Ajker Patrika

সবচেয়ে বেশি গরমের বছর হতে পারে ২০২৩ সাল

আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২২, ১৯: ২৮
সবচেয়ে বেশি গরমের বছর হতে পারে ২০২৩ সাল

আগামী বছর পৃথিবীর তাপমাত্রা নতুন রেকর্ড গড়তে পারে বলে পূর্বাভাসে জানিয়েছে যুক্তরাজ্যের আবহাওয়া অফিস। পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালে পৃথিবীর তাপমাত্রা ১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি বাড়বে।

বৈজ্ঞানিক উপাত্ত বিশ্লেষণ করে বলা হয়েছে, মানুষের নানা কর্মতৎপরতার কারণে বৈশ্বিক উষ্ণতা বাড়ছে। ২০২৩ সালে গড় তাপমাত্রা ১ দশমিক ০৮ থেকে ১ দশমিক ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বাড়তে পারে। 

যদি যুক্তরাজ্যের আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস সত্য হয় তাহলে, ১৮৫০–১৯০০ সাল পর্যন্ত পরিমাপ করা শিল্প–বিপ্লব পূর্ব সময়ের তাপমাত্রার চেয়ে আগামী বছর গড় বৈশ্বিক তাপমাত্রা টানা দশম বছরের মতো কমপক্ষে ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি থাকবে। 

বৈশ্বিক তাপমাত্রা প্রথম রেকর্ডের সাল ১৮৫০–এর পর উষ্ণতম বছরটি গেছে ২০১৬ সাল। এ বছর প্রশান্ত মহাসাগরে ‘এল নিনো’ প্রভাব দেখা গিয়েছিল। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির জন্য এটিই দায়ী বলে মনে করেন গবেষকেরা। 

এল নিনো হলো গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলের সামুদ্রিক পর্যাবৃত্ত পরিবর্তন। যখন তাহিতি এবং ডারউইনে অস্ট্রেলিয়ার বায়ুমণ্ডলে চাপের পরিবর্তন হয় এবং যখন পেরু ও ইকুয়েডরের পশ্চিম উপকূল থেকে অস্বাভাবিক গরম অথবা ঠান্ডা সামুদ্রিক অবস্থা বিরাজ করে— এই পর্যায়বৃত্তের উষ্ণ পর্যায় হলো এল নিনো, আর লা নিনা হচ্ছে শীতল পর্যায়। পর্যায়বৃত্ত এই পরিবর্তনের কোনো নির্দিষ্ট সময় নেই, তবে প্রতি তিন থেকে আট বছরের মাঝে দেখা যায়। 

এল নিনোর প্রভাবে বন্যা, খরা এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাড়ে। বিশেষ করে উন্নয়নশীল যেসব দেশ কৃষি এবং মাছ ধরার ওপর নির্ভরশীল, তারাই এল নিনোর প্রভাবে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

যুক্তরাজ্যের আবহাওয়া অফিস বলছে, ‘লা নিনা’–এর প্রভাব তিন বছর পর প্রাকৃতিক নিয়মে শেষ হয়ে যায়। ফলে শীতের মাত্রা কমে গিয়ে পৃথিবীর উষ্ণতা বাড়ে। এর ফলে মানুষ যেমন আক্রান্ত হবে তেমনি জলবায়ুতে বড় প্রভাবে পড়বে। লা নিনার ফলে পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরের উপকূল বরাবর দক্ষিণ থেকে উত্তর দিকে স্বাভাবিকের থেকে শীতল সমুদ্র স্রোতের প্রবাহ লক্ষ্য করা যায়। 

আবহাওয়া অফিসের ২০২৩ সালের বৈশ্বিক তাপমাত্রা পূর্বাভাসের নেতৃত্ব দিয়েছেন ড. নিক ডানস্টোন। তিনি বলেন, ‘গত তিন বছর বৈশ্বিক তাপমাত্রায় দীর্ঘায়িত লা নিনার প্রভাব পড়েছে—যা গ্রীষ্মমণ্ডলীয় প্রশান্ত মহাসাগরে সমুদ্রপৃষ্ঠের গড় তাপমাত্রার চেয়ে শীতল। লা নিনার বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রার ওপর একটি অস্থায়ী শীতল প্রভাব রয়েছে।’ 

তবে তিনি যোগ করেন, ‘আগামী বছরের জন্য আমাদের জলবায়ু মডেলটি টানা তিন বছর লা নিনা প্রভাবের সমাপ্তির ইঙ্গিত দিচ্ছে। গ্রীষ্মমণ্ডলীয় প্রশান্ত মহাসাগরের কিছু অংশে আপেক্ষিক উষ্ণ পরিস্থিতিতে ফিরে আসবে। এই পরিবর্তনের কারণে সম্ভবত ২০২৩ সালে বৈশ্বিক তাপমাত্রা ২০২২–এর চেয়ে উষ্ণ হতে পারে।’ 

এ কারণে যুক্তরাজ্যের আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস বিভাগের প্রধান অধ্যাপক অ্যাডাম স্কাইফ বলেছেন, ‘এল নিনো ছাড়া ২০২৩ সাল রেকর্ড-ব্রেকিং বছর নাও হতে পারে।’ 

এদিকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার গড় বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন। সর্বশেষ গ্লাসগোতে অনুষ্ঠিত কপ–২৬ শীর্ষ সম্মেলনে বিশ্বনেতারা সেই প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। 

ব্রিটিশ আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস দিচ্ছে, বৈশ্বিক তাপমাত্রা উনিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধের চেয়ে ১ দশমিক ০৮ থেকে ১ দশমিক ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়বে। 

যেখানে গত বছর আবহাওয়া অফিস ভবিষ্যদ্বাণী করেছিল যে,২০২২ সালের বৈশ্বিক তাপমাত্রা প্রাক–শিল্প যুগের চেয়ে দশমিক ৯৭ সেলসিয়াস থেকে ১ দশমিক ২১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়বে। যদিও ওই বছরের অক্টোবরের তথ্য–উপাত্ত থেকে জানা যায়, তাপমাত্রা প্রাক-শিল্প যুগের থেকে প্রায় ১ দশমিক ১৬ সেলসিয়াস বেশি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বৈশাখী মেলার নাগরদোলায় চড়িয়ে অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যা

জেলা প্রশাসনের আনন্দ শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়া সেই আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেপ্তার

এশিয়ার সেরা সুপ্ত সম্ভাবনা বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাত, বিপুল বিনিয়োগের সুযোগ

ডিবিপ্রধানকে সরানোর সঙ্গে মডেল মেঘনার ঘটনার সম্পর্ক নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

ঢাকায় এসে ২০ জুলাইযোদ্ধার দৃষ্টিশক্তি ফেরালেন ব্রিটিশ চিকিৎসকেরা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত