টানা ৩৭ দিন রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজল চুয়াডাঙ্গা

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৬ মে ২০২৪, ১৮: ৫০
আপডেট : ০৬ মে ২০২৪, ১৯: ৪৭

টানা ৩৭ দিন দাবদাহের পর অবশেষে স্বস্তির বৃষ্টির শুরু হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়। আজ সোমবার বেলা ৩টা ৩৭ মিনিট থেকে দমকা হাওয়ার সঙ্গে বজ্রসহ বৃষ্টি শুরু হয়। ৪টার পর থেকে শিলা পড়তে শুরু করে। প্রচণ্ড গরমের পর এই বৃষ্টিতে জনজীবনে নেমে এসেছে স্বস্তি। প্রকৃতি ফিরে পেয়েছে প্রাণ।

১০-১৫ মিনিট শিলাবৃষ্টিসহ ১ ঘণ্টা ৩৮ মিনিট স্থায়ী বজ্রসহ বৃষ্টিতে মোট ২৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা গেছে, মার্চ মাসের ২৯ তারিখ থেকে চুয়াডাঙ্গা জেলায় তাপপ্রবাহ শুরু হয়। পুরো এপ্রিল মাস ছিল মাঝারি, তীব্র ও অতি তীব্র দাবদাহের সঙ্গে গরমের দাপট। এর মধ্যে গত ২৯ এপ্রিল চুয়াডাঙ্গায় ৪৩ ডিগ্রি ও পরদিন ৩০ এপ্রিল সর্বোচ্চ ৪৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। যা স্বাধীনতার পর থেকে চুয়াডাঙ্গার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।

আজ বেলা ৩টায় এ জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৬ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৫২ শতাংশ। সন্ধ্যা ৬টায় তাপমাত্রা কিছুটা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ৯৪ শতাংশ।

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ইনচার্জ জামিনুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দুপুরের পর থেকেই চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন স্থানের আকাশে কালো মেঘে ঢেকে যায়। বেলা ৩টা ৩৭ মিনিট থেকে দমকা হাওয়ার সঙ্গে শিলাবৃষ্টি শুরু হয়। বিকেল ৫টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত স্থায়ী ছিল বৃষ্টি।’

চুয়াডাঙ্গায় টানা ৩৭ দিন দাবদাহের পর বজ্রসহ শিলাবৃষ্টি। ছবি: আজকের পত্রিকাতিনি আরও বলেন, ‘এ সময় মোট ২৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ডায়ামিটারে ১ সেন্টিমিটার শিলা রেকর্ড করা হয়েছে।’

এ আবহাওয়া কর্মকর্তা বলেন, ‘এই বৃষ্টির মধ্য দিয়ে চুয়াডাঙ্গায় তাপপ্রবাহ শেষ হয়েছে। আগামী ১২ থেকে ১৩ মে পর্যন্ত এ জেলায় থেমে থেমে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময় কালবৈশাখী, শিলাবৃষ্টি ও বজ্রবৃষ্টিও হতে পারে।’

এদিকে টানা দাবদাহের পর চুয়াডাঙ্গায় স্বস্তির বৃষ্টিতে খুশি এ অঞ্চলের মানুষ। বৃষ্টি শুরুর পর শিশু, কিশোরসহ বিভিন্ন বয়সী মানুষকে বৃষ্টির পানিতে ভিজতে দেখা গেছে। অনেকে উল্লাস উদ্‌যাপন করেছেন।

চুয়াডাঙ্গায় টানা ৩৭ দিন দাবদাহের পর বজ্রসহ শিলাবৃষ্টি। ছবি: আজকের পত্রিকাচুয়াডাঙ্গা শহরের রিকশাচালক আলতাফ মিয়া স্বস্তির নিশ্বাস ছেড়ে বলেন, ‘অনেক দিন ধরি গরমে মইরে যাচ্ছেলাম। এখন পানি (বৃষ্টি) হইল। ম্যাগ (মেঘ) আছে, আরও হতি পারে। খুব ভালো লাগছি। ভাড়া না হলিও শরীরডা একটু শান্তি পাইলো।’

চুয়াডাঙ্গা শান্তিপাড়ার কিশোর রুদ্র রাসেল বলেন, ‘টানা রোদ-গরমের পর এমন বৃষ্টি হচ্ছে। তাই বৃষ্টির পানিতে ভেজার লোভ আর সামলাতে পারলাম না। আমরা একসঙ্গে পাড়ার অনেকজন বৃষ্টিতে ভিজেছি।’

সদর উপজেলার তালতলা গ্রামের লিচুবাগানের মালিক পারভেজ আলী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বৃষ্টিতে স্বস্তি লাগছে, কিন্তু শিলার কারণে লিচুর ক্ষতি হবে। কেবল কিছু লিচু হারভেস্ট করা শুরু হয়েছে। এখন গাছের লিচু পাকতে কিছুদিন সময় লাগবে। শিলাবৃষ্টিতে লিচুসহ সব ফসলেরই ক্ষতি হবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত