প্রসূতির সেবায় অনন্য চৌগাছার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

আজিজুর রহমান, চৌগাছা (যশোর)
প্রকাশ : ১৮ আগস্ট ২০২১, ১২: ০০

দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের শুরু থেকেই হাসপাতালগুলোতে নরমাল ডেলিভারির সংখ্যা কমতে থাকে। এখনো এ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। তবে ব্যতিক্রম যশোরের চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। করোনাকালীনও প্রসূতি মাতৃসেবায় অনন্য দৃষ্টি দিয়েছে হাসপাতালটি। এখানে গত ১৮ মাসে যে সংখ্যক নরমাল ভ্যাজাইনাল ডেলিভারি (এনভিডি) হয়েছে, তা যশোর, খুলনা ও কুষ্টিয়ার ২৫০ শয্যা হাসপাতাল এবং ঝিনাইদহ জেলা হাসপাতালেও হয়নি।

প্রসূতিসেবায় ২০১১ সাল থেকে পরপর কয়েকবার জাতীয় পুরস্কার পেয়েছে চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। সূত্র জানায়, হাসপাতালে প্রসূতি মায়েদের নরমাল ডেলিভারি স্বাস্থ্য বিভাগের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সাফল্যের বিষয়। খুলনা বিভাগের তিনটি ২৫০ শয্যা হাসপাতাল ও জেলা হাসপাতালগুলোর চেয়ে নরমাল ডেলিভারিতে এ কমপ্লেক্সটি এগিয়ে। ১৮ মাসে এখানে নরমাল ডেলিভারি হয়েছে খুলনা ২৫০ শয্যা হাসপাতালের সাত গুণের বেশি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মাসিক স্বাস্থ্য বুলেটিন সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২ হাজার ৬৭৯ জন প্রসূতি মায়ের নরমাল ডেলিভারি হয়েছে। এই সময়ে খুলনা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নরমাল ডেলিভারি হয়েছে ৩৭৫ প্রসূতির। যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ১ হাজার ৭৭৫, কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ২ হাজার ৫৩০ এবং ঝিনাইদহ জেলা হাসপাতালে ২ হাজার ৩২৯ জন প্রসূতির নরমাল ডেলিভারি হয়েছে।

১৮ মাসে চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১ হাজার ১৫৯ জন প্রসূতির সিজারে ডেলিভারি হয়েছে, যা খুলনা ২৫০ শয্যা হাসপাতালের তিন গুণের বেশি। এই সময়ে খুলনা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে সিজার হয়েছে ৩৭৭ জনের। মাত্র ৫০ শয্যার হাসপাতাল হয়েও ২৫০ শয্যা হাসপাতালগুলোর সঙ্গে পাল্লা দিয়েছে এটি।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. লুৎফুন্নাহার বলেন, ‘২০১৬ সাল থেকেই নরমাল ডেলিভারিতে আমরা বিভাগে শীর্ষে থাকলেও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো করোনাকালেও অনেক বেশি নরমাল ডেলিভারি করিয়েছি। এখানে সাময়িক অজ্ঞানকারী (অ্যানেসথেসিয়া) একজন বিশেষজ্ঞ ও একজন অ্যানেসথেটিস্টের পদ থাকলেও কোনো পদায়ন নেই। একজন মেডিকেল অফিসারকে অ্যানেসথেসিয়ার প্রশিক্ষণ দিয়ে আমাদের প্রসূতি ওয়ার্ড চালাতে হয়। তবুও আমরা এগিয়ে আছি।’  

পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জানান, হাসপাতালের ৮ জন চিকিৎসক, ৬ জন নার্সসহ ৩৩ জন স্টাফ বিভিন্ন সময়ে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ২ জন চিকিৎসক দুইবার করে আক্রান্ত হয়েছেন। একজন চিকিৎসক এখনো আক্রান্ত রয়েছেন। এতে স্বাভাবিক স্বাস্থ্যসেবায় বিঘ্ন ঘটলেও চিকিৎসক, নার্স ও স্টাফরা তাঁদের সর্বোচ্চ সেবা দিয়ে চলেছেন।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত