নানা সমস্যার মধ্য দিয়ে চলছে ঝিনাইদহ পাসপোর্ট অফিসের কার্যক্রম

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৩ মার্চ ২০২৩, ১৭: ৫০

ভ্রমণ, কর্মসংস্থান কিংবা চিকিৎসার কারণে বিদেশে যেতে প্রতিদিন শত শত মানুষ পাসপোর্ট করতে ভিড় করেন ঝিনাইদহ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে। এখানে দুদকের অভিযানের পরও খুব একটা কমেনি ভোগান্তি। এখনও অনেক মানুষকে দিনের পর দিন ঘুরতে হয় পাসপোর্ট অফিসে। ফরমে ভুল, কাগজ ঠিক নেই এমন নানা অজুহাতে পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে সেবা নিতে আসা মানুষের। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পাসপোর্ট অফিসকে ঘিরে আশপাশে গড়ে উঠেছে বেশ কিছু কম্পিউটারের দোকান। যেখানে পাসপোর্ট অফিসের কর্মচারীদের যোগসাজসে চলে হয়রানি আর ঘুষ বাণিজ্য। অফিসে কাগজপত্র ভুল দেখানো হলেও এই সব দোকানে গেলে বাড়তি টাকার বিনিময়ে মুহূর্তেই ঠিকঠাক হয়ে যায় কাগজপত্র। যা পরে পাসপোর্ট অফিসে জমা দিতে গেলে কোনো হয়রানি হতে হয় না। 
 
এছাড়া অনেকেই পাসপোর্ট নিতে অফিসে এসে ঘুরছেন দিনের পর দিন। কিছু কাজ বাকি আছে, একটু দেরি হচ্ছে, কাগজে ভুল এমন নানা অজুহাতের শেষ নেই এখানে। তবে অফিস সংশ্লিষ্ট কিছু দালালকে অতিরিক্ত টাকা দিলেই মিলে ভোগান্তি থেকে মুক্তি। 

এমন নানা অভিযোগের প্রেক্ষিতে গেল ফেব্রুয়ারি মাসের ২ তারিখে পাসপোর্ট অফিসে অভিযান চালায় দুদক। শুরুতেই পাসপোর্ট অফিস সংলগ্ন স্বর্ণা কম্পিউটারের দোকানে অভিযান চালানো হয়। সেসময় ব্যাংক ড্রাফটের নামে অতিরিক্ত অর্থ নেওয়া, দালালের মাধ্যমে মানুষকে হয়রানি করার অভিযোগে দোকান মালিক মুস্তাফিজুর রহমান মিশুকে আটক করা হয়। পরে তাঁকে নিয়ে পাসপোর্ট অফিসে অভিযান চালায় দুদক। 

সেসময় অফিসে পাসপোর্ট করতে আসা মানুষের হয়রানি নানা অভিযোগ শুনে অফিসের সকল কর্মকর্তা কর্মচারীকে ভবিষ্যতে সকল অনিয়ম থেকে দূরে থাকতে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়। পরে উপস্থিত সকলের সামনে ভবিষ্যতে মানুষকে হয়রানি ও অনিয়ম করবে না মর্মে মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পান মুস্তাফিজুর রহমান মিশু। এরপর থেকেই কিছুটা কমেছে ভোগান্তি ও দালালদের দৌরাত্ম। 

শৈলকুপা উপজেলার ভাটই এলাকা থেকে আসা যুবক ফারুখ হোসেন জানান, আমি দুবাই যাওয়ার জন্য পাসপোর্ট করতে দিয়েছিলাম। অল্প কয়েকদিনের ভেতরেই ভোগান্তি ছাড়া পাসপোর্ট হাতে পেয়েছি। 

পাসপোর্ট নিতে আসা শরিফুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি জানান, পাসপোর্ট হাতে পেতে কয়েকটা দিন দেরি হয়েছে। তবে খুব বেশি ভোগান্তি হয়নি। 

তবে নাম প্রকাশে অনচ্ছিক এক নারী জানান, পাসপোর্টের জন্য কাগজ জমা দিতে এসে ৭ দিন ধরে ঘুরছি। কাগজ ঠিক নেই, ফরমে ভুল, নাম ভুল হয়েছে এমন নানা অজুহাতে অফিসের লোকজন খালি ঘুরাচ্ছে। তবে কোনো সেবা প্রত্যাশী কিংবা পাসপোর্ট অফিসের কেউ ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হননি। 

এ সব বিষয়ে ঝিনাইদহ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক মো. সাকাওয়াত হোসাইন জানান, পাসপোর্ট তৈরি করার ধরন দুটির একটি হলো ১১ কর্ম দিবসের মধ্যে পাসপোর্ট পেতে হলে ৮ হাজার ২৫ টাকা প্রয়োজন হবে। আর আরেকটা আছে আবেদন করার পর ২১ কর্ম দিবসের মধ্যে প্রদান করা হয়। এর মধ্যে তাদের কাগজপত্র যদি সঠিক থাকে তাহলে সঠিক সময়ে পেয়ে যান। অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হয় এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, যারা এই কথাগুলো বলছেন সঠিক বলছেন না। এখানে নির্ধারিত মূল্যের বাইরে কোনো টাকা নেওয়া হয় না।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত