মোংলা বন্দরের নিজস্ব ড্রেজারডুবির ঘটনায় ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন

মোংলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি 
প্রকাশ : ০৯ মে ২০২৩, ১৭: ২৫
আপডেট : ০৯ মে ২০২৩, ১৭: ৪০

মোংলা বন্দরের ৭ নম্বর জেটিতে খননকাজ চলাকালে ড্রেজার ‘এমভি ইমাম বোখারি’ ডুবে গেছে। গতকাল সোমবার সকালে জেটির নাব্যতা ফেরাতে খননকাজের সময় বন্দরের নিজস্ব এ ড্রেজারটি ডুবে যায়। 

এ ঘটনায় বন্দর কর্তৃপক্ষ তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। এ কমিটির সদস্যরা হলেন চিফ হাইড্রোগ্রাফার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার ওবায়দুর রহমান, মেরিন ও যান্ত্রিক বিভাগের প্রকৌশলী অনুপ চক্রবর্তী ও হারবার বিভাগের পাইলট শফিউল আজম। 

সহকারী হারবার মাস্টার (অপারেশন) আমিনুর রহমান এই তথ্য জানিয়ে বলেন, বন্দরের নিজস্ব ক্রেন দিয়ে এটি উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। 

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মীর এরশাদ আলী বলেন, এ ঘটনায় এই মুহূর্তে অন্য জেটিতে জাহাজ ভিড়তে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্টদের গাফিলতি থাকলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

মীর এরশাদ আলী আরও বলেন, বন্দরের নিজস্ব দক্ষ লোকবলের অভাবে এই ড্রেজারটি ভাড়ায় চালানো হচ্ছে। লোকবলের সংকট কেটে গেলে ড্রেজারটি বন্দর কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে পরিচালনা করা হবে। 

বন্দরের নিজস্ব এই ড্রেজারটি চুক্তিভিত্তিক ভাড়া নিয়ে জেটিতে খননকাজ করছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ‘এ জেড ড্রেজার লিমিটেড কোম্পানি’। টানা চার বছর ধরে খননকাজের পাশাপাশি ড্রেজারটি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে তারা। 

এ জেড ড্রেজার লিমিটেড কোম্পানির ব্যবস্থাপক মো. শুভ বলেন, বন্দরের ৭ নম্বর জেটিতে মাটি খননকাজের সময় কাটার যন্ত্রটি মাটির নিচে ঢুকে যায়। পরে জোয়ারের প্রবল স্রোতের টানে ড্রেজারটি উল্টে ডুবে যায়। তবে এ সময় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। ড্রেজারটি উদ্ধারে কাজ চলছে। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বন্দরের একাধিক কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা বলেন, ‘ইমাম বোখারী’ ড্রেজারটি যারা চুক্তিভিত্তিক ভাড়ায় নিয়েছে, এই দুর্ঘটনায় তাদের গাফিলতি ছিল। এ সময় জাহাজটিতে মাস্টার ও ড্রাইভার ছিলেন না। এ ছাড়া অন্য স্টাফরাও ঘুমিয়ে ছিলেন। অসচেতনতায় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। 

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা জহিরুল হক বলেন, মোংলা বন্দরের নিজস্ব দুটি ড্রেজার রয়েছে। ইমাম বোখারী ড্রেজারটি ২০১৩ সালের জুন মাসে প্রকল্পের আওতায় ভারত থেকে ২৩ কোটি ৭৮ লাখ টাকায় কেনা হয়। আর ইমাম শাফি ড্রেজারটি ২০১৬ সালের জুন মাসে সরকারি অর্থায়নের ২৩ কোটি ৫৮ লাখ টাকায় নেদারল্যান্ডস থেকে কেনা হয়। 

জহিরুল হক আরও বলেন, বন্দর জেটিতে বাণিজ্যিক (বড় জাহাজ) জাহাজ আগমন-নির্গমন নিশ্চিতসহ নাব্যতা ফেরাতে খননকাজে সংযুক্ত করা হয় কাটার সেকশন এই ড্রেজার দুটি। শুরুতে ড্রেজার দুটি পরিচালনা ও খননকাজে বন্দরের নিজস্ব কর্মচারীরা দায়িত্বে থাকলেও পরে দক্ষ জনবল-সংকটের কারণে ব্যক্তিমালিকানা প্রতিষ্ঠানের কাছে চুক্তিভিত্তিক ভাড়ায় হস্তান্তর করা হয়।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত