Ajker Patrika

তাঁদের চাওয়া বসতঘর রক্ষার বাঁধ

দেওয়ানগঞ্জ ও মেলান্দহ (জামালপুর) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৭ জানুয়ারি ২০২৩, ১০: ০২
তাঁদের চাওয়া বসতঘর রক্ষার বাঁধ

যমুনা নদীর ভাঙনে বাহেলা বেগম (৬০) বসতভিটা হারিয়েছেন ১৩ বার। অন্যের জমি ইজারা নিয়ে ঘর তৈরি করে বেকার ছেলেসহ থাকছেন তিনি। অস্থায়ী ঘরে বসবাস নিয়ে সব সময় দুশ্চিন্তায় থাকেন। তাই বৃদ্ধ বয়সে সরকারের কাছে তাঁর একটাই চাওয়া, যমুনার তীরে ঘরবাড়ি ও ফসল রক্ষার বাঁধ তৈরি করা হোক। বাহেলার বাড়ি জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চিকাজানী ইউনিয়নের খোলাবাড়ী এলাকায়।

বাহেলা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘১৯ বছর আগে স্বামী মারা গেছেন। যমুনায় ১৩ বার আমার তৈরি ঘর ভাইঙ্গা গেছে। প্রথমে ইসলামপুর উপজেলায় ছিলাম, এরপর বাড়ি ভাঙতে ভাঙতে এলাম দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার বেলগাছি এলাকায়, এরপর ফুটানিবাজার, ডাকের চর। এখন খোলাবাড়ী এলাকায় খেত লিজ নিয়ে ঘর বানাইছি। আমার ছেলেটা বেকার। আমি মানুষের বাড়িতে কাজকাম কইরা খাই।’

বাহেলার মতো খোলাবাড়ী এলাকায় যমুনা নদীতে ঘরবাড়ি হারিয়ে অনেকে জমি ইজারা নিয়ে বসবাস করছেন। তাঁদের চাওয়া স্থায়ী একটি বাঁধ নির্মাণ এবং মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর।

যমুনা নদীতে ঘরবাড়ি হারিয়ে অনেকে জমি ইজারা নিয়ে বসবাস করছেন। খোলাবাড়ী এলাকার অর্ধেক অংশ বন্যার ভাঙনে যমুনায় বিলীন হয়েছে। দুটি আশ্রয়ণ প্রকল্পও ভেঙে গেছে। নদীভাঙনের শিকার পরিবারগুলো জানায়, তারা এখন অনেকে জমি ইজারা নিয়ে খোলাবাড়ী বাজারের পাশে ঘর করছে। বন্যার সময় তারা ভাঙনের আতঙ্কে থাকে।

খোলাবাড়ী এলাকার লোকজন জানান, চিকাজানী ইউনিয়নের খোলাবাড়ী বাজার থেকে আরও দেড় থেকে দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বসতবাড়ি ছিল। ফসলি জমিসহ খোলাবাড়ী হাইস্কুল ও প্রাথমিক বিদ্যালয় নদীতে বিলীন হয়েছে। ভাঙন এসে ঠেকেছে খোলাবাড়ী বাজারে।

বাহেলা বেগম। খোলাবাড়ী এলাকার নদীভাঙনের শিকার ছালমা বেগম বলেন, ‘জীবন ভরে শুধুই কষ্ট। ঘর ভাঙা যে কত কষ্টের, যাদের ভাঙে তারাই জানে। একটি বেড়িবাঁধ হইলে বসতঘর ভাঙত না আর। এ ছাড়া সরকার যদি আশ্রয়ণের ঘর কইরা দিত, তাহলে ভাঙার এত ভয় থাকত না।’

চিকাজানী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘আমার ইউনিয়নের অনেক লোকের ঘর-বাড়ি যমুনায় ভেঙে গেছে। কেউ কেউ জমি ইজারা নিয়ে ঘর বানিয়ে বসবাস করছে। উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়েছি, নদীভাঙা ভূমিহীন মানুষের জন্য যেন একটি করে ঘরের ব্যবস্থা এবং স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা হয়।’

দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুন্নাহার শেফা বলেন, ‘নদীভাঙনে যাঁরা ঘর-বাড়ি হারাচ্ছেন, তাদের অনেকের ঘরের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। নদীভাঙন রোধে কাজ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। আমরা আশা করছি নদীভাঙনের ঝুঁকিপূর্ণ জায়গাগুলোতেও শিগগির কাজ শুরু হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত