বিএনপি-পুলিশের সংঘর্ষে থমথমে পরিস্থিতি গঙ্গাচড়ায়, অজ্ঞাত ১৫০০ আসামি 

গঙ্গাচড়া (রংপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৮: ৫৩

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় গতকাল বৃহস্পতিবার বিএনপি-পুলিশের সংঘর্ষে পর থেকে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। আজ শুক্রবার সকাল থেকে গঙ্গাচড়া বাজারের দোকানপাট বন্ধ ছিল। সন্ধ্যা ৬টার পর কিছু দোকানপাট খুলতে শুরু করেন ব্যবসায়ীরা। তবে সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি উপজেলার বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে মোড়ে পুলিশি টহল চোখে পড়ার মতো ছিল। 

এদিকে, পুলিশের গুলিতে আহত তিন ব্যবসায়ী এখন পর্যন্ত আশঙ্কাজনক। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে—পুলিশের গুলিতে আহত তিন সাংবাদিকের অবস্থা কিছুটা উন্নতির দিকে, তারা তাদের নিজ বাড়িতেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন। 

বিএনপির নেতা-কর্মীরা দাবি করেছেন, গতকাল বৃহস্পতিবার রাত থেকে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ নেতাদের আতঙ্কে তারা বাড়ি ছাড়া। এখন পর্যন্ত অনেক বিএনপি নেতা-কর্মীর খোঁজ পাওয়া যায়নি। রংপুর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও আহ্বায়ক  কমিটির সদস্য মোকাররম হোসেন সুজন দাবি করে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার পুলিশের লাঠিপেটা ও রাবার বুলেটে আমাদের ১৫০ জন সদস্য এ পর্যন্ত আহত হয়েছে। এখন পর্যন্ত পুলিশের আতঙ্কে অনেকেই বাড়ি ছাড়া। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আমাদের উপজেলা বিএনপি কার্যালয়ে ভাঙচুর করেছে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।’ 

বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের ওপর পুলিশও সাংবাদিককে মারধরের অভিযোগ এনে বিক্ষোভ মিছিল করেছে গঙ্গাচড়া উপজেলা ছাত্রলীগ। এতে যোগ দেন উপজেলা আওয়ামী লীগসহ দলের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা। এ দিকে গঙ্গাচড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজিজুল ইসলামের কাছে বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুরের বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, ‘বিএনপি নেতারা নিজেরাই নিজের অফিস ভাঙচুর করেছে। আমরা কেন তাদের অফিস ভাঙচুর করতে যাব! আমরা শুধুমাত্র তাদের নৈরাজ্যে বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেছি। আপনারা সাংবাদিক ভাইয়েরাই ভালো জানেন তারা বৃহস্পতিবার বিকেলে পুলিশের সঙ্গে কি আচরণ করেছে। তাদের ইট-পাটকেলের আঘাতে ব্যবসায়ী ও সাধারণ পথচারীরা কতটা জখম হয়েছে।’ 

সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি উপজেলার বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে মোড়ে পুলিশি টহল চোখে পড়ার মতো ছিলগঙ্গাচড়া মডেল থানা-পুলিশ বলছে, পুলিশ সদস্যদের সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে এবং পুলিশ সদস্যদের ওপর অতর্কিত হামলা করায় ৬ জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ ও তদন্ত সাপেক্ষে ৩ জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে বাকি তিন আটকসহ ৫০ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও প্রায় ১৫০০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। 

গঙ্গাচড়া বাজারের চাল ব্যবসায়ী নওফেল উদ্দিনের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার পুলিশের সঙ্গে রাজনৈতিক দলের সংঘর্ষ হয়। এ সময় গঙ্গাচড়া বাজারে দোকানে বসে ছিলেন তাঁর ছেলে। সংঘর্ষের সময় তাঁর ছেলের বাম চোখে পুলিশের গুলি লাগে। তার ছেলের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। 

গঙ্গাচড়া মডেল থানার তদন্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল ইসলাম জানান, পুলিশ সদস্যদের সরকারি কাজে বাধা দেওয়া এবং পুলিশ সদস্যদের ওপর অতর্কিত হামলা করায় তিনজন ছাত্রদল-যুবদল নেতাকে আটক করা হয়েছে। ৫০ জনের নাম উল্লেখসহ প্রায় ১৫০০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। 

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দুলাল হোসেনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, তার ডান পায়ে তীব্র আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন। তিনি হাঁটতে পারছেন না। 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত