প্রভাবশালীর বাধায় প্রধানমন্ত্রীর উপহার আশ্রয়ণের ঘরে  উঠতে পরছেন না গৃহহীনরা

ফুলগাজী (ফেনী) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০২ মে ২০২৩, ১৬: ২৪

ফেনীর ফুলগাজীতে গৃহ ও ভূমিহীন তিনটি পরিবার প্রধানমন্ত্রীর উপহার আশ্রয়ণের ঘর পেয়েও সেখানে উঠতে পারছে না। নুরুল আমিন মিয়া নামের স্থানীয় এক প্রভাবশালী ব্যক্তি তাঁদের ঘরে উঠতে বাধা দিচ্ছেন বলে জানান ওই তিন পরিবারের সদস্যরা। এদিকে সরকারিভাবে যে জায়গায় ঘর তৈরি করা হয়েছে সেটিকে নিজের বলে দাবি করেন নুরুল আমিন মিয়া।

গত রোববার ফুলগাজী সদর ইউনিয়নের নিলক্ষী গ্রামের আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সরকারি খাসজমিতে তিনটি গৃহ ও ভূমিহীন পরিবারকে সরকারিভাবে ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয় প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে। কিন্তু এ উপহার ভোগ করতে পারছে না তাঁরা। ভুক্তভোগীদের দাবি, যখনই তাঁরা আশ্রয়ণের ঘরে মাথা গোঁজার জন্য যান তখনই তাঁদের ওপর হামলা চালানো হয়। প্রাণনাশ, নির্যাতনসহ নানা ধরনের হুমকি দেওয়া হয়।

এদিকে এখানে থাকার জন্য ঘর পেয়েছেন গোসাইপুরের নুরজাহান (৫৫), মায়া বেগম (৪০) ও গবতলা গ্রামের আবদুল হালিম (৩৮)। তাঁরা আজকের পত্রিকাকে জানান, সরকার জমি ও ঘর তাঁদের সাফ কবলা দলিল করে দিয়েছে প্রায় তিন মাস আগে। কিন্তু আজও সে ঘরে এক ঘণ্টার জন্যও থাকতে পারেননি। নুরুল আমিন মিয়া নামের স্থানীয় এক প্রভাবশালী ব্যক্তি এই জায়গা নিজের বলে দাবি করেন। রাতের অন্ধকারে এখানকার স্যানিটারি ল্যাট্রিনের রিং ভেঙে ফেলা হয়েছে। বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য ব্যবহার করা বিভিন্ন উপকরণ ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। সরকারিভাবে জনস্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে কল বসানোর জন্য তিনবার এলেও নুরুল আমিনের লোকেদের বাধায় তারা টিউবওয়েল না বসিয়ে চলে যায়।

এই তিন ব্যক্তি দাবি করেন, নুরুল আমিন মিয়া এবং তাঁর স্ত্রী সব সময় হত্যার হুমকি দিয়ে আসছেন তাঁদের। ঘরে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়ার কথা বলেন। তাঁরা সরকারের দৃষ্টি ও সহযোগিতা কামনা করেন ঘরে ওঠার ব্যাপারে।

নুরুল আমিন মিয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের জায়গা নিজের দাবি করে আজকের পত্রিকাকে জানান, ১৯৮৪ সাল থেকে জায়গাটি তাঁর দখলে। ভাঙচুরের বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, টয়লেটের কিছু রিং বসানোর সময় ভেঙেছিল। তিনি এগুলো ভাঙেননি বলেও দাবি করেন। 

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানিয়া ভূঁইয়ার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, ‘আমি যোগদানের পরপরই শুনছি নিলক্ষীতে সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পে এক ব্যক্তি ঝামেলা করেন সব সময়, সরকারি কাজে বাধা দেন। এবার উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি, পল্লী বিদ্যুতের ডেপুটি ম্যানেজার, জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও সদর ইউপি চেয়ারম্যানের সমন্বয়ে কমিটি করে দেওয়া হয়েছে। যদি সরকারি কাজে বাধা প্রদান করা হয় আইনগতভাবে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত