বাগেরহাটের মোল্লাহাটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মার্চ ফর ইউনিটির গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। আজ মঙ্গলবার আনুমানিক বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মোল্লাহাট মাদ্রাসাঘাট এলাকায় দুর্বৃত্তরা গাড়ি লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে এবং গাড়ি থামিয়ে কয়েকজনকে মারধর করে। পরে শিক্ষার্থীরা প্রতিরোধ গড়ে তুললে মুহূর্তেই রণক্ষেত্রে পরিণত হয় গোটা এলাকা। ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে অন্তত তিন শিক্ষার্থীসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।

এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও সেনাবাহিনী কাজ করছে। খুলনা-মাওয়া মহাসড়কের মাদ্রাসা ঘাট এলাকায় প্রায় দুই ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ ছিল। এদিন সকালে খুলনা মহানগর থেকে শিক্ষার্থীদের বহনকারী ২৫টি বাস ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করে।

শিক্ষার্থীরা জানান, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মোল্লাহাট অতিক্রমের সময় আগে থেকে প্রস্তুত হয়ে থাকা দুর্বৃত্তরা হামলা চালায়। হামলাকারীদের স্থানীয়রা সহযোগিতা করে বলেও অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। থানার সামনে ঘটনা হওয়া সত্ত্বেও এ সময় পুলিশ নীরব ভূমিকায় ছিল বলে অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।

স্থানীয়দের মাধ্যমে জানা যায়, শিক্ষার্থীদের গাড়িবহরের একটি গাড়ি পেছনে পড়ে যায়। ফকিরহাটের নওয়াপাড়া এলাকা থেকে শুরু করে মোল্লাহাটের একটি পাম্প পর্যন্ত ওই গাড়িকে একটি যাত্রীবাহী বাস বারবার চাপ দিচ্ছিল। একপর্যায়ে ওই গাড়ির লোকদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। ওই গাড়ির লোকজন এবং স্থানীয়রা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে এবং শিক্ষার্থীদের বহনকারী সেবা গ্রীন লাইন গাড়িটির গ্লাস ভাঙচুর করে। মুহূর্তের মধ্যে ঘটনাস্থলটি রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন খুলনার সমন্বয়ক জহুরুল তানভীর বলেন, খুলনা থেকে শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের বহর ঢাকায় যাচ্ছিল। পথে আমাদের ওপর হামলা করে। অনেকে আহত হয়েছে। ফ্যাসিবাদী সরকারের দোসররা এই আক্রমণ করেছে।

আরেক সমন্বয়ক মিনহাজুল আবেদীন সম্পদ বলেন, পরিকল্পিতভাবে এই হামলা করা হয়েছে। তবে কোনো বাধা আমাদের লক্ষ্য থেকে সরাতে পারবে না। আমাদের ভাইদের রক্ত ঝরেছে। এর বিচার অতি দ্রুত করতে হবে, জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। আর না হলে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনের মাধ্যমে জড়িতদের খুঁজে বের করবে।

মোল্লাহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে। শিক্ষার্থীরা গন্তব্যে রওনা দিয়েছেন। যান চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছি। ফের সংঘর্ষ এড়াতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা রয়েছেন।