Ajker Patrika

নদীর পানি উপচে প্লাবিত কেশবপুর, ফসলের খতির শঙ্কায় কৃষকেরা 

কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৮: ১১
Thumbnail image

যশোরের কেশবপুরে বন্যায় কৃষিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আমন ধানের পাশাপাশি সবজিখেত নষ্ট হওয়ায় কৃষকেরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। অনেকে ধারদেনা করে আমন ধান আবাদ করেছিলেন। ফসল ঘরে তুলে পরিবার নিয়ে ভালো থাকার যে স্বপ্ন দেখছিলেন, তা এখন বন্যার পানিতে মিশে গেছে। সম্প্রতি টানা বৃষ্টি ও নদ-নদীর উপচে পড়া পানির কারণে কেশবপুর পৌর এলাকাসহ উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়ে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। ভদ্রা নদী পলিতে ভরাট হওয়ায় হরিহর নদ ও বুড়িভদ্রা নদীর পানি প্রবাহে বাধা পেয়ে এলাকায় পানি ঢুকে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। 

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর কেশবপুরে কৃষকেরা রোপা আমন ৯ হাজার ৫০৯ হেক্টর, সবজি ৬০০, মরিচ ২৬, হলুদ ১০০, তরমুজ ১১, আখ ৫৬, পান ১৩০ ও তুলা ২৫ হেক্টর আবাদ করেছিলেন। বন্যায় কৃষকের রোপা আমন ১ হাজার ৮৩০ হেক্টর, সবজি ২৩৯, মরিচ ১৮ দশমিক ৫, হলুদ ১৮, গ্রীষ্মকালীন তরমুজ ৪ দশমিক ৫, আখ ৩ দশমিক ৫, পান ১২ দশমিক ৩ ও তুলা ৩ হেক্টর ক্ষতি হয়েছে। এসব ফসল থেকে উৎপাদন হতো, আমন ৫ হাজার ৮৫৬ টন, সবজি ৪ হাজার ৩০২, মরিচ ৪৪ দশমিক ৪, হলুদ ৮১, তরমুজ ৯৯, আখ ৩৫ , পান ১১৬ দশমিক ৮৫ ও তুলা ১৪ দশমিক ৪ টন। 

উপজেলার ভোগতী নরেন্দ্রপুরের কৃষক মিজানুর রহমান বলেন, তিনি একটি সমিতি থেকে ৩০ হাজার টাকা লোন নিয়ে ভবানীপুরের মাঠপাড়া বিলে পাঁচ বিঘা জমিতে আমন ধান আবাদ করেছিলেন। বন্যার পানিতে তাঁর সব ধান নষ্ট হয়ে গেছে। এখন কীভাবে তিনি সমিতির টাকা পরিশোধ করবেনম তা নিয়ে রয়েছেন দুশ্চিন্তায়। গত বছর ওই জমিতে আমন আবাদ করে প্রতি কাঠায় এক মণ করে ধান পেয়েছিলেন। এবার কোনো ধান পাওয়ার সম্ভাবনা না থাকায় তাঁর সব স্বপ্ন বন্যার পানিতে মিশে গেছে। 

উপজেলার আলতাপোল গ্রামের কৃষক রেজাউল ইসলাম বলেন, তাঁর এক বিঘা বরজ বন্যার পানিতে তলিয়ে প্রায় পাঁচ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।

তাঁর মতো ওই গ্রামের আরও অনেক কৃষকের বরজ তলিয়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। উপজেলার সুফলাকাটি ইউনিয়নের বিল খুকশিয়ার মাছের ঘেরের বেড়িতে কৃষক আব্দুল গফফার ৫০০ তরমুজগাছ, ১ হাজার ২০০ বেগুনগাছসহ পুঁইশাক ও বরবটি লাগিয়েছিলেন। বন্যার পানিতে মাছের ঘেরের বেড়ি তলিয়ে যাওয়ায় ওই সব গাছ মরে গিয়ে তাঁর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তাঁর মতো ওই বিলে অন্য কৃষকদেরও মাছের ঘের ভেসে বেড়ির সব সবজি নষ্ট হয়েছে। কৃষকেরা এখন দিশেহারা। 

এ ছাড়া উপজেলার গৌরীঘোনা ইউনিয়নের বিভিন্ন বিলের মাছের ঘেরের বেড়ি তলিয়ে কৃষকের বিভিন্ন সবজিগাছ মরে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। 

সুফলাকাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম মুনজুর রহমান বলেন, তাঁর ইউনিয়নের অধিকাংশ বিলে মাছের ঘেরের বেড়িতে আবাদ করা সবজিগাছ মরে যাওয়ায় কৃষকেরা বিপাকে পড়েছেন। 

কেশবপুর উপজেলার অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, বন্যার পানিতে কৃষকের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। 

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবোর) উপবিভাগীয় প্রকৌশলী সুমন সিকদার বলেন, হরিহর নদের কেশবপুরের বড়েঙ্গা এলাকায় একটি এবং চুকনগর ব্রিজের কাছে একটি ভাসমান এক্সকাভেটর দিয়ে খননকাজ চালানো হচ্ছে। দ্রুত জলাবদ্ধতার পানি কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নারী সহকর্মীর সঙ্গে রাতযাপন: হাইটেক পার্কের ডিডি আতিক বরখাস্ত

বাংলাদেশসহ ৩ দেশে উন্নয়ন সহায়তা বন্ধের সিদ্ধান্ত সুইজারল্যান্ডের

বিচারপতি শাহেদ নূরউদ্দিনের পদত্যাগ

পদ্মা সেতু ও ড. ইউনূসকে নিয়ে ভারত থেকে শেখ হাসিনার ভাষণ! ভাইরাল ভিডিওর পেছনের ঘটনা জানুন

২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তাদের ফেসবুক প্রোফাইল পিকচার পরিবর্তন কর্মসূচি শুরু

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত