এলাকার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু বছরের পর বছর কাজ বন্ধ হয়ে আছে।’
শেখ ফজিলাতুন্নেছা ভোকেশনাল ইনস্টিটিউটের প্রধান শিক্ষক মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন ভাঙাচোরা কাঠের সেতু দিয়ে স্কুলে আসা-যাওয়া করে। যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে দ্রুত কাজ শেষ করা প্রয়োজন।’
কাঁঠালিয়া উপজেলা প্রকৌশলী মো. গোলাম মোস্তফা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য নিয়মিত তাগিদ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি না থাকায় কাজ বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে।’
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের ঝালকাঠির জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শহীদুল ইসলাম সরকারের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি সাড়া দেননি।

ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলার আমুয়া ইউনিয়নে হাসপাতালসংলগ্ন ধোপাবাড়ির খালের ওপর সেতুর নির্মাণ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও কাজ শেষ হয়নি। দুই পাড়ে খুঁটি (পিলার) নির্মাণ করে বন্ধ রয়েছে কাজ। এতে পাশের ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের সেতু ব্যবহার করতে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ নড়বড়ে ও ভাঙাচোরা ওই সেতু দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। এতে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছে শিক্ষার্থী, নারী, শিশু ও হাসপাতালে আসা রোগীরা।
উপজেলা প্রকৌশল কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স সুপ্তি কনস্ট্রাকশন এবং কবির ট্রেডার্স যৌথভাবে ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রকল্পটির কার্যাদেশ পায়। সেতুটি নির্মাণে ৫ কোটি ৪৩ লাখ ১৯ হাজার ৬৮০ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। নির্মাণকাজ ২০২২ সালের মে মাসে শুরু হয়। ২০২৩ সালের অক্টোবরের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও সেতুর নকশা পরিবর্তনের কারণে প্রকল্পের ব্যয় বাড়িয়ে ৬ কোটি ১৩ লাখ ২৫ হাজার ৪৪৭ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এ জন্য মেয়াদ নির্ধারণ করা হয় চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত। কিন্তু প্রায় ছয় মাস আগে মেয়াদ শেষ হলেও নির্মাণকাজ খুঁটি পর্যন্তই আটকে আছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির মালিকেরা জেলহাজতে থাকা এবং তাঁদের সব ব্যাংক হিসাব স্থগিত রয়েছে। এ কারণে নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে। ঠিকাদারদের পক্ষ থেকে বারবার প্রতিশ্রুতি দিলেও কার্যক্রম শুরু করতে পারছে না।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে প্রকল্প প্রকৌশলী মিলন ঘরামি ও ব্যবস্থাপক মো. বাহাদুর হাওলাদার জানিয়েছেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে কাজ পুনরায় শুরু করা হবে এবং তিন থেকে চার মাসের মধ্যে শেষ করা হবে।
প্রকল্পের অগ্রিম কোনো বিল তোলা হয়েছে কি না জানতে চাইলে উপজেলা উপসহকারী প্রকৌশলী মো. জিয়াউর রহমান বলেন, এখন পর্যন্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অগ্রিম কোনো বিল তোলেনি। তবে কাজের বেশ কয়েকটি মেমো তাঁদের কাছে আছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, ধোপাবাড়ির খাল অনেক প্রশস্ত। এ জন্য স্থানীয়দের কাছে এটি নদী হিসেবে পরিচিত। খালটি বিষখালী নদীর সঙ্গে যুক্ত। খালের ওপর দীর্ঘদিন ধরে একটি কাঠের সেতু রয়েছে। এটি দিয়ে যানবাহন চলাচল করতে পারে না। নড়বড়ে হওয়ায় পথচারীরাও অনেক ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন। সেতুটি শুধু আমুয়া ইউনিয়নের নয়, বরং পুরো কাঁঠালিয়া উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগমাধ্যম। সেতুটিকে কেন্দ্র করে রয়েছে ৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, উপজেলার একমাত্র আমুয়া হাসপাতাল, আমুয়া বন্দর ও তিনটি বড় বাজার। প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ এই সেতু ব্যবহার করছে, যার মধ্যে শিক্ষার্থী, রোগী, ব্যবসায়ী, নারী ও শিশু রয়েছে। বর্ষা মৌসুমে নদীর পানি বাড়লে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে সেতুর কাজ বন্ধ থাকায় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। স্কুলশিক্ষার্থীরা আতঙ্ক নিয়ে কাঠের সেতু পার হয়। রোগী নিয়ে হাসপাতালে যেতে গিয়ে পরিবারগুলোর দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।
আমুয়ার জনপ্রতিনিধি নকিরুল ইসলাম বলেন, ‘সেতুটি আমাদের এলাকার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু বছরের পর বছর কাজ বন্ধ হয়ে আছে।’
শেখ ফজিলাতুন্নেছা ভোকেশনাল ইনস্টিটিউটের প্রধান শিক্ষক মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন ভাঙাচোরা কাঠের সেতু দিয়ে স্কুলে আসা-যাওয়া করে। যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে দ্রুত কাজ শেষ করা প্রয়োজন।’
কাঁঠালিয়া উপজেলা প্রকৌশলী মো. গোলাম মোস্তফা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য নিয়মিত তাগিদ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি না থাকায় কাজ বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে।’
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের ঝালকাঠির জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শহীদুল ইসলাম সরকারের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দেওয়া হলেও তিনি সাড়া দেননি।

বাতাসে তখন নানা গুজব ভেসে বেড়াচ্ছে। আটকে পড়াদের স্বজনেরা বারবার সাংবাদিকদের কাছে জানতে চাইছেন, ভেতরে কী হচ্ছে। আটকা পড়া অনেক পরিবারের সদস্যই সাংবাদিক ও পুলিশের কাছে আসছেন তাঁদের স্বজনদের কাছে। আমরা দেখছি, সেনাবাহিনীসহ বিশেষায়িত নানা বাহিনীর সদস্যরা আসা–যাওয়া করছেন। কিন্তু কারও কাছে সঠিক কোনো উত্তর ন
০১ জুলাই ২০২১
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদি হত্যার প্রতিবাদে শরীয়তপুর জেলা শহরে মশাল মিছিল করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। গতকাল শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় শহরের জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ চত্বর থেকে মশাল মিছিলটি শুরু হয়।
৪০ মিনিট আগে
সাতক্ষীরার বহুল প্রতীক্ষিত রেললাইনের নির্মাণকাজ এগোচ্ছে কচ্ছপগতিতে। এক যুগ আগে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পর গেল মাসে যশোরের নাভারণ থেকে সাতক্ষীরা পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণের ডিপিপি প্রণয়ন করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
৫ ঘণ্টা আগে
ময়মনসিংহের নান্দাইলে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নেতা হাবিবুর রহমান বাচ্চুর বিরুদ্ধে নরসুন্দা নদীর পাড় দখল করে পাকা ভবন নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। মুশুল্লি ইউনিয়নের তারের ঘাট বাজারসংলগ্ন নদীর জায়গা দখল করে দোতলা মার্কেট নির্মাণ করছেন তিনি।
৬ ঘণ্টা আগেনান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি

ময়মনসিংহের নান্দাইলে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নেতা হাবিবুর রহমান বাচ্চুর বিরুদ্ধে নরসুন্দা নদীর পাড় দখল করে পাকা ভবন নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। মুশুল্লি ইউনিয়নের তারের ঘাট বাজারসংলগ্ন নদীর জায়গা দখল করে দোতলা মার্কেট নির্মাণ করছেন তিনি।
হাবিবুর রহমান বাচ্চু মুশুল্লি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। তিনি তারের ঘাট বাজার পাথর ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক।
সরেজমিনে দেখা যায়, তারের ঘাট বাজারে নরসুন্দা নদীর ওপর সড়ক ও জনপথ বিভাগের একটি সেতু রয়েছে। সেতুর পশ্চিম পাশে নদীর উপরে নির্মাণ হচ্ছে পাকা ভবন। সাংবাদিকেরা ছবি তুলতে গেলে হাবিবুর রহমান বাচ্চুর ছেলে মো. ফয়সাল ছবি তোলার কারণ জানতে যান। এ সময় তিনি দাবি করেন, নদীর ওপর কোনো মার্কেট নির্মাণ করা হচ্ছে না। নিজেদের জায়গায় নির্মাণ করা হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা জানান, আওয়ামী লীগ আমলে সাবেক এমপি তুহিনের প্রভাব খাটিয়ে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করেছেন হাবিবুর রহমান বাচ্চু। অবৈধভাবে পাথর ব্যবসার পাশাপাশি দখল করেছেন সরকারি জায়গা। ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে চেয়ারম্যান হতে চেয়েছিলেন। তবে সরকার পতনের পর ভোল বদলে ফেলেন।
নদীর জায়গায় ভবন নির্মাণের বিষয়ে হাবিবুর রহমান বাচ্চু বলেন, ‘এই জমি আমার নিজস্ব সম্পত্তি। নদীর পাড়ের ভেতরে আমার আরও প্রায় ৫০ ফুট জমি আছে।’ তবে মুশুল্লি ইউনিয়নের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা (তহশিলদার) মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘নির্মাণাধীন স্থাপনাটি কোনো ব্যক্তিগত জমিতে নয়। এটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধিগ্রহণ করা জমির মধ্যে পড়ে। কর্তৃপক্ষের নির্দেশে নির্মাণকাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
কিশোরগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী বিজয় চন্দ্র বসাক বলেন, ‘সড়ক ও সেতুর দুই পাশে সওজের নিজস্ব জমি রয়েছে। সওজের জায়গায় স্থাপনা নির্মাণ করা হলে তদন্তের মাধ্যমে অপসারণ করা হবে।’
নান্দাইলের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাতেমা জান্নাত বলেন, অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আপাতত নির্মাণকাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।

ময়মনসিংহের নান্দাইলে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নেতা হাবিবুর রহমান বাচ্চুর বিরুদ্ধে নরসুন্দা নদীর পাড় দখল করে পাকা ভবন নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। মুশুল্লি ইউনিয়নের তারের ঘাট বাজারসংলগ্ন নদীর জায়গা দখল করে দোতলা মার্কেট নির্মাণ করছেন তিনি।
হাবিবুর রহমান বাচ্চু মুশুল্লি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন। তিনি তারের ঘাট বাজার পাথর ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক।
সরেজমিনে দেখা যায়, তারের ঘাট বাজারে নরসুন্দা নদীর ওপর সড়ক ও জনপথ বিভাগের একটি সেতু রয়েছে। সেতুর পশ্চিম পাশে নদীর উপরে নির্মাণ হচ্ছে পাকা ভবন। সাংবাদিকেরা ছবি তুলতে গেলে হাবিবুর রহমান বাচ্চুর ছেলে মো. ফয়সাল ছবি তোলার কারণ জানতে যান। এ সময় তিনি দাবি করেন, নদীর ওপর কোনো মার্কেট নির্মাণ করা হচ্ছে না। নিজেদের জায়গায় নির্মাণ করা হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা জানান, আওয়ামী লীগ আমলে সাবেক এমপি তুহিনের প্রভাব খাটিয়ে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করেছেন হাবিবুর রহমান বাচ্চু। অবৈধভাবে পাথর ব্যবসার পাশাপাশি দখল করেছেন সরকারি জায়গা। ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে চেয়ারম্যান হতে চেয়েছিলেন। তবে সরকার পতনের পর ভোল বদলে ফেলেন।
নদীর জায়গায় ভবন নির্মাণের বিষয়ে হাবিবুর রহমান বাচ্চু বলেন, ‘এই জমি আমার নিজস্ব সম্পত্তি। নদীর পাড়ের ভেতরে আমার আরও প্রায় ৫০ ফুট জমি আছে।’ তবে মুশুল্লি ইউনিয়নের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা (তহশিলদার) মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘নির্মাণাধীন স্থাপনাটি কোনো ব্যক্তিগত জমিতে নয়। এটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের অধিগ্রহণ করা জমির মধ্যে পড়ে। কর্তৃপক্ষের নির্দেশে নির্মাণকাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
কিশোরগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী বিজয় চন্দ্র বসাক বলেন, ‘সড়ক ও সেতুর দুই পাশে সওজের নিজস্ব জমি রয়েছে। সওজের জায়গায় স্থাপনা নির্মাণ করা হলে তদন্তের মাধ্যমে অপসারণ করা হবে।’
নান্দাইলের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাতেমা জান্নাত বলেন, অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আপাতত নির্মাণকাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।

বাতাসে তখন নানা গুজব ভেসে বেড়াচ্ছে। আটকে পড়াদের স্বজনেরা বারবার সাংবাদিকদের কাছে জানতে চাইছেন, ভেতরে কী হচ্ছে। আটকা পড়া অনেক পরিবারের সদস্যই সাংবাদিক ও পুলিশের কাছে আসছেন তাঁদের স্বজনদের কাছে। আমরা দেখছি, সেনাবাহিনীসহ বিশেষায়িত নানা বাহিনীর সদস্যরা আসা–যাওয়া করছেন। কিন্তু কারও কাছে সঠিক কোনো উত্তর ন
০১ জুলাই ২০২১
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদি হত্যার প্রতিবাদে শরীয়তপুর জেলা শহরে মশাল মিছিল করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। গতকাল শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় শহরের জুলাই স্মৃতিস্তম্ভ চত্বর থেকে মশাল মিছিলটি শুরু হয়।
৪০ মিনিট আগে
সাতক্ষীরার বহুল প্রতীক্ষিত রেললাইনের নির্মাণকাজ এগোচ্ছে কচ্ছপগতিতে। এক যুগ আগে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পর গেল মাসে যশোরের নাভারণ থেকে সাতক্ষীরা পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণের ডিপিপি প্রণয়ন করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
৫ ঘণ্টা আগে
ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলার আমুয়া ইউনিয়নে হাসপাতালসংলগ্ন ধোপাবাড়ির খালের ওপর সেতুর নির্মাণ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও কাজ শেষ হয়নি। দুই পাড়ে খুঁটি (পিলার) নির্মাণ করে বন্ধ রয়েছে কাজ। এতে পাশের ঝুঁকিপূর্ণ কাঠের সেতু ব্যবহার করতে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের।
৬ ঘণ্টা আগে