Ajker Patrika

দাতা-গ্রহীতার দূরত্ব ঘুচিয়ে মানবতার মেলবন্ধন বিকাশ-এর ডোনেশন সেবায়

ডেস্ক রিপোর্ট  
আপডেট : ২০ মার্চ ২০২৫, ১৮: ৫৮
দাতা-গ্রহীতার দূরত্ব ঘুচিয়ে মানবতার মেলবন্ধন বিকাশ-এর ডোনেশন সেবায়

একটা সময় ছিল, যখন কোনো সচ্ছল ও দানশীল ব্যক্তি কাকে দান করবেন, তা খুঁজে পেতেও দ্বিধায় পড়ে যেতেন। কিন্তু দাতা ও গ্রহীতার মাঝে সেই দূরত্ব এখন আর বাধা নয়। এই রূপান্তরের অগ্রভাগে রয়েছে বাংলাদেশের ডিজিটালাইজেশন। সম্প্রীতির ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ এই দেশে বিকাশ-এর মতো প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠেছে মানবিক ও সামাজিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার বিশ্বস্ত মাধ্যম। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা কিংবা দূরত্বের দেয়াল ভেঙে, মানুষের ভালোবাসা পৌঁছে যাচ্ছে সঠিক ঠিকানায়। উন্নত ডিজিটাল প্রযুক্তির কল্যাণে, দানের প্রচলিত পদ্ধতিতে বিকাশ এনেছে আমূল পরিবর্তন; নিশ্চিত করছে প্রতিটি সাহায্য যেন দ্রুত আর নিরাপদে পৌঁছে যায় সঠিক মানুষের কাছে।

একসময় মানুষকে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে, যার আসলেই সাহায্যের দরকার এমন ব্যক্তিকে খুঁজে, ঠিক সময়ে সাহায্য পৌঁছানো ছিল এক কঠিন কাজ। কিন্তু এখন বিকাশের গ্রাহকবান্ধব ডোনেশন ইন্টারফেস সেই বাধাগুলো দূর করেছে। স্মার্টফোনের কয়েকটি ট্যাপেই ৪০টি সংস্থার মাধ্যমে সাহায্য পাঠানো যাচ্ছে নিজের পছন্দের জায়গায়। দানের প্রক্রিয়া সহজ হওয়ায় মানবিকতার প্রকাশ এখন আরও সাবলীল।

বিকাশের ডোনেশনের বদৌলতে যাদের জীবনে কিছুটা আশার সঞ্চার হয়েছে, তাদের একজন টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের প্রত্যন্ত গ্রামের শাহিদা। থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত দুই সন্তানের মা, স্বামী-পরিত্যক্ত শাহিদার জীবনের গল্পটি কঠিন বাস্তবতার এক নির্মম প্রতিচ্ছবি। দুই সন্তানকে নিয়ে চলছে তার জীবনসংগ্রাম।

“গ্রামেই থাকি। ২০ বছর হইছে এক দিনও শ্বশুরবাড়ি যাওনের ভাগ্য হয় নাই। সংসার করা আমার কপালেই নাই।”—বলতে বলতে নিজের ছাপরাঘরটার দিকে শূন্য দৃষ্টিতে তাকান শাহিদা। বয়সের ভারে ন্যুব্জ বাবা মেয়ের দায়িত্ব নিলেও, থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত সন্তানের চিকিৎসার খরচ জোগানো তার সাধ্যের বাইরে ছিল। নিজে দিনভিত্তিক কাজ করলেও সেই আয়ে চিকিৎসাসেবা চালানো প্রায় অসম্ভব। সঠিক চিকিৎসার অভাবে তার বড় ছেলে আল-আমিনের ১৫ বছর বয়সেও শারীরিক বৃদ্ধি হয়নি। সন্তানদের বাঁচাতে তিনি দ্বারে দ্বারে ঘুরেছেন, কিন্তু কেউ সাহায্য করেনি।

শাহিদার এই কঠিন সংগ্রামে পাশে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া ফাউন্ডেশন। ফাউন্ডেশনের জাকাত ফান্ডের টাকায় এখন সুচিকিৎসা পাচ্ছে তার সন্তানেরা। সারা দেশ থেকে বিকাশ-এর মতো মোবাইল আর্থিক সেবার মাধ্যমে আসা দান কাজে লাগিয়ে, এই ফাউন্ডেশন শাহিদার সন্তানদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিশ্চিত করেছে। শাহিদার মতো এমন হাজারো অসহায় অভিভাবক থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত সন্তানদের নিয়ে থ্যালাসেমিয়া ফাউন্ডেশন হাসপাতালে আসেন একটু সহযোগিতা পাওয়ার আশায়। শুধু একটি সংস্থাই নয়, এ রকম ৪০টি সংস্থায় বিকাশ-এর মাধ্যমে মানবতায় সেবায় পাশে দাঁড়াচ্ছে মানুষ।

বিকাশ অ্যাপ থেকে আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম, ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন, বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া ফাউন্ডেশন, সেন্টার ফর জাকাত ম্যানেজমেন্ট, প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল, জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন, অভিযাত্রিক ফাউন্ডেশন, ডোনেশন ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট, প্রথম আলো ট্রাস্ট, আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন, মজার ইশকুল, জাগো ফাউন্ডেশন, শক্তি ফাউন্ডেশন, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, সাজিদা ফাউন্ডেশন, মির্জাপুর এক্স ক্যাডেটস এসোসিয়েশন, কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন, এসওএস চিলড্রেন ভিলেজ বাংলাদেশ, আইসিডিডিআরবি, ন্যাশনাল লিভার ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ—এ রকম প্রতিষ্ঠানগুলোতে সহজেই অনুদান দিতে পারছেন মানুষ।

শুধু তা-ই নয়, বিকাশ-এর অন্যান্য সেবা ব্যবহার করেও সরাসরি অনুদান দিতে পারছেন গ্রাহকেরা। করপোরেট কর্মকর্তা নওরীন। কর্মক্ষেত্রের ব্যস্ততার মাঝেও তিনি দেখিয়েছেন মানবিকতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তার গৃহপরিচারিকা যখন এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় দুই সন্তান ছাড়া পরিবারের সবাইকে হারান, নওরীন তার পাশে দাঁড়ান। বন্ধু আর সহকর্মীদের কাছ থেকে দ্রুততম সময়ে “ক্যাশ আউট চার্জসহ টাকা পাঠান” অপশনের মাধ্যমে তহবিল সংগ্রহ করেন। এই অর্থ দিয়ে গৃহপরিচারিকার জন্য একটি পিঠাঘর তৈরি করে দেওয়া হয়, যা তার জন্য একটি স্থায়ী আয়ের উৎস হয়ে ওঠে। বিকাশের কল্যাণে জরুরি পরিস্থিতিতেও দ্রুত ও নিরাপদ লেনদেন নিশ্চিত করা সম্ভব হয়।

গণসংযোগ পেশাজীবী আফরিনের গল্পও যেন এক আলোর দিশা। তিনি শিক্ষার মাধ্যমে মানুষের জীবন বদলাতে চান। প্রতি মাসে তিনি দেশের একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত একজন মেধাবী ছাত্রীকে সাহায্য করেন। বিকাশ-এর অটো পে সুবিধা ব্যবহারে তিনি নিশ্চিত করেন, সাহায্য যেন সময়মতো পৌঁছায়। তার ভাষায়, “আমি টাকা পাঠাতে ভুলে গেলেও বিকাশ অ্যাপ ভুলে যায় না, কারণ, আমি অটো পে সেট করে রেখেছি। আর যে শিক্ষার্থীকে সাহায্য করছি, তারও আমাকে প্রতি মাসে মনে করিয়ে দিতে হয় না। দানের মতো পবিত্র কাজ তো এভাবেই নীরবে হওয়া উচিত।”

দেশের সীমানা পেরিয়ে, বিকাশ রেমিটেন্সের মাধ্যমেও মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে। হাজার হাজার মাইল দূরে থাকা প্রবাসী বাংলাদেশিরা সহজে প্রিয়জনদের কাছে টাকা পাঠাতে পারছেন। দূরত্ব আর বাধা নয়, ভালোবাসা পৌঁছে যাচ্ছে সঠিক ঠিকানায়, সময়মতো। এই সুবিধা শুধু পারিবারিক বন্ধনই দৃঢ় করে না, বরং ভৌগোলিক দূরত্বনির্বিশেষে অভাবীদের জন্য জরুরি সহায়তাও নিশ্চিত করে।

চলছে রমজান মাস। ত্যাগের ও সহমর্মিতার এই মাসে দান করা আরও বেশি পুণ্যময়। তাই এই রমজানে, জাকাত বা ফিতরা দিয়ে খুব সহজে অভাবী মানুষদের পাশে দাঁড়াতে পারেন বিকাশ গ্রাহকেরা। শাহিদার মতো পরিবারের কষ্ট লাঘব করা, কারও জন্য স্থায়ী আয়ের ব্যবস্থা করা কিংবা মেধাবী কোনো শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ গড়ার প্রচেষ্টা—এমন যেকোনো ছোট-বড় সাহায্যই মানুষের জীবন বদলে দিতে পারে।

দান শুধু একটি মহৎ কাজই নয়, বরং সামাজিক পরিবর্তনের এক শক্তিশালী হাতিয়ার। বিকাশ-এর মতো প্ল্যাটফর্ম উদ্ভাবনী প্রযুক্তির ব্যবহারে এই দানের প্রক্রিয়াকে সহজই করেনি, বরং মানবিক সমাজ গড়তেও ভূমিকা রাখছে। বিকাশ-এর মাধ্যমে ডোনেশনের বিস্তারিত জানতে পারেন এই লিংকে: ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হেলিকপ্টারে নেওয়ার অবস্থায় নেই, দ্রুত নিকটবর্তী হাসপাতালে তামিম

অর্ধশতাধিক পুলিশ কর্মকর্তার ‘বিশেষ বৈঠক’, ব্যাখ্যা চাইল সদর দপ্তর

অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়, পালানোকালে আটক ৫ পুলিশ সদস্য

নতুন বাহিনীর প্রস্তাবে অসন্তোষ বেবিচকে

বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নরের বিরুদ্ধে ৪৭ ব্রিটিশ এমপিকে ‘সন্দেহজনক’ ই–মেইল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত