শিশুদের জন্য বিভীষিকার বছর

সোহেল মারমা, চট্টগ্রাম
আপডেট : ০১ জানুয়ারি ২০২৩, ১৫: ৩৮
Thumbnail image

চট্টগ্রামে বিদায়ী বছর শিশুদের জন্য ছিল বিভীষিকাময়। বছরের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সময়গুলো শোকে কেটেছে। আলিনা, বর্ষা, সুরমাদের মতো অনেকেরই অকালে প্রাণ গেছে ঘাতকের হাতে। নতুন বছরে পা রেখে সবাই প্রত্যাশা করছেন, পেছনে ফেলে আসা এমন বছর যেন আর কখনো ফিরে না আসে।

গত ১৫ নভেম্বর আলিনা ইসলাম আয়াত নামে পাঁচ বছরের এক শিশুকে নৃশংসভাবে খুনের ঘটনা ঘটে। অপহরণের পর তাঁকে কেটে ৬ টুকরো করে পানিতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনার দিন একা বাসা থেকে বেরিয়ে স্থানীয় মক্তবে যাওয়ার সময় নিখোঁজ হয় আয়াত।

পরে পরিচিত তরুণ আবির আলিকে (১৯) গ্রেপ্তার করার পর আয়াতকে অপহরণ ও নৃশংসভাবে খুনের বিষয়টি বেরিয়ে আসে। নিহত শিশু আসামি আবিরকে চাচ্চু বলে সম্বোধন করত। আয়াতের নানার বাসার ভাড়াটিয়া ছিল আবির। আসামির স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, মুক্তিপণ দাবির জন্য আয়াতকে অপহরণ করা হয়েছিল। পরে পরিকল্পনামতো কাজ না হওয়ায় তাকে হত্যা করে ছয় টুকরো করে নালায় ও সাগর ভাসিয়ে দেওয়া হয়।

পুলিশের তদন্ত ব্যুরো (পিবিআই) অভিযান চালিয়ে শিশুটির দেহের দুটি খণ্ডাংশ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। বাকি খণ্ডাংশ এখনো উদ্ধার হয়নি। এ মামলায় পিবিআই মূল আসামি আবিরসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে। মামলাটির তদন্ত চলমান রয়েছে।

এর আগে গত ২৪ অক্টোবর নগরীর কোতোয়ালি থানার জামালখান এলাকায় মারজানা হক বর্ষা নামের সাত বছরের আরেক কন্যাশিশু নিখোঁজ হয়। শিশুটি দোকান থেকে বিস্কুট কিনতে গিয়ে বাসায় আর ফিরতে পারেনি। ২৭ অক্টোবর স্থানীয় একটি নালায় শিশুটির বস্তাবন্দী লাশ পাওয়া যায়।

ওই ঘটনায় লক্ষণ দাশ (২৮) নামের এক দোকান কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার ব্যক্তি শিশুটিকে ধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ বস্তাবন্দী করে নালায় ফেলে দেয়। নিহত বর্ষা নগরীর কুসুমকুমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির ছাত্রী। তাঁর বাবা আব্দুল হক মারা গেছেন। মা ঝর্না বেগম ও সৎ বাবা মোহাম্মদ ইউছুপের সঙ্গে ব্রিজ গলির বাসায় থাকতেন।

১৮ সেপ্টেম্বর দুপুরে বন্দর থানা এলাকায় সরকারি একটি পরিত্যক্ত বাসা থেকে ৭ বছর বয়সী ঘর থেকে সুরমা আক্তারের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। আগের দিন থেকে ওই শিশুটি নিখোঁজ ছিল। পুলিশ ১২ অক্টোবর ওসমান হারুন মিন্টু নামে এক রিকশাচালককে গ্রেপ্তার করে।

নগরীর বাইরে উপজেলা হাটহাজারীতে ওয়ালিদ নামের তিন বছরের আরেক শিশু নৃশংসভাবে খুন হয় গত ১৮ জুন।

এ ছাড়া চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) এ এস এম মাহাতাব উদ্দিন বলেন, ‘শিশুরা মূলত নিকটতম লোকজনদের হাতেই নির্যাতন কিংবা হত্যাকাণ্ডের শিকার হচ্ছে। এটা সামাজিক ব্যাধি ও অপরাধ। এটা দূর করতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত