আবুল কাসেম, সাতক্ষীরা
অপরিকল্পিত খনন এবং তীর দখলের কারণে সাতক্ষীরার অন্যতম নদ মরিচ্চাপ এখন অশনিসংকেত হয়ে দেখা দিয়েছে। খননেও স্রোতহীন একসময়ের প্রমত্ত এ নদ। ফলে গচ্চা গেছে সরকারের বিপুল পরিমাণ অর্থ। এ ছাড়া আগামী বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতার ঝুঁকিতে রয়েছে তিন উপজেলার বিপুল জনগোষ্ঠী।
সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, আশাশুনির চাঁপড়া থেকে দেবহাটার ইছামতী পর্যন্ত মরিচ্চাপ নদের দৈর্ঘ্য ৪৫ কিলোমিটার। তবে এর মধ্যে খনন করা হয়েছে আশাশুনির চাঁপড়া থেকে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাঁকাল ব্রিজ পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার। খরচ হয়েছে ৫৫ কোটি টাকা।
পাড় বাদে নদের প্রস্থ ১৮০ থেকে ২০০ ফুট হবে এবং গভীরতা হবে স্থানভেদে ২০ থেকে ৩০ ফুট। যদিও সিএস খতিয়ান অনুযায়ী নদের প্রস্থ ৫০০ থেকে ৬০০ ফুট।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সাতক্ষীরা সদর, দেবহাটা ও আশাশুনি উপজেলার জলাবদ্ধতা নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে মরিচ্চাপ।
তবে সরেজমিনে দেখা যায়, বেড়িবাঁধের ধারে বানানো হয়েছে পাকা বাড়ি। কোথাও বেড়িবাঁধ কেটে পানি ঢোকানো হচ্ছে ঘেরে।
সদর উপজেলার এল্লারচর এলাকার বাসিন্দা আনিছুর রহমান জানান, সাতক্ষীরা থেকে শুরু হয়ে আশাশুনি পর্যন্ত নদের দুধারে ঘর আর ঘর। তা ছাড়া অসংখ্য ইটভাটা রয়েছে। এমনকি বেড়িবাঁধ কেটে ঘেরে নোনাপানি ঢোকানো হচ্ছে।
অভিযোগের বিষয়ে কাঁকড়াঘেরের মালিক আলতাডাঙ্গা গ্রামের অরবিন্দ মণ্ডল বলেন, ‘মরিচ্চাপের নোনাপানি ছাড়া এই অঞ্চলে ঘের করা অসম্ভব। বাধ্য হয়ে ঘেরে নোনাপানি ঢোকাচ্ছি।’ বেড়িবাঁধ কাটার কথা স্বীকার করে তিনি দাবি করেন, ‘বাঁধ অল্প কাটাতে নদের সমস্যা হচ্ছে না। যখন দরকার হয়, তখন গেট খুলে দিই, আর যখন দরকার হয় না তখন গেট বন্ধ করে দিই।’
আশাশুনির চাঁপড়া গ্রামের বাসিন্দা লিটন অধিকারী জানান, একসময় এই এলাকার মানুষ এই নদ দিয়ে লঞ্চে চড়ে খুলনায় যেত। এখন সেই নদ মৃত।
আশাশুনির কাটাখালী গ্রামের বাসিন্দা আয়নাল সরদার বলেন, ‘মরিচ্চাপ নদ যেনতেনভাবে কাটা। কোথাও বেশ চওড়া, আবার কোথাও খুব সরু। আর গভীরতা নেই। মাটি কেটে ওপরে তুলে পাড় উঁচু দেখানো হয়েছে।’
আয়নাল আরও বলেন, ‘বাঁকাল ব্রিজের পরে ইছামতী পর্যন্ত নদ মৃত। তাই জোয়ার-ভাটা খেলে না। সেদিকে খেয়াল না করে পানি উন্নয়ন বোর্ড আশাশুনির দিকে ৩৫ কিলোমিটার কেটেছে। তাই এ নদ স্থানীয়দের কোনো কাজে আসছে না।’
সদর উপজেলার গোয়ালডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা মিজানুর রহমান বলেন, ‘পরিকল্পিতভাবে মরিচ্চাপ নদ খনন করা হয়নি। যেমন, আমাদের এই ব্রিজটি (গোয়ালডাঙ্গা সেতু) যদি আগে করা হতো, তাহলে এখানে নদী অনেক বড় হতো। আর মাটি খননের সময় নিচের মাটি তুলে পাড়ে দেওয়া হয়েছে। উঁচু করে দেখানো হয়েছে।’
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ
খোলপেটুয়া ও ইছামতী নদীর সঙ্গে সংযোগ সৃষ্টি না করলে মরিচ্চাপ নদকে বাঁচানো যাবে না বলে মনে করেন সাতক্ষীরা পানি কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ আশেক-ই-এলাহী। তিনি বলেন, ‘সাতক্ষীরার মানুষের জীবিকা একদম নদীকেন্দ্রিক। কিন্তু উপকূলীয় এলাকা বলে এসব নদীতে প্রচুর পলি আসে। সেই নদী অপরিকল্পিতভাবে খনন করার জন্য প্রবহমান হচ্ছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ড বা প্রশাসন কেউ নদীবান্ধব না।’
আশেক-ই-এলাহী আরও বলেন, ‘নদী কেটে জলাবদ্ধতা দূর হয়নি। প্রথমত, ভালোভাবে নদী খনন করা হয়নি। দ্বিতীয়ত, পাড় উঁচু করার ফলে পাশের বাড়িগুলো আরও জলাবদ্ধ হবে। সিএস খতিয়ান দেখে যদি নদ খনন করা হতো, তাহলে দখলবাজি কমে যেত। এখন যদি ইছামতীর সঙ্গে মরিচ্চাপের সংযোগ না দেওয়া যায়, তবে এ নদ দুঃখের কারণ হবে।’
পানি উন্নয়ন বোর্ডের অবস্থান
দখলের বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সালাউদ্দীন বলেন, ‘আমরা দখলবাজদের তালিকা তৈরি করছি। সেই তালিকা জেলা প্রশাসনের কাছে দেব। তারপরে প্রশাসনের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে দখলবাজদের উচ্ছেদ করব।’
ইছামতীর সঙ্গে মরিচ্চাপের সংযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘জোয়ার-ভাটা নিয়মিতকরণে প্রয়োজনে মরিচ্চাপকে কেটে ইছামতীতে সংযোগ দেওয়া হবে। এ বিষয়ে আমরা ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে কথা বলেছি। ইছামতীর সঙ্গে সংযুক্তির বিষয়ে বাকি ১০ কিলোমিটার নদ খননের জন্য প্রকল্প পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ঠিকাদারের ভাষ্য
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমএ জেভির স্বত্বাধিকারী মো. অলিউল্লাহ দাবি করেন, নদ খননে অনিয়ম হয়নি। পানি উন্নয়ন বোর্ড নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছে। নকশা অনুযায়ী কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
অপরিকল্পিত খনন এবং তীর দখলের কারণে সাতক্ষীরার অন্যতম নদ মরিচ্চাপ এখন অশনিসংকেত হয়ে দেখা দিয়েছে। খননেও স্রোতহীন একসময়ের প্রমত্ত এ নদ। ফলে গচ্চা গেছে সরকারের বিপুল পরিমাণ অর্থ। এ ছাড়া আগামী বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতার ঝুঁকিতে রয়েছে তিন উপজেলার বিপুল জনগোষ্ঠী।
সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, আশাশুনির চাঁপড়া থেকে দেবহাটার ইছামতী পর্যন্ত মরিচ্চাপ নদের দৈর্ঘ্য ৪৫ কিলোমিটার। তবে এর মধ্যে খনন করা হয়েছে আশাশুনির চাঁপড়া থেকে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বাঁকাল ব্রিজ পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার। খরচ হয়েছে ৫৫ কোটি টাকা।
পাড় বাদে নদের প্রস্থ ১৮০ থেকে ২০০ ফুট হবে এবং গভীরতা হবে স্থানভেদে ২০ থেকে ৩০ ফুট। যদিও সিএস খতিয়ান অনুযায়ী নদের প্রস্থ ৫০০ থেকে ৬০০ ফুট।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সাতক্ষীরা সদর, দেবহাটা ও আশাশুনি উপজেলার জলাবদ্ধতা নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে মরিচ্চাপ।
তবে সরেজমিনে দেখা যায়, বেড়িবাঁধের ধারে বানানো হয়েছে পাকা বাড়ি। কোথাও বেড়িবাঁধ কেটে পানি ঢোকানো হচ্ছে ঘেরে।
সদর উপজেলার এল্লারচর এলাকার বাসিন্দা আনিছুর রহমান জানান, সাতক্ষীরা থেকে শুরু হয়ে আশাশুনি পর্যন্ত নদের দুধারে ঘর আর ঘর। তা ছাড়া অসংখ্য ইটভাটা রয়েছে। এমনকি বেড়িবাঁধ কেটে ঘেরে নোনাপানি ঢোকানো হচ্ছে।
অভিযোগের বিষয়ে কাঁকড়াঘেরের মালিক আলতাডাঙ্গা গ্রামের অরবিন্দ মণ্ডল বলেন, ‘মরিচ্চাপের নোনাপানি ছাড়া এই অঞ্চলে ঘের করা অসম্ভব। বাধ্য হয়ে ঘেরে নোনাপানি ঢোকাচ্ছি।’ বেড়িবাঁধ কাটার কথা স্বীকার করে তিনি দাবি করেন, ‘বাঁধ অল্প কাটাতে নদের সমস্যা হচ্ছে না। যখন দরকার হয়, তখন গেট খুলে দিই, আর যখন দরকার হয় না তখন গেট বন্ধ করে দিই।’
আশাশুনির চাঁপড়া গ্রামের বাসিন্দা লিটন অধিকারী জানান, একসময় এই এলাকার মানুষ এই নদ দিয়ে লঞ্চে চড়ে খুলনায় যেত। এখন সেই নদ মৃত।
আশাশুনির কাটাখালী গ্রামের বাসিন্দা আয়নাল সরদার বলেন, ‘মরিচ্চাপ নদ যেনতেনভাবে কাটা। কোথাও বেশ চওড়া, আবার কোথাও খুব সরু। আর গভীরতা নেই। মাটি কেটে ওপরে তুলে পাড় উঁচু দেখানো হয়েছে।’
আয়নাল আরও বলেন, ‘বাঁকাল ব্রিজের পরে ইছামতী পর্যন্ত নদ মৃত। তাই জোয়ার-ভাটা খেলে না। সেদিকে খেয়াল না করে পানি উন্নয়ন বোর্ড আশাশুনির দিকে ৩৫ কিলোমিটার কেটেছে। তাই এ নদ স্থানীয়দের কোনো কাজে আসছে না।’
সদর উপজেলার গোয়ালডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা মিজানুর রহমান বলেন, ‘পরিকল্পিতভাবে মরিচ্চাপ নদ খনন করা হয়নি। যেমন, আমাদের এই ব্রিজটি (গোয়ালডাঙ্গা সেতু) যদি আগে করা হতো, তাহলে এখানে নদী অনেক বড় হতো। আর মাটি খননের সময় নিচের মাটি তুলে পাড়ে দেওয়া হয়েছে। উঁচু করে দেখানো হয়েছে।’
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ
খোলপেটুয়া ও ইছামতী নদীর সঙ্গে সংযোগ সৃষ্টি না করলে মরিচ্চাপ নদকে বাঁচানো যাবে না বলে মনে করেন সাতক্ষীরা পানি কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ আশেক-ই-এলাহী। তিনি বলেন, ‘সাতক্ষীরার মানুষের জীবিকা একদম নদীকেন্দ্রিক। কিন্তু উপকূলীয় এলাকা বলে এসব নদীতে প্রচুর পলি আসে। সেই নদী অপরিকল্পিতভাবে খনন করার জন্য প্রবহমান হচ্ছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ড বা প্রশাসন কেউ নদীবান্ধব না।’
আশেক-ই-এলাহী আরও বলেন, ‘নদী কেটে জলাবদ্ধতা দূর হয়নি। প্রথমত, ভালোভাবে নদী খনন করা হয়নি। দ্বিতীয়ত, পাড় উঁচু করার ফলে পাশের বাড়িগুলো আরও জলাবদ্ধ হবে। সিএস খতিয়ান দেখে যদি নদ খনন করা হতো, তাহলে দখলবাজি কমে যেত। এখন যদি ইছামতীর সঙ্গে মরিচ্চাপের সংযোগ না দেওয়া যায়, তবে এ নদ দুঃখের কারণ হবে।’
পানি উন্নয়ন বোর্ডের অবস্থান
দখলের বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সালাউদ্দীন বলেন, ‘আমরা দখলবাজদের তালিকা তৈরি করছি। সেই তালিকা জেলা প্রশাসনের কাছে দেব। তারপরে প্রশাসনের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে দখলবাজদের উচ্ছেদ করব।’
ইছামতীর সঙ্গে মরিচ্চাপের সংযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘জোয়ার-ভাটা নিয়মিতকরণে প্রয়োজনে মরিচ্চাপকে কেটে ইছামতীতে সংযোগ দেওয়া হবে। এ বিষয়ে আমরা ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে কথা বলেছি। ইছামতীর সঙ্গে সংযুক্তির বিষয়ে বাকি ১০ কিলোমিটার নদ খননের জন্য প্রকল্প পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ঠিকাদারের ভাষ্য
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমএ জেভির স্বত্বাধিকারী মো. অলিউল্লাহ দাবি করেন, নদ খননে অনিয়ম হয়নি। পানি উন্নয়ন বোর্ড নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছে। নকশা অনুযায়ী কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
পর্যটকদের ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করায় বান্দরবানের পর্যটন শিল্প বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বান্দরবানে পর্যটকদের ভ্রমণে আর কোন বাধা থাকবে না।
১ মিনিট আগেসুনির্দিষ্ট ডিজাইন করে অটোরিকশা বিআরটিএ থেকে অনুমোদন দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন জাগরণ প্রতিবন্ধী কল্যাণ সংস্থার সভাপতি সোহেল রানা। বুধবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হক চৌধুরী হলে ‘আধুনিক নগর ব্যবস্থাপনায় সড়ক পরিবহনে রিকশা বিতর্ক ও করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় এ দাবি জানান।
১১ মিনিট আগেআমি নিম্নস্বাক্ষরকারী চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুলে আপনার নেতৃত্বাধীন স্কাউট টিম মেম্বার ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এর স্ত্রী। দেশের বিশেষ পরিস্থিতিতে আপনি বাংলাদেশ সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। শপথ গ্রহণের পর আপনি আইনের শাসন বজায় রাখা এবং দুঃশাসনের অবসানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
১৬ মিনিট আগেকুষ্টিয়ার দৌলতপুরে বিএনপি-আওয়ামী লীগ সংঘর্ষে দুজন নিহত হয়েছে। আজ বুধবার বিকেল থেকে চলা এই সংঘর্ষে তাঁদের মৃত্যু হয়। উপজেলার আড়িয়া ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।
২২ মিনিট আগে