জলমগ্ন সিলেট নগর, চিকিৎসা স্থগিত করে দেশে ফিরছেন মেয়র আনোয়ারুজ্জামান

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট
Thumbnail image

চিকিৎসা কার্যক্রম স্থগিত করে দেশে ফিরছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। উজানের ঢল ও ভারী বর্ষণে সিলেট নগর ও ৯টি উপজেলায় সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় জনগণের পাশে দাঁড়ানোর জন্য তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আগামী বুধবার বিকেলে যুক্তরাজ্য থেকে এক ফ্লাইটযোগে বৃহস্পতিবার সকালে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছবেন। 

আজ সোমবার রাতে মেয়রের ঘনিষ্ঠ সূত্র আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এর আগে, সিসিক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী চিকিৎসার জন্য শনিবার (২৫) ব্যক্তিগত সফরে যুক্তরাজ্যের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। 

ঘূর্ণিঝড় রিমালের আঘাতের পরপরই বুধবার (২৯) রাতে সিলেটের গোয়াইনঘাট, জকিগঞ্জ, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢলে আকস্মিকভাবে প্লাবিত হয়। গত শুক্রবার এই পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও নতুন করে প্লাবিত হয়েছে বিশ্বনাথ, বিয়ানীবাজার ও গোলাপগঞ্জের নিম্নাঞ্চল। প্লাবিত হয় সিলেট নগরের ৯টি ওয়ার্ডের অন্তত ১৫টি এলাকা। সব মিলিয়ে সিলেট জেলার আটটি উপজেলার ৪৮টি ইউনিয়নের সাড়ে ৬ লাখ মানুষ বন্যাকবলিত হন। বন্যার কারণে গোয়াইনঘাটে দুজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে একজন বিদ্যুতায়িত হয়ে, অন্যজন নৌদুর্ঘটনায় মারা গেছেন। 

তবে গতকাল রোববার রাতে এক ভয়াবহতার সাক্ষী হলো নগরবাসী। অথচ গত দুদিন বৃষ্টি না হওয়ায় সিলেটের বন্যা পরিস্থিতির অনেকটা উন্নতি হয়েছিল। ফলে পানি দ্রুত নেমে যাওয়ার আসায় বুক বেঁধেছিল সিলেটবাসী। রোববার রাতের বৃষ্টিতে সে আশার গুঁড়েবালি। 

আগে থেকেই পানিতে টইটুম্বুর ছিল সুরমা নদীও। বৃষ্টিতে রোববার মধ্যরাত থেকেই নদী উপচে নগরের নতুন নতুন এলাকা ডুবতে শুরু করে। বাসাবাড়িতে ঢুকে যায় পানি। সোমবার ভোর পর্যন্ত অব্যাহত থাকা এ বৃষ্টির নগরের শতাধিক এলাকার বাসাবাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে। পানি ঢোকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায়। ডুবে যায় কয়েকটি প্রধান সড়ক। ঘরের ভেতর পানি প্রবেশ ঠেকাতে রাত জেগে পাহারা দেন নগরবাসী। তবু শেষ রক্ষা হয়নি। সিসিকের ২৮টি ওয়ার্ড এবং জেলার ৯টি উপজেলার ৫৯টি ইউনিয়নের ৭৬১টি গ্রাম বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়। এতে ৬ লাখ ১৪ হাজার ২৮২ জন মানুষ আক্রান্ত হয়। বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে ১ হাজার ৩৮৪ জন লোক অবস্থান করছেন। 

সিসিকের জনসংযোগ শাখা জানায়, নগরের ৪২টি ওয়ার্ডের ২৮ ওয়ার্ডে পানি ঢুকে নতুন করে ৬ হাজার সহ মোট ১০ হাজার পরিবারের লাখখানেক মানুষ বন্যায় আক্রান্ত হন। এম মধ্যে তিনটি আশ্রয় কেন্দ্রে ৬৫০ দুর্গত রয়েছেন। 

মেয়র ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, এমন পরিস্থিতিতে যুক্তরাজ্যে থেকে স্বস্তি পাচ্ছেন না মেয়র মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। যাদের ভোটে নির্বাচিত হয়েছি তাদের বিপদের সময় পাশে থাকা জরুরি। প্রয়োজনে চিকিৎসার জন্য আবার যুক্তরাজ্যে ফিরবেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত