বিভাগীয় শহরে পরীক্ষার দাবি

রাজশাহী প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৬ জুলাই ২০২২, ০৬: ৪২
আপডেট : ২৬ জুলাই ২০২২, ১৫: ২৭

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ২০২১-২২ সেশনের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়েছে। এসেছেন ১ লাখ ৭৮ হাজার পরীক্ষার্থী। সঙ্গে এক বা একাধিক অভিভাবক। ছোট্ট শহরটিতে এখন বাড়তি কমপক্ষে ৩ লাখের বেশি মানুষের চাপ। থাকা, খাওয়া, যাতায়াতসহ সবখানেই ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে তাঁদের।

অভিভাবকেরা তাই বিভাগীয় পর্যায়ে এই পরীক্ষা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছেন। এতে সময় ও অর্থ সাশ্রয় এবং ভোগান্তি লাঘব হবে বলে মনে করছেন তাঁরা। গতকাল সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার জন্য আসা অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বললে এমন চাওয়ার কথাই জানিয়েছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, এটি করতে পারলে আসলেই ভালো হয়। বিষয়টি তারা বিবেচনায় নিয়েছেন। পরীক্ষায় শতভাগ স্বচ্ছতার নিশ্চয়তা পেলেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

গতকাল সোমবার সিলেট থেকে পরীক্ষার্থীর সঙ্গে আসা অভিভাবক মহেদ্রনাথ অধিকারীর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কথা হয়। তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো যদি বিভাগীয় শহরগুলোতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হতো তবে ভোগান্তি অনেকটা লাঘব হতো।

ঢাকা থেকে আসা আরেক অভিভাবক শিউলি বেগম বলেন, ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতায়াতে খুবই ভোগান্তি পোহাতে হয়। সময়মতো টিকিট পেতে এবং সেখানে থাকতে গিয়ে নানা সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়, যা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। তাই বিভাগীয় শহরে পরীক্ষা নিলে এসব সমস্যা প্রকট হবে না।

চট্টগ্রাম থেকে আসা অভিভাবক রফিক মিয়া বলেন, প্রতি বছর ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে যাতায়াত ভোগান্তিটা সবচেয়ে কষ্টদায়ক হয়। দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে সময়মতো এসে পৌঁছানো এবং সুষ্ঠুভাবে অবস্থান করে পরীক্ষা শেষ করা চ্যালেঞ্জ হয়ে ওঠে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক শহীদ ইকবাল বলেন, অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজে ভর্তির পরীক্ষা হচ্ছে বিভাগীয় পর্যায়ে। শুধু রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় পিছিয়ে থাকবে কেন? সবার ভোগান্তির বিষয়টি মাথায় নিয়ে পরীক্ষাটা দেশের বিভাগীয় পর্যায়ে পাঠিয়ে দেওয়া উচিত।

সারা দেশ থেকে শিক্ষার্থীদের এনে ভর্তি পরীক্ষায় বসানোকে অমানবিক বলছেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) রাজশাহী জেলা সভাপতি আহমেত সফিউদ্দিন। তিনি বলেন, অন্য কেন্দ্রে পরীক্ষা নিলে ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আয় কমবে, অন্য কেন্দ্রকে টাকা দিতে হবে। শুধু এ কারণেই হয়তো এটা হচ্ছে না।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, ‘বিভাগীয় শহরে ভর্তি পরীক্ষা নিলে খুবই ভালো হয়। এ সংক্রান্ত পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে। তবে আমার একক কোনো সিদ্ধান্তে এটা বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। ডিন ও বিভাগীয় প্রধানসহ সংশ্লিষ্ট সবার মতামতের ভিত্তিতে পরবর্তীতে আমরা সিদ্ধান্ত নেব। তা ছাড়া এটাও বিবেচ্য বিষয় যে বিভাগীয় শহরগুলোতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার মতো আমাদের সক্ষমতা রয়েছে কিনা। যদি সুন্দর পরিবেশ পাই, শতভাগ স্বচ্ছতার নিশ্চয়তা পাই, তাহলে আগামী পরীক্ষার আগেই বিষয়টি আলোচনা হবে।’

উল্লেখ্য, ২০২১-২২ সেশনের ভর্তি পরীক্ষা গতকাল সোমবার থেকে শুরু হয়েছে। বিভিন্ন ইউনিটের এ ভর্তি পরীক্ষা চলবে ২৭ জুলাই পর্যন্ত। প্রথম দিন ‘সি’ ইউনিটের বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত বিষয়ের পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন ৭২ হাজার ৪১০ জন ভর্তি-ইচ্ছুক পরীক্ষার্থী।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত