Ajker Patrika

বাংলাদেশের ট্রান্সশিপমেন্ট-সুবিধা বাতিল করল ভারত

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১০ এপ্রিল ২০২৫, ১৫: ০৬
বাংলাদেশের ট্রান্সশিপমেন্ট-সুবিধা বাতিল করল ভারত

ভারত সরকার বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের জন্য দেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট-সুবিধা বাতিল করেছে। গতকাল মঙ্গলবার দেশটির সেন্ট্রাল বোর্ড অব ইনডাইরেক্ট ট্যাক্সেস অ্যান্ড কাস্টমসের (সিবিআইসি) এক বিজ্ঞপ্তিতে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম পিটিআইয়ের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

২০২০ সালের জুনে চালু করা এই সুবিধার মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে ভুটান, নেপাল ও মিয়ানমারে রপ্তানি পণ্য ভারতের স্থলবন্দর, সমুদ্রবন্দর ও বিমানবন্দর ব্যবহার করে পাঠানো হতো।

সিবিআইসির নতুন বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পূর্ববর্তী বিজ্ঞপ্তিটি তাৎক্ষণিকভাবে বাতিল করা হয়েছে। তবে এরই মধ্যে ভারতে প্রবেশ করা কার্গোগুলোকে পূর্ববর্তী নিয়ম অনুযায়ী ভারতীয় ভূখণ্ড ত্যাগের অনুমতি দেওয়া হবে।

ভারতের তৈরি পোশাক খাতসহ একাধিক রপ্তানিকারক সংগঠন দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশকে দেওয়া এই ট্রান্সশিপমেন্ট-সুবিধা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছিল। তাদের অভিযোগ, প্রতিদিন ২০-৩০টি বাংলাদেশি ট্রাক দিল্লির এয়ার কার্গো কমপ্লেক্সে প্রবেশ করে, ফলে ভারতের রপ্তানি পণ্য পরিবহনে ধীরগতি দেখা দেয়, বিমান পরিবহনে জায়গার সংকট তৈরি হয় এবং পরিবহন ব্যয় বেড়ে যায়।

গ্লোবাল ট্রেড রিসার্চ ইনিশিয়েটিভের (জিটিআরআই) প্রতিষ্ঠাতা অজয় শ্রীবাস্তব জানান, এই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের রপ্তানি ও আমদানি কার্যক্রমে বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে। তিনি বলেন, আগের ব্যবস্থায় ভারতে ট্রানজিট নিলে সময় ও খরচ—উভয়ই কমত। এখন সেই সুযোগ না থাকায় বাংলাদেশি রপ্তানিকারকদের জন্য পণ্য পাঠাতে দেরি, খরচ বৃদ্ধি ও অনিশ্চয়তা দেখা দেবে।

অজয় শ্রীবাস্তব আরও বলেন, নেপাল ও ভুটানের মতো স্থলবেষ্টিত দেশগুলোর জন্যও এই সিদ্ধান্ত সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। কারণ, এই পথ দিয়েই তারা বাংলাদেশে পণ্য পাঠাত ও আনত।

এদিকে ভারতের বিরুদ্ধে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। কারণ, ডব্লিউটিও সদস্যরাষ্ট্রগুলোকে স্থলবেষ্টিত দেশগুলোর জন্য ট্রানজিট সুবিধা দিতে বাধ্য করে।

অজয় শ্রীবাস্তব বলেন, ডব্লিউটিওর নিয়ম অনুযায়ী, সব সদস্যরাষ্ট্রকে স্থলবেষ্টিত দেশগুলোর জন্য ট্রানজিটের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। এ ধরনের ট্রানজিট বাধাহীন হতে হবে, অপ্রয়োজনীয় বিলম্ব বা শুল্ক আরোপ করা যাবে না। আর উভয় দেশই ডব্লিউটিওর সদস্য হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

প্রসঙ্গত, স্থলপথে বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করে নেপাল ও ভুটানে পণ্য যায়। বাংলাদেশের পণ্য নেপাল ও ভুটানে রপ্তানির সময় ভারতের ভূখণ্ড পাড়ি দিতে হয়। বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে ভারতের ভূখণ্ড দিয়ে নেপাল ও ভুটান সীমান্ত পর্যন্ত পণ্যের যানবাহন (ট্রাক) পরিবর্তন করা হয়। ট্রান্সশিপমেন্টের এই সুবিধা ভারত এখন থেকে বাংলাদেশকে দেবে না।

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত