ধামইরহাটে প্রণোদনার পেঁয়াজ চাষ করে লাভবান কৃষক

নূরুন্নবী ফারুকী, ধামইরহাট (নওগাঁ)
Thumbnail image

নওগাঁর ধামইরহাটে প্রণোদনা পেয়ে বারি-১ জাতের পেঁয়াজ চাষ করে কৃষক আদিল আহম্মেদের মুখে হাসি ফুটেছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভালো ফলন পেয়েছেন তিনি। এ ছাড়া অল্প সময়ে তিনি এই ফসল ঘরে তুলতে পেরে লাভবান হয়েছেন। 

আজ শনিবার সকালে ধামইরহাট উপজেলার আড়ানগর ইউনিয়নের চকরহমত এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে গত বছর ২৬ ডিসেম্বর দুই একর জমিতে পেঁয়াজের চারা রোপণ করেন চাষি আদিল আহম্মেদ। এরপর কৃষি কার্যালয়ের পরামর্শে পরিমাণ মতো রাসায়নিক ও জৈব সার ব্যবহার করেন তিনি। সময়মতো পরিচর্চা করেন। এখন পেঁয়াজ তুলছেন। 

আদিলের পেঁয়াজখেতের পরিচর্যাকারী মতিবুল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রথমে জমি চাষ করতে হয়। এরপর বেড তৈরি করে পেঁয়াজের বীজ রোপণ করতে হয়। চাষাবাদের সময় সরিষার খৈলের নির্যাস স্প্রে করা হলে সার ও ছত্রাক নাশকের পরিমাণ খুবই কম লাগে। ফলে অল্প খরচের মধ্যে চারা রোপণ থেকে তিন মাস পর পেঁয়াজগুলো বিক্রয়ের জন্য উপযুক্ত হয়। এতে দুই একর জমিতে বীজ বপন থেকে পেঁয়াজ তোলা পর্যন্ত মোট খরচ হয়েছে প্রায় দুই লাখ টাকা।’ 

পেঁয়াজ চাষি আদিল আহম্মেদ জানান, তিন ফসলি জমিতে বরাবর ধান চাষ করতেন তিনি। রবি মৌসুমে ধান চাষাবাদ শেষে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে ২৩-২৪ অর্থবছরে প্রণোদনা পেয়ে বারি-১ (তাহেরপুরী) জাতের পেঁয়াজ চাষ করেন। এতে তিনি যেমন সফল হয়েছেন ঠিক তেমনি ভালো দাম পেয়েছেন। আদিলের সফলতা দেখে স্থানীয় চাষিরা পেঁয়াজ চাষে ঝুঁকছেন। 

আদিল আহম্মেদ বলেন, ‘স্থানীয় কৃষকেরা কটাক্ষ করে বলতেন, “ধান বাদ দিয়ে পেঁয়াজ লাগাইছু, এবার পুঁজি-টুজি সব হারাবুরে আদিল। ” পাড়া-প্রতিবেশীদের কথায় কান না দিয়ে পেঁয়াজ চাষে সফল হয়েছি। বর্তমান বাজার দর অনুযায়ী ২০০০ টাকা মণ হিসেবে এই জমি থেকে প্রায় সাত লাখ টাকা আয় হবে।’ অল্প সময়ে ধানের চেয়ে অধিক লাভ করে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হয়েছেন বলে জানান তিনি। 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তৌফিক আল জুবায়ের আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিভিন্ন খাদ্যশস্যের মতো পেঁয়াজ যাতে আমদানি নির্ভর করতে না হয় সে জন্য প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য ৮০ জন কৃষকদের মাথাপিছু ১ কেজি করে পেঁয়াজ বীজ, ২০ কেজি ডিএপি সার ও ২০ কেজি এমওপি সার বিতরণ করা হয়েছে।’ 

কৃষি কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘চলতি বছর পেঁয়াজের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৪৫ হেক্টর। ৪৮০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এসব চাষি সফল হওয়ায় অন্য কৃষকেরাও পেঁয়াজ চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। হাটবাজারে ভালো দাম পাওয়ায় অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেন চাষিরা।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত