স্যান্ডউইচ বিক্রেতা থেকে বলিউড ‘ট্র্যাজেডি কিং’, জন্মশতবর্ষে দিলীপ কুমার

বিনোদন ডেস্ক
আপডেট : ১১ ডিসেম্বর ২০২২, ১৯: ৪৫
Thumbnail image

কিংবদন্তি অভিনেতা দিলীপ কুমারের জন্ম ১৯২২ সালের ১১ ডিসেম্বর পাকিস্তানের পেশোয়ারে। অভিনয়ের কোনো প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণ ছিল না তাঁর। তবে তা মোটেও প্রভাব ফেলেনি ক্যারিয়ারে। যখন যে ভূমিকায়ই অভিনয় করেছেন, সেখানে চরিত্রের মধ্যে নিজেকে সম্পূর্ণ ডুবিয়ে দিয়েছেন। আজ কিংবদন্তি এই বলিউড অভিনেতার ১০০ তম জন্মদিন। বেঁচে থাকলে আজ তিনি শততম জন্মদিনের কেক কাটতেন। 

১৯৩০ এর শেষ দিকে দিলীপ কুমারের পুরো পরিবার মুম্বাইয়ে পাড়ি জমায়। দিলীপ কুমারের প্রাথমিক শিক্ষা জীবন শুরু হয় মুম্বাইয়ের দেওলিয়ার বার্নস স্কুলে। একদিন বাবার সঙ্গে অভিমান করে বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে পুনে চলে যান তিনি। সেখানেই এক পরিবারের সহায়তায় সেনাবাহিনী ক্লাবের পাশে স্যান্ডউইচের দোকান খোলেন তিনি। সেখানে তাঁর ব্যবসা রমরমা চলতে শুরু করে। সেখানে বেশ কিছু টাকা জমিয়ে তিনি বাড়ি ফেরেন। তখন পর্যন্ত তাঁর লক্ষ্য ছিল একজন সচ্ছল ব্যবসায়ী হওয়ার। 

 

 দিলীপ কুমার ১৯৫০ ও ৬০-এর দশকে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘দেবদাস’, ‘আন’, ‘আন্দাজ’, ‘কোহিনূর’, ‘ফুটপাথ’, ‘পয়গাম’, ‘মধুমতী’, ‘লিডার’ এবং ‘মুঘল-এ-আজম’ এর মতো বিখ্যাত সব ছবির মাধ্যমে বিপুল জনপ্রিয়তা ও সাফল্য লাভ করেন

১৯৫১ সালে মুক্তি পায় তাঁর রোমান্টিক চলচ্চিত্র পরিচালক নীতিন বোসের  ‘দিদার’। ওই ছবিতে দুর্দান্ত অভিনয়ের পর দিলীপ কুমার বোম্বে চলচ্চিত্রে ‘ট্র্যাজেডি কিং’ তকমা পান। তাঁর  অভিনয় জীবনে গুরুত্বপূর্ণ মোড় এনে দেয় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উপন্যাস ‘নৌকাডুবি’ অবলম্বনে তাঁর তৃতীয় সিনেমা ‘মিলন’। এই ছবির মাধ্যমে তিনি পরিচালক নীতিন বোসের সান্নিধ্যে আসেন। দিলীপ কুমার বলেছিলেন, ‘নীতিন বোস তাকে অভিনয়ের কলাকৌশল শিখিয়েছিলেন, শিখিয়েছিলেন কীভাবে কথা না বলেও আবেগ ও অনুভূতি প্রকাশ করতে হয়।’

দিলীপ কুমারের ক্যারিয়ারের মোড় ঘুরে যায় ১৯৬০ সালে ভারতীয় চলচ্চিত্র ইতিহাসের অন্যতম ব্যবসাসফল ও ঐতিহাসিক সিনেমা ‘মুঘল-এ-আজম’ এর মাধ্যমে। কে আসিফ পরিচালিত এই ছবিতে আরও অভিনয় করেছিলেন–পৃথ্বীরাজ কাপুর, মধুবালা এবং দুর্গা খোটে

 দিলীপ কুমার ১৯৬৬ সালে বিয়ে করেন তাঁর চেয়ে ২২ বছরের ছোট আরেক জনপ্রিয় অভিনেত্রী সায়রা বানুকে। ১৯৭০ সালে বাংলা ভাষায় তৈরি তপন সিংহ পরিচালিত ‘সাগিনা মাহাতো’তে একসঙ্গে অভিনয় করেছিলেন দিলীপ কুমার ও সায়রা বানু। ১৯৭৪ সালে তপন সিংহ একই সিনেমা তৈরি করেন হিন্দি ভাষায় ‘সাগিনা’ নাম দিয়ে। এই সিনেমাতেও নায়ক–নায়িকা চরিত্রে অভিনয় করেন দিলীপ কুমার ও সায়রা বানু

দিলীপ কুমারকে হিন্দি চলচ্চিত্রের ইতিহাসে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ অভিনেতাদের একজন হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ভারতীয় অভিনেতা হিসেবে সর্বোচ্চ সংখ্যক পুরস্কার বিজয়ী হওয়ায় তাঁর নাম গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে জায়গা করে নেয়। ১৯৯৭ সালে দিলীপ কুমারকে পাকিস্তানের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘নিশান-ই-ইমতিয়াজ’-এ ভূষিত করা হয়। ১৯৯১ সালে পদ্মভূষণ ও ২০১৫ সালে ভারত সরকার তাঁকে পদ্মবিভূষণ সম্মানে ভূষিত করে

বার্ধক্যজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ২০২১ সালের ৭ জুলাই ৯৮ বছর বয়সে ভারতের মুম্বাইয়ের একটি হাসপাতালে মারা যান এই কিংবদন্তি

 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত