প্রশাসনের হস্তক্ষেপে মুক্ত হলো সেই বটগাছ

নালিতাবাড়ী (শেরপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৩ জুলাই ২০২৪, ১২: ১২

শেরপুরের নালিতাবাড়ী পৌরশহরের মধ্যবাজার এলাকায় খাসজমিতে থাকা পুরোনো একটি বটগাছ ‘হত্যা’য় দুই বছর ধরে নানা আয়োজন চালিয়েছেন গোলাম মোস্তফা নামে এক ব্যবসায়ী। তবে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে বটগাছটিকে ঘিরে রাখা টিনের বেড়া খুলে দিয়ে ব্যবসায়ীর কাছ থেকে গাছটিকে মুক্ত করেছে প্রশাসন।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০২২ সালের এক রাতে গাছটির ডাল কাটেন গোলাম মোস্তফা। এরপর থেকে দোকানের ভেতরে থাকা গাছের গোড়ার অংশের ডাল ও শিকড়-বাকড় পর্যায়ক্রমে কাটতে থাকেন। বিষ স্প্রে করে কচি পাতা মেরে ফেলার চেষ্টাও করা হয়। একপর্যায়ে বিষয়টির প্রতিবাদ করেন এলাকাবাসী। 

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, অভিযোগ করার পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে গাছের ডাল কাটা বন্ধের নির্দেশ দেন। তিন মাস আগে আবারও গাছটির ডাল কাটতে যান গোলাম মোস্তফা। এলাকাবাসী তখনো বাধা দেন এবং আবার ইউএনওকে জানান। ইউএনও ঘটনাস্থলে এসে গোলাম মোস্তফার কাছে গাছের ডাল কাটার কারণ জানতে চান। আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকি দেন। তখন গাছটির চারপাশ থেকে টিনের বেড়া সরিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি গাছের ডাল আর কাটবেন না বলে মুচলেকা দেন।

অথচ গাছটিকে ঘিরে রাখা টিনের বেড়া না সরিয়ে উল্টো গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে বটগাছটির বড় একটি ডাল কেটে ফেলা হয়েছে। গাছের ডালটি পার্শ্ববর্তী দোকানঘরের ওপর পড়ে। পরে বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন, মেয়র ও পুলিশকে জানানো হয়। 

এদিকে বটগাছটি বাঁচাতে উপজেলার নতুন ইউএনও মো. মাসুদ রানা অভিযুক্ত দোকানি গোলাম মোস্তফার বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেন উপজেলা ভূমি কার্যালয়কে। এরপর ভূমি কার্যালয়ের পক্ষ থেকে ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা (নায়েব) নেজামুল হক থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ বিষয়টি আদালতে পাঠায়। 

এ নিয়ে গত সোমবার দৈনিক আজকের পত্রিকার প্রথম পাতায় ‘দুষ্ট দোকানি ও বটবৃক্ষের জীবনরক্ষার লড়াই’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। পরে বিষয়টি ইউএনওর নজরে এলে তাঁর নির্দেশে মঙ্গলবার দুপুরে ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা (নায়েব) নেজামুল হকসহ অন্যান্য কর্মকর্তা গিয়ে বটগাছকে ঘিরে রাখা টিনের বেড়া সরিয়ে গাছটিকে মুক্ত করেন ৷ 

জানতে চাইলে দোকানি গোলাম মোস্তফা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বটগাছ খাস জায়গায় হলেও দোকান তো আমার জায়গাতেই। আমার বাপ-দাদারাও এখানেই দোকান করেছে। প্রশাসনের লোকজন হঠাৎ এসে টিনের চালা ও বেড়া ভেঙে দেয়। অনেক বারণ করলেও তারা মানেননি।’ 

 এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাসুদ রানা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘নায়েবসহ অন্যান্য কর্মকর্তা গিয়ে বটগাছটিকে অবমুক্ত করেছে। এখন আশা করি গাছটি বাঁচবে। আর আদালতের অনুমতি পেলে তদন্তসাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত