রায়পুরায় বেশির ভাগ কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ

রায়পুরা (নরসিংদী) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৮ নভেম্বর ২০২১, ০৭: ৪০
আপডেট : ২৮ নভেম্বর ২০২১, ১০: ৪৬

নরসিংদীর রায়পুরায় তৃতীয় ধাপের ১২টি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে ভোট আজ রোববার।

চেয়ারম্যান পদে রায়পুরায় মোট ৫১ জন লড়ছেন। রায়পুরা পুলিশ প্রশাসন বলছে, বেশির ভাগ কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ। অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণের জন্য ৫ স্তরের নিরাপত্তা বলয় থাকবে। নির্বাচন ঘিরে বেশ কয়েকটি ইউপিতে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। ভোটের দিনও সহিংসতার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। স্থানীয় ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে মহেশপুর, মুছাপুর, মির্জাপুর রাধানগরসহ বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের সব কটি কেন্দ্রে ঝুঁকিপূর্ণ।

মির্জাপুর ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে চারজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন উপজেলা কৃষক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সাদেক। সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক মঞ্জুর এলাহী দলীয় মনোনয়ন চেয়েও পাননি। তিনি এবার চশমা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে লড়ছেন। এদিকে মির্জাপুর ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান মো. আসাদুল্লাহ ভূঁইয়া পেয়েছেন আনারস প্রতীক এবং মোটরসাইকেল প্রতীক পেয়েছেন মো. আলতাব হোসেন। প্রতীক পাওয়ার পর দুই স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়াসহ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের অফিস, দোকান ও বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় দুই স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীকে ১৫১ ধারায় গ্রেপ্তারের পর আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল।

মুছাপুর ইউপিতে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মোহাম্মাদ হোসেন ভূঁইয়া (নৌকা), জাকের পার্টির গোলাম রব্বানী (গোলাপ ফুল) ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী সানা উল্লাহ ভূঁইয়া (আনারস)। গত সোম ও মঙ্গলবার মুছাপুরে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নৌকা প্রতীকে অগ্নিসংযোগ ও হামলার ঘটনা ঘটেছে।

মুছাপুর ইউনিয়নের নৌকার প্রার্থী মো. হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ‘সানাউল্লাহর সন্ত্রাসী বাহিনী প্রতি গ্রামেই আমার কর্মীদের হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। এমনকি ভোটারদের হুমকি দিচ্ছে যেন তাঁরা ভোট কেন্দ্রে না যান।’

অন্যদিকে বিদ্রোহী প্রার্থী সানাউল্লাহ ভূঁইয়া বলেন, ‘হুমকির অভিযোগ পুরোপুরি মিথ্যা ও বানোয়াট। ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের সামনেই নৌকা পোড়ানো হয়েছে। এ ব্যাপারে আমার কর্মীরা কিছুই জানেন না।’

তা ছাড়া মরজাল ও রাধানগরে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও তাঁদের সমর্থককে হুমকি দিয়ে আসছে বিদ্রোহী প্রার্থী ও তার সমর্থকেরা এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ভোটার বলেন, দ্বিতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের নির্বাচনী সহিংসতায় নরসিংদী সদরের আলোকবালী এবং রায়পুরার পাড়াতলী ও বাঁশগাড়ী ইউনিয়নে গুলিবিদ্ধ হয়ে ৯ জনের মৃত্যু হয়। এখন দেখার বিষয় এই নির্বাচনে কী হয়।

নরসিংদী জেলা সিনিয়র কর্মকর্তা মো. মেছবাহ্ উদ্দিন বলেন, ভোটগ্রহণের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। গতকাল সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ভোটের সরঞ্জাম বিতরণ করা হয়েছে। আজ সকালে প্রতিটি কেন্দ্রে ব্যালট পৌঁছানো হবে।

রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আজিজুর রহমান বলেন, বেশির ভাগ কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ। নির্বাচনকে সামনে রেখে সতর্কাবস্থায় রয়েছে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের একচুলও ছাড় দেওয়া হবে না।

নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাহেব আলী পাঠান বলেন, ‘অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণের জন্য ৫ স্তরের নিরাপত্তা বলয় থাকবে। অভিযোগ পাওয়া মাত্র পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত