স্মৃতিতে শ্রদ্ধায় সালাহউদ্দীন জাকী

বিনোদন ডেস্ক
Thumbnail image

১৮ সেপ্টেম্বর রাত ১১টা ৫৩ মিনিটে চলে গেলেন ‘ঘুড্ডি’খ্যাত নির্মাতা সৈয়দ সালাহউদ্দীন জাকী। নির্মাতা ছাড়াও তিনি ছিলেন অনেক সিনেমার কাহিনিকার, সংলাপ রচয়িতা ও চিত্রনাট্যকার। করেছেন প্রযোজনা। শিল্পের সঙ্গেই কাটিয়েছেন সারাটা জীবন। জাকীর প্রথম সিনেমা ‘ঘুড্ডি’তে অভিনয় করেছিলেন রাইসুল ইসলাম আসাদ ও সুবর্ণা মুস্তাফা। প্রিয় নির্মাতার প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি জানালেন তাঁরা।

সালাহউদ্দিন জাকী ভাইকে নিয়ে বলে কী শেষ করা যাবে? কখনোই না। তিনি ছিলেন আপাদমস্তক শিল্পভাবনার মানুষ। শিল্পের প্রতি তাঁর ভালোবাসা তুলনাহীন। তাঁর ভাবনায় কেবলই ছিল সিনেমা, নাটক, শিল্প। তাঁর সঙ্গে প্রায় ৫০-৫২ বছরের পরিচয়, মেলামেশা, কাজ। সোজা কথায়, আমি তাঁর অ্যাসিস্ট্যান্ট। একসঙ্গে একাধিক সিনেমায় কাজ করেছি, থিয়েটার করেছি, চলচ্চিত্র ও সংস্কৃতিসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠনের কাজ করেছি। প্রায়ই দেখা হতো তাঁর সঙ্গে, কথা হতো। এই তো কয়েক দিন আগেই শেষ দেখা হয়েছিল। তিনি অনেক দিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন। স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারতেন না। তবে গতকাল (মঙ্গলবার) দিনভর সুস্থই ছিলেন। রাতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লেন। আর ফিরলেন না।

রাইসুল ইসলাম আসাদ

জাকী ভাই না থাকলে আমার হয়তো অভিনয়ই করা হতো না।

ঢাকা থিয়েটার করার আগে নাট্যচক্র, ড্রামা সার্কেলে জাকী ভাইয়ের সঙ্গে অনেক স্মৃতি আছে। সবকিছু আজ চোখের সামনে ভাসছে। সবচেয়ে বেশি স্মৃতি ঢাকা থিয়েটারে। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তাঁর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। পরিচয়ও মুক্তিযুদ্ধের সময়টায়। দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭৩ সাল থেকে আমরা একসঙ্গে ঢাকা থিয়েটারের হয়ে বছরের পর বছর পার করেছি। ঢাকা থিয়েটার করতে গিয়ে তাঁকে চিনেছি, বুঝেছি, তাঁর কাছ থেকে শিখেছি।

জাকী ভাইয়ের অন্যতম সেরা চলচ্চিত্র ‘ঘুড্ডি’, যা একটি অনন্য চলচ্চিত্র। ঘুড্ডিতে আমি ও সুবর্ণা মুস্তাফা একসঙ্গে অভিনয় করি। সিনেমাটি সুপার হিট হয়। অভিনয় ছাড়াও আমি তাঁর সঙ্গে সহকারী হিসেবে কাজ করেছি অনেক দিন। অভিনয় না করলেও তাঁর সহকারী হিসেবে থাকা হতো।

সুবর্ণা মুস্তাফা

আবার অভিভাবকশূন্য হলাম আমরা।

আমার তো অভিনয়ই করার কথা ছিল না। সবকিছু সম্ভব হয়েছে জাকী ভাইয়ের জন্য। তিনি আমাকে দিয়ে অভিনয় করিয়ে নিয়েছেন। তাঁর জন্যই আমাকে অভিনয় করতে হয়েছে। সে জন্য মাঝে মাঝে ভাবি, জাকী ভাই না থাকলে আমার হয়তো অভিনয়ই করা হতো না। আমার অভিনেতা হওয়ার পেছনে যাঁদের অবদান বেশি, তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন জাকী ভাই। তাঁর কথা ভুলব কেমন করে?

১৩ সেপ্টেম্বর রাতেও কথা হলো। তখন বুঝিনি এটাই শেষবার। ক্ষমা করে দিয়েন জাকী ভাই, কিছুই করা হয়নি আপনার জন্য। আমি কেবল গ্রহণই করেছি আপনার আদর, আপনার ভালোবাসা, শিক্ষা। আবার অভিভাবকশূন্য হলাম আমরা। অনেক ভালোবাসি আপনাকে। শান্তিতে ঘুমান আপনি। পরম শ্রদ্ধা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত