শ্রীলঙ্কাতেও পর্যালোচনার মুখে আদানির বিদ্যুৎ চুক্তি, নথি যাচ্ছে মন্ত্রিসভায়

অনলাইন ডেস্ক    
আপডেট : ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১: ৫৯
Thumbnail image
শ্রীলঙ্কাতে বিগত সরকারের সঙ্গে আদানির বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্পের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রসিকিউটররা আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান গৌতম আদানি এবং আরও সাতজনের বিরুদ্ধে ভারতীয় সরকারি কর্মকর্তাদের ঘুষ দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত করেছেন।

এর মধ্যে বাংলাদেশ বড় বিদ্যুৎ উৎপাদন চুক্তি, যার মধ্যে আদানি পাওয়ার ট্রেডিং চুক্তিও রয়েছে, পুনর্বিবেচনা করতে ‘খ্যাতিমান আন্তর্জাতিক আইনি এবং তদন্ত সংস্থা’ নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে চুক্তিগুলোর ‘পুনরায় পর্যালোচনা বা বাতিল’ হতে পারে বলে বাংলাদেশের কর্মকর্তারা গতকাল রোববার দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন।

বাংলাদেশ সরকার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের জাতীয় পর্যালোচনা কমিটি রোববার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বড় বিদ্যুৎ উৎপাদন চুক্তি, যা ২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত শেখ হাসিনার শাসনামলে স্বাক্ষরিত হয়েছিল, পুনরায় পর্যালোচনা করতে সহায়তার জন্য একটি খ্যাতিমান আইনি এবং তদন্ত সংস্থা নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছে।

কমিটি তাদের বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা আদানির গড্ডা কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ বেশ কয়েকটি চুক্তি নিয়ে বিশদ অনুসন্ধান চালাচ্ছে। অন্যান্য প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে—পায়রা (১৩২০ মেগাওয়াট কয়লাবিদ্যুৎ), মেঘনাঘাট (৩৩৫ মেগাওয়াট দ্বৈত জ্বালানি), আশুগঞ্জ (১৯৫ মেগাওয়াট গ্যাস), বাঁশখালী (৬১২ মেগাওয়াট কয়লা) এবং মেঘনাঘাটের কয়েকটি গ্যাস এবং আরএলএনজি প্রকল্প।

কমিটির নেতৃত্বে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী একটি প্রস্তাবে বলেছেন, অন্যান্য চুক্তির অধিকতর বিশ্লেষণ করার জন্য আরও সময় প্রয়োজন। আন্তর্জাতিক সালিশি আইন ও প্রক্রিয়ার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে চুক্তিগুলোর পুনরায় আলোচনা বা বাতিলের জন্য প্রমাণ সংগ্রহ করা হচ্ছে।

এর পরিপ্রেক্ষিতে আদানি পাওয়ার লিমিটেডের একজন মুখপাত্র দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে আমরা মন্তব্য করি না। আমাদের পিপিএ গত সাত বছর ধরে বিদ্যমান এবং এটি সম্পূর্ণ বৈধ ও সব আইন মেনে চলছে। আমরা বিদ্যুৎ সরবরাহ করে আমাদের চুক্তিগত দায়িত্ব পালন চালিয়ে যাচ্ছি।

এদিকে শ্রীলঙ্কার নতুন সরকারও আদানি গ্রিন এনার্জি লিমিটেডের মান্নার এবং পুনরিয়নের বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্প পুনর্বিবেচনা করছে। সেখানেও চুক্তিগুলোর আর্থিক ও পরিবেশগত প্রভাব খতিয়ে দেখার প্রক্রিয়া চলছে।

সরকারের এই পুনর্বিবেচনার সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বজায় রাখতে এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে।

শ্রীলঙ্কার দৈনিক দ্য সানডে মর্নিংকে সিলন বিদ্যুৎ বোর্ডের (সিইবি) মুখপাত্র প্রকৌশলী ধনুষ্ক পরাক্রমসিংহ নিশ্চিত করেছেন, বিষয়টি ‘পর্যালোচনার অধীনে’ থাকলেও এখনো কোনোও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।

তিনি বলেন, বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্প সম্পর্কিত একটি প্রস্তাব আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে মন্ত্রিসভার কাছে আরও আলোচনার জন্য জমা দেওয়া হবে।

ধনুষ্ক বলেন, মন্ত্রিসভা আদানি বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্পের সমস্ত বিবরণ পর্যালোচনা করবে এবং এরপর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। আমরা বর্তমানে প্রকল্পটির আর্থিক বাস্তবতা এবং পরিবেশগত প্রভাবসহ সমস্ত দিক মূল্যায়ন করছি।

‘এ ধরনের বৃহৎ প্রকল্পগুলোতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে আদানি গ্রুপ সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক উদ্বেগের আলোকে এটি জরুরি হয়েছে পড়েছে, ’ যোগ করেন ধনুষ্ক পরাক্রমসিংহ।

শ্রীলঙ্কার একেডি সরকার দেশের সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছে, তারা আদানি গ্রুপকে পূর্ববর্তী সরকারের দেওয়া বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্পের অনুমোদন পুনর্বিবেচনা করবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

কারা পরিদর্শক হলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক

ট্রাম্পের অভিষেক: সি আমন্ত্রণ পেলেও পাননি মোদি, থাকছেন আরও যাঁরা

ট্রাম্পের শপথের আগেই বার্নিকাটসহ তিন কূটনীতিককে পদত্যাগের নির্দেশ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিকে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে: সলিমুল্লাহ খান

সংস্কারের কিছু প্রস্তাবে মনঃক্ষুণ্ন বিএনপি

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত