শিল্প উৎপাদনে খরচ বাড়াচ্ছে গ্যাস-সংকট

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৪ জানুয়ারি ২০২৪, ১২: ২০
Thumbnail image

তীব্র সংকট চলছে শিল্প খাতে। উৎপাদন চালিয়ে যেতে অনেক কারখানা ডিজেল ও সিএনজি কিনতে বাধ্য হচ্ছে। এতে বেড়ে যাচ্ছে উৎপাদন ব্যয়।র বিকল্প জ্বালানি দিয়ে কোনোরকমে উৎপাদন চালু রাখলেও সময়মতো অর্ডারের পণ্য সরবরাহ করতে পারছেন না অনেক শিল্পমালিক।

এদিকে শিল্পকারখানার সংকট সামাল দিতে সার কারখানায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রেখেছে সরকার। এতে বন্ধ হয়ে গেছে চট্টগ্রাম ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেড (সিইউএফএল) সার কারখানা এবং জামালপুরের তারাকান্দির যমুনা সার কারখানা। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে পেট্রো-বাংলার এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, শিল্প খাত ও বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস সরবরাহ করার জন্য সার কারখানায় বন্ধ করা হয়েছে গ্যাসের সরবরাহ। স্পট মার্কেট কার্গো কেনার পর সরবরাহ বাড়লে সার কারখানায় গ্যাস সরবরাহ করা হবে। 

তৈরি পোশাক খাতের উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, গ্যাসের অভাবে উৎপাদন ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় অনেক কারখানার মালিক ঠিকমতো বেতন দিতে হিমশিম খাচ্ছেন। ইতিমধ্যে গাজীপুর ও আশুলিয়ার কিছু কিছু কারখানায় বেতনের দাবিতে শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেছেন। নিট পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএ মনে করে, যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের শ্রমিক অসন্তোষ দানা বাঁধা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। গত ৫ ডিসেম্বর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ে লেখা চিঠিতে সংগঠনটি বলেছে, গ্যাসের চাপ না থাকায় বাইরে থেকে গ্যাস কিনতে কারখানাভেদে দৈনিক ৩-১৫ লাখ টাকা অতিরিক্ত খরচ হচ্ছে।

অন্যদিকে বিজিএমইএর আশঙ্কা, চলমান গ্যাস-সংকট দেশের সার্বিক রপ্তানি আয়কে সংকটে ফেলবে। এ ব্যাপারে বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গ্যাস-সংকটের কারণে আমরা সবাই ভুগছি। তার মধ্যে নারায়ণগঞ্জে সংকটের মাত্রা বেশি। আমরা গ্যাসের বেশি দাম দিয়েও এখন নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ পাচ্ছি না। গ্যাস-সংকট তাড়াতাড়ি সুরাহা করা না হলে বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি পণ্য তৈরি পোশাক সংকটে পড়ার সম্ভাবনা আছে।’ 

প্রতীকী ছবিমূলত গত বছরের অক্টোবর থেকে দেশব্যাপী গ্যাস-সংকট দেখা দিতে শুরু করে। ডলার-সংকটের কারণে গত বছরের নভেম্বর থেকে স্পট মার্কেট থেকে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) আমদানি বন্ধ করে দেওয়ার পর থেকে গ্যাস-সংকট তীব্র আকার ধারণ করে। এখন নিজস্ব উৎসের গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে, তবে তা আগের তুলনায় কম। 

পেট্রোবাংলা সূত্র বলছে, দেশে দৈনিক গ্যাসের চাহিদা ৩৮০ কোটি ঘনফুটের বেশি। সরবরাহ ২৯০-৩০০ কোটি ঘনফুটের মতো হলেও তেমন সমস্যা হয় না। কিন্তু চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ করা হয়েছে ২৫০ কোটি ঘনফুটের মতো। 

গ্যাস-সংকটে খুব সমস্যায় থাকার কথা জানিয়েছেন গাজীপুরে চৌরাস্তায় অবস্থিত সুপারটেক্স ডিজাইনার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ হান্নান। অনেকটা আক্ষেপের সুরে আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘আমি অনেক আশা নিয়ে তৈরি পোশাকের কারখানা করেছি। আমার কারখানার যে সক্ষমতা, তাতে ১ হাজার ৫০০ শ্রমিক কাজ করতে পারে। কিন্তু গ্যাসের সরবরাহ না থাকায় কাজও কমে গেছে। শ্রমিকদের বিদায় জানাতে হচ্ছে। এখন নিবু নিবু করে ১০০ জন শ্রমিক নিয়ে চলছে কারখানা।’ 

গাজীপুরে চান্দনাভিত্তিক ওয়াইকে সোয়েটার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম মাসুদ করিম বলেন, গ্যাসের পাশাপাশি বিদ্যুৎও এখন সমস্যা করছে। একদিকে বিদ্যুতের জন্য জেনারেটর চালাতে গিয়ে অতিরিক্ত খরচ করতে হচ্ছে। অন্যদিকে সরবরাহ গ্যাসের তিন গুণ বেশি টাকা দিয়ে কিনে সিএনজি ব্যবহার করতে হচ্ছে। ঠিকমতো পোশাক জাহাজীকরণ করতে এখন সমস্যা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কারা পরিদর্শক হলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক

ট্রাম্পের অভিষেক: সি আমন্ত্রণ পেলেও পাননি মোদি, থাকছেন আরও যাঁরা

ট্রাম্পের শপথের আগেই বার্নিকাটসহ তিন কূটনীতিককে পদত্যাগের নির্দেশ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে: সলিমুল্লাহ খান

সংস্কারের কিছু প্রস্তাবে মনঃক্ষুণ্ন বিএনপি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত