কোটালীপাড়ায় খাল দখল করে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও স্থাপনা, রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার

কোটালীপাড়া (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১২: ৪৬
আপডেট : ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৩: ৫৭

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় নদী ও খাল দখল করে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে। নিয়মনীতি না মেনে এসব প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠায় লাখ লাখ টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে সচেতন মহল। 

উপজেলা ভূমি অফিস ও বিভিন্ন দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, কোটালীপাড়া উপজেলার সদর, ঘাঘর বাজার ও এর আশপাশের এলাকায় নদী ও খালের তীরে অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে ২৭৮টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। এ ছাড়া ভাঙ্গারহাটের চারপাশে ৭০টি, কোটালীপাড়া হাসপাতাল রোডে ২০টি, রাধাগঞ্জ বাজারে ৫০টি, রাধাগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে ১৪টি, মতির মোড় থেকে উনশিয়া ঘোষবাড়ী পর্যন্ত ১৫টি, পিড়াবাড়ী বাজারে ৩০টি, শুয়াগ্রাম বাজারে ২০টি ও কুশলা বাজারে ২০টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও স্থাপনা অবৈধভাবে তৈরি করা হয়েছে। 

উপজেলা ভূমি অফিস ও বিভিন্ন দপ্তর সূত্রে আরও জানা গেছে, ধারাবাশাইল বাজারে ২৫টি, ওয়াবদার হাট বাজারে ২০টি, রামশীল বাজারে ১০টি, রামশীল সেতুর দুপাশে ১০টি, ত্রিমুখী বাজারে ১০টি, বান্ধাবাড়ী বাজারে ১৫টি, তরুর বাজারে ৩০টি, কালীগঞ্জ বাজারে ৩৫টি, চৌধুরীর হাটে ১০টি, ধারাবাশাইল থেকে কান্দি সড়কের পাশে ২০টি, তারাশী থেকে টুপরিয়া বাজার সড়কের পাশে ৪০টি, কুশলা বাজার থেকে মান্দ্রা পর্যন্ত সড়কের পাশে ৩৫টি, শিকিরবাজার থেকে বুজুর্গকোনা সড়কের পাশে ২৫টি অবৈধ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। 

সরেজমিনে জানা গেছে, ঘাঘর নদসহ উপজেলার বিভিন্ন খাল দখল করে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও স্থাপনা গড়ে তোলা হয়েছে। অনেক জায়গায় স্থাপনা তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে। যাঁরা দখল করছেন, তাঁরা স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী। 

উপজেলার ঘাঘর বাজারে কাঠ ব্যবসায়ী নুরুজ্জামানসহ একাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তির বিরুদ্ধে সরকারি জায়গা দখল করে পাকা ভবন নির্মাণ ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান তৈরির অভিযোগ উঠেছে। 

সরকারি জায়গা দখলের বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি অধিকাংশ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি। তবে কাঠ ব্যবসায়ী নুরুজ্জামান অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘ঘাঘর নদের ভেতরেও আমার দলিলের জায়গা রয়েছে। সেই জায়গায় আমি বহুতল ভবন নির্মাণ করেছি।’ 

এদিকে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ধারাবাশাইল বাজারের কয়েকজন বলেন, অনেক সময় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নদী ও খালের তীরে উচ্ছেদ অভিযান চালালেও কয়েক দিন না যেতেই আবার দখলে নেওয়া হয়। দখলকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় তাঁদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলে না। নিয়ম মেনে এসব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান করা হলে সরকার রাজস্ব পাবে। 

দ্রুত সময়ের মধ্যে অবৈধ স্থাপনায় অভিযান চালিয়ে দখলমুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মান্নান শেখ। তিনি বলেন, ‘উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় খাল-নদী দখল করে ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে খাল-নদী সাধারণ মানুষের ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে।’ 

মান্নান শেখ আরও বলেন, ‘আইন না মেনে সরকারি জায়গা দখল করে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণ করায় সরকার লাখ লাখ টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে। আমি এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদসহ দখলদারদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।’ 

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রতীক দত্ত বলেন, শিগগিরই এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের জন্য অভিযান পরিচালনা করা হবে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত