সরকারি টাকায় হচ্ছে সাবেক পুলিশ কর্মকর্তার বাড়ির রাস্তা সংস্কার, এলাকায় সমালোচনা

মনিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ১১: ০১
আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ১১: ১৫

যশোরের মনিরামপুরে সরকারি ইটে পুলিশের সাবেক এক কর্মকর্তার বাড়ির রাস্তা সংস্কার হচ্ছে। উপজেলা প্রকৌশল দপ্তরের তত্ত্বাবধানে রাস্তাটির সংস্কারকাজ চলছে। উপজেলার সুবলকাটি গ্রামে পুলিশের সাবেক সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) পঙ্কজ বিশ্বাসের বাড়ির এই ৩৩ মিটার (১০৮ ফুট) ইটের সলিং (হেরিংবোন বন্ড) রাস্তার কাজে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লাখ টাকা। 

উপজেলা প্রকৌশলী বিদ্যুৎ দাস সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত রাস্তা সংস্কারের বিষয়টি আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেছেন। 

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার ঢাকুরিয়া ইউনিয়নের সুবলকাটি গ্রামে মুক্তেশ্বরী নদীর ওপর সম্প্রতি ৩ কোটি ৯২ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি সেতু নির্মিত হয়েছে। এখন সেতুর দুই পাড়ে রাস্তায় ইটের সলিংয়ের কাজ চলমান রয়েছে। সেতুর পশ্চিমপাড়সংলগ্ন রাস্তার উত্তরপাশে পুলিশের সাবেক কর্মকর্তা পঙ্কজ বিশ্বাসের বাড়ি। সরকারি রাস্তা থেকে তাঁর বসতঘরে উঠতে ১০৮ ফুট ব্যক্তিগত পথ রয়েছে। সে পথ খুঁড়ে ইট দিয়ে সলিং (হেরিংবোন বন্ড)  করার জন্য পথে বালি ফেলা হয়েছে। পথের দুই পাশে ছোট ছোট স্তূপে রাখা হয়েছে নতুন ইট। 

কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা জানান, নতুন ইটগুলো সরকারি টাকায় কেনা। সরকারি টাকায় শ্রমিক দিয়ে পঙ্কজ বিশ্বাসের বাড়ির সামনের সরকারি রাস্তা থেকে বসতঘরে ওঠার ব্যক্তিগত পথ সংস্কারের কাজ চলছে। 

পঙ্কজ বিশ্বাস বলেন, ‘দুই বছর আগে সেতুর কাজ শুরু করার সময় আমার বসতভিটা থেকে কিছু জমি সরকারি রাস্তায় চলে গেছে। তখন বিভিন্ন দপ্তরে ক্ষতিপূরণ চেয়ে আবেদন করে ফল পাইনি। পরে ঢাকা থেকে সেতুর এক প্রকল্প কর্মকর্তা সরেজমিন কাজ দেখতে সুবলকাটি আসেন। তখন তাঁকে বিষয়টি জানালে তিনি স্থানীয় এলজিইডি কর্মকর্তাকে আমার বাড়ির পথ ইটের সলিং করে দিতে বলেন। সেই অনুযায়ী ১০-১২ দিন আগে রাস্তা সংস্কারকাজ শুরু হয়েছে।’ 
 
সুবলকাটি এলাকায় সেতু নির্মাণ ও রাস্তা সংস্কারকাজ দেখভাল করছেন উপজেলা প্রকৌশলী দপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী গাউসুল আজম। তিনি বলেন, ‘ঢাকা থেকে সেতু দেখতে প্রকল্প কর্মকর্তা যখন এসেছিলেন, তখন আমি উপস্থিত ছিলাম। তিনি আমাকে বলেছিলেন পঙ্কজ বিশ্বাসের বাড়ির পথ ইটের সলিং করে দিতে। আমরা সেতুর কাজের সঙ্গে তাঁর বাড়ির পথ সংস্কারের জন্য ঢাকায় আলাদা প্রকল্প পাঠিয়েছি।’ 

স্থানীয়রা বলছেন, গ্রামীণ সড়ক সংস্কারের সময় দুপাশের অনেকের জমি রাস্তার মধ্যে চলে যায়। পঙ্কজ বিশ্বাসের জমি রাস্তায় যাওয়ায় যদি তাঁকে বাড়ির রাস্তা করে দিতে হয় তাহলে তো সবাইকে সরকারি খরচে বাড়ির রাস্তা করে দিতে হবে। 

মনিরামপুর উপজেলা প্রকৌশলী বিদ্যুৎ দাস বলেন, ‘পঙ্কজ বিশ্বাসের বাড়ির জমি রাস্তায় ঢুকে গেছে। তিনি ক্ষতিপূরণ চেয়েছিলেন। আমরা টাকা দিতে পারিনি। এ জন্য তাঁর বাড়ির পথ ইটের সলিং করে দেওয়া হচ্ছে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত