Ajker Patrika

সাগরের ২ হাজার ৪০০ মিটার নিচে মিলল বিশাল ডুবো পর্বত

আপডেট : ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৭: ০৪
সাগরের ২ হাজার ৪০০ মিটার নিচে মিলল বিশাল ডুবো পর্বত

সাগরতলে বিশাল এক ডুবো পর্বতের সন্ধান মিলেছে। গুয়াতেমালা উপকূলের প্রশান্ত মহাসাগরে এই পর্বতটির খোঁজ পান বিজ্ঞানীরা। পুরোনো কোনো একটি আগ্নেয়গিরির অবশিষ্টাংশ বলে ধারণা করা হচ্ছে পর্বতটিকে। সাগরতলের বেশির ভাগ পর্বতের উৎপত্তিই এভাবে। 

সাগর নিয়ে গবেষণা করা অলাভজনক সংস্থা শ্মিট ওশান ইনস্টিটিউট এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায় পর্বতটির উচ্চতা ১ হাজার ৬০০ মিটার (৫ হাজার ২৪৯ ফুট)। অর্থাৎ পৃথিবীর সবচেয়ে লম্বা দালান বুর্জ খলিফার দ্বিগুণ পর্বতটির উচ্চতা। সাগর সম্পর্কে আরও জানার অংশ হিসেবে সংস্থাটির জুলাইয়ের এক অভিযানে পর্বতটির খোঁজ মেলে। ১৪ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে থাকা পর্বতটি সাগরপৃষ্ঠের ২ হাজার ৪০০ মিটার (৭ হাজার ৮৭৪ ফুট) নিচে।

গবেষণার কাজে ব্যবহৃত জাহাজ ফেলকরের সাহায্যে এই অভিযান পরিচালিত হয়। জাহাজটি ইকোসাউন্ডার ব্যবহার করে সমুদ্রের তলে অনুসন্ধান চালাতে সক্ষম। এটি সমুদ্রের তলদেশে শব্দ তরঙ্গ পাঠায়, সেটি সেখানে পৌঁছতে এবং ফিরে আসতে যে সময় লাগে তা পরিমাপ করে।

শ্মিট ওশান ইনস্টিটিউটের হাইড্রোগ্রাফার এবং মেরিন টেকনিশিয়ান টমার কেটার ওই জাহাজে ছিলেন। কেটার নিশ্চিত করেছেন যে সমুদ্রের গভীরতা পরিমাপকারী কোনো ডেটাবেইসে এই পর্বতটির উল্লেখ নেই।

‘দেড় কিলোমিটারেরও বেশি উচ্চতার একটি পর্বত, যেটি এত দিন ঢেউয়ের নিচে লুকিয়ে থাকা নিশ্চিত করে এখনো কত কিছু আমাদের আবিষ্কারের বাকি’, বলেন শ্মিট ওশান ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. জ্যোতিকা বিরমানি বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, ‘সম্পূর্ণ সমুদ্রতলের একটি মানচিত্র হলো আমাদের মহাসাগর বোঝার একটি মৌলিক উপাদান। তাই এমন একটি যুগে বসবাস করা উত্তেজনাপূর্ণ, যেখানে প্রযুক্তি আমাদের গ্রহের এই আশ্চর্যজনক অংশগুলোর মানচিত্র তৈরি করতে ও দেখতে সাহায্য করে।’

গুয়াতেমালার বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের ৮৪ নটিক্যাল মাইল দূরে আবিষ্কৃত হলো পর্বতটি। অনুমান করা হয় পৃথিবীতে এক হাজার মিটারের (৩ হাজার ২৮০ ফুট) বেশি উচ্চতার এক লাখের বেশি পর্বত আছে। সাগর, আবহাওয়া ও জলবায়ু নিয়ে কাজ করা মার্কিন সংস্থা ন্যাশনাল ওশানিক অ্যান্ড এটমসফোরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এনওএএ) মতে, এগুলোর ১০ ভাগের এক ভাগেও অনুসন্ধান চালানো যায়নি এখনো। 

ই-মেইলে ইউনিভার্সিটি অব হাওয়াইয়ের অধ্যাপক লেস ওয়াটলিং জানান, সাগরতলের পর্বতগুলোতে সাম্প্রতিক সময়ে অনুসন্ধান চালানো সম্ভব হয়েছে। এর কারণ মানুষসহ সাবমারসিবল (বড় কোনো মাদার শিপ থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হয় এমন খুদে জলযান) এবং দূরনিয়ন্ত্রিত যানের উন্নয়ন। 

লেস ওয়াটলিং আরও জানান, যেসব পর্বত মানচিত্রে স্থান পায়নি কিংবা যেখানে অনুসন্ধান চালানো হয়নি, সেগুলো কোথায় থাকতে পারে সে সম্পর্কেও ধারণা আছে গবেষকদের। স্যাটেলাইট রাডার অল্টিমিটার সমুদ্রের উচ্চতায় সামান্য পার্থক্য শনাক্ত করতে সক্ষম। সাধারণত একটি পর্বতের ওপরে সাগরপৃষ্ঠ কিছুটা স্ফীত অবস্থায় থাকে। যা সাগর তলের পর্বত শনাক্তে সাহায্য করে।

কেটার জানান, যেখানে এবারের পর্বতটিকে শনাক্ত করা হয়েছে এর মোটামুটি ১১ কিলোমিটার দূরে স্যাটেলাইট আল্টিমিটার একটি পর্বতের উপস্থিতির ইঙ্গিত দেয়। সম্ভবত এটাই সাম্প্রতিক আবিষ্কৃত পর্বতটি। তবে বিভিন্ন কারণে পর্বতের যে অবস্থান দেখানো হয় তাতে বিচ্যুতি থাকতে পারে। পর্বতটি মানচিত্র আগে করা সম্ভব হয়নি, শুধু স্যাটেলাইট ডেটা থেকে এর অবস্থানের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল।

গবেষণার কাজে ব্যবহার করা হয়, এমন একটি জাহাজের সাহায্যে এই অভিযান পরিচালিত হয়। ছবি: শ্মিট ওশান ইনস্টিটিউট নতুন আবিষ্কৃত পর্বতটি পৃথিবীর উচ্চতম দালান থেকে অনেক উঁচু হলেও সাগরের নিচে চার হাজার মিটারের বেশি উচ্চতার পর্বতও আছে।

পর্বতগুলোর ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে এগুলো সাগরতলের জীববৈচিত্র্যের একটি বড় আশ্রয়স্থল। এখানকার শক্ত জমিতে প্রবাল, স্পঞ্জ এবং অন্যান্য সামুদ্রিক অমেরুদণ্ডী প্রাণী ঝুলে বা আঁকড়ে থাকতে পারে।

গবেষকদের অনুমান শুধু সাগরে নির্দিষ্ট অঞ্চলে বসবাসকারী প্রাণীদের মধ্যে ১৫ থেকে ৩৫ শতাংশের বাস সাগরতলের পর্বতের বাস্তুতন্ত্রে। এ ছাড়া অস্থায়ীভাবে থাকা প্রাণীরাও খাওয়া, আশ্রয় এবং বংশবিস্তারের প্রয়োজনে এগুলোকে ব্যবহার করে।

‘সাগরতলের এসব পর্বতে জীববৈচিত্র্যের অভাবনীয় উপস্থিতির বিষয়টি সম্পর্কে তুলনামূলক সাম্প্রতিক সময়ে জানা গেছে,’ বলেন দ্য সাইলেন্ট ডিপ: ডিসকভারি, ইকোলজি অ্যান্ড কনজারভেশন অব দ্য ডিপ সি বইয়ের লেখক কসলো, ‘সম্ভবত এই আবিষ্কারের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক হলো, এটি নিশ্চিত করে সমুদ্রতলের ভালো মানচিত্র এখন পর্যন্ত করা সম্ভব হয়নি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

আজ ঢাকার আবহাওয়া কেমন থাকবে জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

রাজধানী ঢাকায় আজ শুক্রবার সকালে তাপমাত্রা ছিল ১৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দুপুর পর্যন্ত আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে।

আজ সকাল ৭টায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার পূর্বাভাসে এ কথা বলা হয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ সকাল ৬টায় ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৮৬ শতাংশ।

পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে, ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় দুপুর পর্যন্ত আবহাওয়া থাকতে পারে শুষ্ক। তবে আকাশ আংশিক মেঘলা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময় উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১২ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়েছে, আজ সূর্যাস্ত ৫টা ১৫ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ৬টা ৩৬ মিনিটে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন: দক্ষিণ এশিয়ায় বায়ুদূষণে বছরে প্রাণ হারাচ্ছে ১০ লাখ মানুষ

  • ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলের মধ্যে আছে বাংলাদেশও
  • অস্বাস্থ্যকর বায়ুতে শ্বাস নিচ্ছে কোটি কোটি মানুষ
  • ক্ষতি হচ্ছে জিডিপির ১০ শতাংশের সমপরিমাণ
‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

দক্ষিণ এশিয়ার গাঙ্গেয় সমভূমি ও হিমালয়ের পাদদেশ (আইজিপি-এইচএফ) অঞ্চলের প্রায় ১০০ কোটি মানুষ নিয়মিত অস্বাস্থ্যকর বায়ুতে শ্বাস নিচ্ছে। এতে বছরে এই অঞ্চলের প্রায় ১০ লাখ মানুষ অকালে প্রাণ হারাচ্ছে। বায়ুদূষণের ফলে অঞ্চলটির অর্থনীতিতে বছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ১০ শতাংশের সমপরিমাণ ক্ষতি হচ্ছে। এই দূষণের ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশও।

বিশ্বব্যাংকের ‘এ ব্রেথ অব চেঞ্জ: সলিউশনস ফর ক্লিনার এয়ার ইন দ্য ইন্দো-গেঞ্জেটিক প্লেইনস অ্যান্ড হিমালয়ান ফুটহিলস’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। সংস্থাটির ঢাকা অফিস থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।

বিশ্বব্যাংকের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আইজিপি-এইচএফ অঞ্চলে বায়ুদূষণ এখনো অন্যতম বড় উন্নয়ন চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে। সমন্বিত ও বাস্তবভিত্তিক কিছু পদক্ষেপ নিলে দূষণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব। এতে একই সঙ্গে জনস্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দুটোরই উন্নতি হবে।

গাঙ্গেয় সমভূমি ও হিমালয়ের পাদদেশ অঞ্চলের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, পাকিস্তান ও ভুটানের অংশবিশেষ। প্রতিবেদনে বলা হয়, এ অঞ্চলের বায়ুদূষণের প্রধান পাঁচটি উৎস রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে রান্না ও ঘর গরম করার কাজে লাকড়িজাতীয় কঠিন বস্তু ব্যবহার, শিল্পকারখানায় জীবাশ্ম জ্বালানি (তেল, গ্যাস, কয়লা) ও বায়োম্যাসের ফিল্টার ছাড়া অদক্ষ ব্যবহার, অনুন্নত প্রযুক্তির ইঞ্জিনের যানবাহন চালানো, কৃষকদের খেতের ফসলের অবশিষ্টাংশ পোড়ানো এবং রাসায়নিক সার ও গোবরের অদক্ষ ব্যবস্থাপনা এবং গৃহস্থালি ও কারখানার বর্জ্য পোড়ানো।

দূষণ কমাতে কয়েকটি তুলনামূলকভাবে সহজে বাস্তবায়নযোগ্য কৌশলের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে। এগুলো হলো–বৈদ্যুতিক চুলায় রান্না, শিল্পকারখানার বয়লার, ফার্নেস ও ইটভাটার আধুনিকায়ন, নন-মোটরাইজড ও বৈদ্যুতিক পরিবহনব্যবস্থার প্রসার, কৃষিবর্জ্য ও পশুবর্জ্যের উন্নত ব্যবস্থাপনা এবং বর্জ্য পৃথক্‌করণ ও পুনর্ব্যবহারের ওপর জোর দেওয়া।

প্রতিবেদনে নির্মল বায়ু নিশ্চিত করার কৌশলকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। ১. দূষণের উৎসেই নির্গমন কমানোর ব্যবস্থা। ২. স্বাস্থ্য ও শিক্ষাব্যবস্থা শক্তিশালী করে শিশু ও ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দেওয়া। ৩. কার্যকর আইন, বাজারভিত্তিক প্রণোদনা ও আঞ্চলিক সহযোগিতার মাধ্যমে শক্তিশালী প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো গড়ে তোলা।

বিশ্বব্যাংকের জ্যেষ্ঠ পরিবেশ অর্থনীতিবিদ মার্টিন হেগার বলেন, ‘নির্মল বায়ু নিশ্চিত করার সমাধানগুলো বাস্তবসম্মত ও কার্যকর। নীতিনির্ধারকদের জন্য এটি একটি স্পষ্ট রোডম্যাপ দেয়। একই সঙ্গে দক্ষিণ এশিয়ার পরিবার, কৃষক ও উদ্যোক্তাদের জন্য পরিচ্ছন্ন প্রযুক্তি ব্যবহারে আর্থিক ও অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক সুযোগ তৈরি করে।’

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নির্মল বায়ু নিশ্চিত করতে ‘চারটি আই’ (ইংরেজি আদ্যক্ষর)—তথ্য, প্রণোদনা, প্রতিষ্ঠান এবং অবকাঠামোর ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। নির্ভরযোগ্য তথ্যভিত্তিক পরিকল্পনা, পরিচ্ছন্ন বিকল্পে বিনিয়োগে প্রণোদনা, কার্যকর প্রতিষ্ঠান এবং পরিচ্ছন্ন জ্বালানি ও পরিবহন অবকাঠামো গড়ে তোলাই এই রূপান্তরের মূল চাবিকাঠি।

বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের পরিবেশবিষয়ক প্র্যাকটিস ম্যানেজার অ্যান জিনেট গ্লাউবার বলেন, স্থানীয় থেকে আঞ্চলিক পর্যায় পর্যন্ত সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া নির্মল বায়ু অর্জন সম্ভব নয়। সরকারগুলো একসঙ্গে কাজ করলেই কেবল দূষণ কমানো, লাখো মানুষের জীবন রক্ষা এবং সবার জন্য নিরাপদ বায়ু নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ঢাকার বাতাস সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর, আজও দূষণে শীর্ষে দিল্লি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০: ০২
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

বেশ কিছুদিন ধরে দিল্লির বাতাসের অবস্থা দুর্যোগপূর্ণ। আজ বৃহস্পতিবার দূষিত শহরের তালিকার শীর্ষে রয়েছে শহরটি। অন্যদিকে ঢাকার বায়ুমান আজ সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর।

সুইজারল্যান্ডভিত্তিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা আইকিউএয়ারের তথ্য অনুযায়ী, আজ বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকার ১২৭টি দেশের মধ্যে সপ্তম স্থানে রয়েছে ঢাকা।

আইকিউএয়ারের সকাল ৮টা ৩০ মিনিটের রেকর্ড অনুযায়ী, ঢাকার এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স স্কোর ১৯০। যা নির্দেশ করে ঢাকার বাতাসের অবস্থা সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর।

ঢাকার বেশ কিছু স্থানের বাতাসের অবস্থা সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর থেকে খুব অস্বাস্থ্যকর। এর মধ্যে রয়েছে— কল্যাণপুর (২৬০), দক্ষিণ পল্লবী (২৫৬), বেজ এজওয়াটার আউটডোর (১৯৬), গোড়ান (১৯৬) ও বেচারাম দেউরি (১৯০)।

অন্যদিকে দীর্ঘদিন ধরেই দূষিত বায়ুর শহরের তালিকায় শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে দিল্লি। শহরটির একিউআই স্কোর ৩১০। যা এই শহরের বাতাসকে ‘দুর্যোগপূর্ণ’ হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করেছে।

তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে পাকিস্তানের লাহোর (২৭০, খুব অস্বাস্থ্যকর), তৃতীয় স্থানে বসনিয়া-হার্জেগোভিনার সারাজেভ (২২৭, খুব অস্বাস্থ্যকর), চতুর্থ স্থানে রয়েছে পাকিস্তানের করাচি (২০১, খুব অস্বাস্থ্যকর) এবং পঞ্চম স্থানে রয়েছে মিসরের কায়রো (১৯৪, সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর)।

বাতাসের গুণমান সূচকের (একিউআই) মাধ্যমে দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করে নিয়মিত বায়ু পরিস্থিতি তুলে ধরে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। তাদের তালিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকার বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণাই দূষণের প্রধান উৎস। বেশিমাত্রার দূষণ শ্বাসতন্ত্রের রোগ, হৃদ্‌রোগ এবং দীর্ঘ মেয়াদে ক্যানসারের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।

বাতাসের মূল ক্ষতিকারক উপাদান হলো ক্ষুদ্র বস্তুকণা বা পিএম ২.৫। এটি এতই সূক্ষ্ম যে তা ফুসফুসে এমনকি রক্তপ্রবাহেও প্রবেশ করতে পারে।

বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুযায়ী, বায়ুমান সূচক ৫০-এর নিচে থাকলে বিশুদ্ধ বাতাস ধরা হয়। ৫১-১০০ হলে তা সহনীয়। ১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে হলে সতর্কতামূলক বা সংবেদনশীল মানুষের (শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি) জন্য অস্বাস্থ্যকর। ১৫১-২০০ হলে সবার জন্য অস্বাস্থ্যকর এবং সূচক ২০১ থেকে ৩০০ হলে বাতাসকে খুব অস্বাস্থ্যকর বলা হয়। আর সূচক ৩০০ ছাড়ালে সেই বাতাস দুর্যোগপূর্ণ।

বায়ুদূষণজনিত স্বাস্থ্য সমস্যায় প্রতিবছর বহু মানুষ মারা যায়। জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বায়ুদূষণ প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৫২ লাখ মানুষের মৃত্যুর কারণ বলে ২০২৩ সালের নভেম্বরে ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে (বিএমজে) প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় তুলে ধরা হয়।

এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গৃহস্থালি ও পারিপার্শ্বিক বায়ুদূষণের সম্মিলিত প্রভাবে বছরে ৬৭ লাখ মানুষ মারা যায়।

দীর্ঘদিন ঢাকার বাতাস অতিমাত্রায় দূষিত হওয়ায় বাইরে বের হলে সবাইকে মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া সংবেদনশীল ব্যক্তিদের অতি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না যাওয়ার অনুরোধও করা হয়েছে।

পাশাপাশি ইটভাটা, শিল্পকারখানার মালিক এবং সাধারণ মানুষকে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো বন্ধ রাখা, নির্মাণস্থলে ছাউনি ও বেষ্টনী স্থাপন করা, নির্মাণসামগ্রী ঢেকে রাখা, নির্মাণসামগ্রী পরিবহনের সময় ট্রাক বা লরি ঢেকে নেওয়া, নির্মাণস্থলের আশপাশে দিনে অন্তত দুবার পানি ছিটানো এবং পুরোনো ও ধোঁয়া তৈরি করা যানবাহন রাস্তায় বের না করতে বলা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বেড়েছে ঢাকার তাপমাত্রা, জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

পৌষ মাসের তৃতীয় দিন আজ। শীতের মৌসুম চলে এলেও রাজধানী ঢাকায় বাড়ছে তাপমাত্রা। আজ বৃহস্পতিবার সকালের আবহাওয়া বুলেটিনে দেখা যায়, গতকালের তুলনায় আজ সকালে তাপমাত্রা কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ সকাল ৬টায় ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গতকাল মঙ্গলবার ছিল ১৬ দশমিক ৬। এ সময় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৮৯ শতাংশ।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের সকাল ৭টায় পরবর্তী ছয় ঘণ্টার জন্য ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় দুপুর পর্যন্ত আবহাওয়া থাকতে পারে শুষ্ক। তবে আকাশ আংশিক মেঘলা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময় উত্তর অথবা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৬ থেকে ১০ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে। দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

পূর্বাভাসে আরও জানানো হয়েছে, আজ সূর্যাস্ত ৫টা ১৫ মিনিটে এবং আগামীকাল সূর্যোদয় ৬টা ৩৬ মিনিটে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত