আজাদুল আদনান, ঢাকা
দুই বছর ধরে চলা মহামারি করোনার ছাপ পড়েছে দেশের প্রসূতিসেবায়। করোনার আগে দেশের স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোয় যতসংখ্যক নারী প্রসব-পূর্ব সেবা নিতে আসতেন, তা গত দুই বছরে অনেক কমেছে। মাতৃসেবা ও চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার ক্ষেত্রে ঘাটতি থাকায় গর্ভকালে বাড়ছে জটিলতাও।
গর্ভধারণের পর নারীদের অন্তত চারবার প্রসব-পূর্ব সেবা নেওয়ার কথা। কিন্তু পরিবার পরিকল্পনা ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, ২০২০ সালের মার্চে দেশে করোনা হানা দেওয়ার পর থেকে প্রসূতিসেবায় বড় বিঘ্ন ঘটে। করোনা শুরুর পরপরই প্রথম দফার সেবা নেন ৬৮ শতাংশ প্রসূতি নারী। কিন্তু চতুর্থ দফায় সেবা নেওয়ার হার কমে দাঁড়ায় ৪৮ শতাংশে। অর্থাৎ সেবার বাইরে রয়ে যান ২০ ভাগের বেশি প্রসূতি। ২০২১ সালে প্রথম দফায় সেবা নেওয়ার হার কিছুটা বাড়লেও পরের তিন ধাপের অবস্থা আগের মতোই।
গর্ভধারণ থেকে শুরু করে প্রসব পর্যন্ত চিকিৎসকের কাছে যাননি রাজধানীর কেরানীগঞ্জের পোশাককর্মী দীপালি রায়। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি বাসাতেই প্রথম সন্তান প্রসব করেন ২২ বছর বয়সী এই নারী। কিন্তু প্রসবের পর থেকেই শ্বাসপ্রশ্বাসে সমস্যা দেখা দেয় নবজাতকের। সেই সঙ্গে প্রচণ্ড রক্তক্ষরণও হচ্ছিল দীপালির। কয়েক ঘণ্টা পর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নেওয়ার সময় পথেই প্রাণ হারান তিনি। শ্বাস নিতে সমস্যা হওয়ায় বাঁচানো যায়নি নবজাতককেও।
দীপালির মতো সন্তান প্রসব করতে গিয়ে প্রাণহানির মতো দুঃখজনক ঘটনা অবশ্য ঘটেনি মানিকগঞ্জের সেলিনা আক্তারের। পরিবারের কেউ চিকিৎসার সঙ্গে জড়িত না থাকলেও বাড়িতেই সন্তান প্রসবের সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘হাসপাতালে গেলে খালি পরীক্ষা দেয়। সংসারই ঠিকমতো চলে না, সেখানে ডাক্তার দেখানো ও ওষুধ কেনার খরচ আমাদের নেই। কমিউনিটি হাসপাতালে একবার গেছিলাম, কিন্তু বলে ওষুধ নাই। তাই আর কখনো যাইনি।’
শুধু দীপালি কিংবা সেলিনা নন, করোনার সময়ে অসংখ্য প্রসূতি নারী প্রসব-পূর্ব সেবা পাননি বা নেননি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, জেলা সদর হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২০২১ সালে ৩ লাখ ৮৪ হাজার ১৮৫টি প্রসব হয়েছে। এর মধ্যে সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৯৭৭ জন মা। ২০২০ সালে মারা গিয়েছিলেন ১ হাজার ১৩৩ জন। বিভিন্ন শারীরিক জটিলতা নিয়ে জন্ম নেওয়া ১৫ হাজার ১৮টি নবজাতক মারা গেছে ২০২১ সালে; ২০২০ সালে এ ধরনের মৃত্যু ছিল কমপক্ষে ১৫ হাজার ৫০০।
এমন প্রেক্ষাপটে আজ শনিবার দেশে পালিত হবে নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘মা ও শিশুর জীবন বাঁচাতে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে হবে যেতে’। দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা এ সপ্তাহে বিভিন্ন সচেতনতামূলক কর্মসূচি পালন করবে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক বেগম নাসরীন বলেছেন, করোনার সময়ে অনেক গর্ভবতী নারী আতঙ্কে ছিলেন। এ ছাড়া দীর্ঘদিনের লকডাউনের ফলে অনেকে ইচ্ছাকৃতভাবে সেবা নিতে যাননি। হাসপাতালগুলোতেও স্বাভাবিক সেবা পাওয়া ছিল দুষ্কর। ফলে বাড়িতেই সন্তান প্রসব করতে গিয়ে অনেক মা মারা গেছেন। বহু নবজাতকেরও মৃত্যু হয়েছে।
জাতিসংঘ জনসংখ্যা সংস্থার চলতি বছরের মার্চে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন বলছে, গত বছর বাংলাদেশে প্রসূতিদের ২০ ভাগের বয়স ছিল ১৮ বছরের কম। অধিকাংশই অপ্রত্যাশিতভাবে গর্ভধারণ করেছিলেন। অপ্রত্যাশিত গর্ভধারণের ফলে জন্ম নেওয়া শিশুর বেশ কম ওজন নিয়ে জন্ম নেওয়ার ঝুঁকি থাকে।
পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের হিসাবে, বাড়িতে সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে মৃত্যুঝুঁকিতে পড়েছেন ৭০ ভাগেরও বেশি মা ও শিশু। কারণ বাড়িতে প্রসব সেবাদানকারী প্রায় ৯০ ভাগেরই প্রাতিষ্ঠানিক কোনো প্রশিক্ষণ নেই।
সংস্থাটির কর্মকর্তারা বলছেন, দেশে স্বাভাবিক সময়েও ৫০ ভাগ সন্তান প্রসব হয় বাড়িতে। প্রাতিষ্ঠানিক সেবা নেওয়া নারীদের ২৮ শতাংশের প্রসব হয় হাসপাতালে, ২৬ শতাংশ ক্লিনিকে এবং ২ শতাংশ মা ও শিশু হাসপাতালে। করোনাকালে স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে জনবল ঘাটতির কারণে প্রসূতিসেবা ব্যাহত হয়েছে।
পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের পরিচালক (মা ও শিশু) ডা. মাহমুদুর রহমান বলেন, গর্ভবতী মায়েরা সঠিক পরামর্শ না পাওয়ায় জটিলতা বাড়ছে। ৫০ শতাংশ পর্যন্ত প্রাতিষ্ঠানিক প্রসব করানো গেলেও বাকি অর্ধেক এখনো বাড়িতেই হচ্ছে। নবজাতকের মৃত্যুহার কমাতে হলে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রসব নেওয়া বাড়াতে হবে।
দুই বছর ধরে চলা মহামারি করোনার ছাপ পড়েছে দেশের প্রসূতিসেবায়। করোনার আগে দেশের স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোয় যতসংখ্যক নারী প্রসব-পূর্ব সেবা নিতে আসতেন, তা গত দুই বছরে অনেক কমেছে। মাতৃসেবা ও চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার ক্ষেত্রে ঘাটতি থাকায় গর্ভকালে বাড়ছে জটিলতাও।
গর্ভধারণের পর নারীদের অন্তত চারবার প্রসব-পূর্ব সেবা নেওয়ার কথা। কিন্তু পরিবার পরিকল্পনা ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, ২০২০ সালের মার্চে দেশে করোনা হানা দেওয়ার পর থেকে প্রসূতিসেবায় বড় বিঘ্ন ঘটে। করোনা শুরুর পরপরই প্রথম দফার সেবা নেন ৬৮ শতাংশ প্রসূতি নারী। কিন্তু চতুর্থ দফায় সেবা নেওয়ার হার কমে দাঁড়ায় ৪৮ শতাংশে। অর্থাৎ সেবার বাইরে রয়ে যান ২০ ভাগের বেশি প্রসূতি। ২০২১ সালে প্রথম দফায় সেবা নেওয়ার হার কিছুটা বাড়লেও পরের তিন ধাপের অবস্থা আগের মতোই।
গর্ভধারণ থেকে শুরু করে প্রসব পর্যন্ত চিকিৎসকের কাছে যাননি রাজধানীর কেরানীগঞ্জের পোশাককর্মী দীপালি রায়। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি বাসাতেই প্রথম সন্তান প্রসব করেন ২২ বছর বয়সী এই নারী। কিন্তু প্রসবের পর থেকেই শ্বাসপ্রশ্বাসে সমস্যা দেখা দেয় নবজাতকের। সেই সঙ্গে প্রচণ্ড রক্তক্ষরণও হচ্ছিল দীপালির। কয়েক ঘণ্টা পর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নেওয়ার সময় পথেই প্রাণ হারান তিনি। শ্বাস নিতে সমস্যা হওয়ায় বাঁচানো যায়নি নবজাতককেও।
দীপালির মতো সন্তান প্রসব করতে গিয়ে প্রাণহানির মতো দুঃখজনক ঘটনা অবশ্য ঘটেনি মানিকগঞ্জের সেলিনা আক্তারের। পরিবারের কেউ চিকিৎসার সঙ্গে জড়িত না থাকলেও বাড়িতেই সন্তান প্রসবের সিদ্ধান্ত নেন তিনি।
আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘হাসপাতালে গেলে খালি পরীক্ষা দেয়। সংসারই ঠিকমতো চলে না, সেখানে ডাক্তার দেখানো ও ওষুধ কেনার খরচ আমাদের নেই। কমিউনিটি হাসপাতালে একবার গেছিলাম, কিন্তু বলে ওষুধ নাই। তাই আর কখনো যাইনি।’
শুধু দীপালি কিংবা সেলিনা নন, করোনার সময়ে অসংখ্য প্রসূতি নারী প্রসব-পূর্ব সেবা পাননি বা নেননি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, জেলা সদর হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২০২১ সালে ৩ লাখ ৮৪ হাজার ১৮৫টি প্রসব হয়েছে। এর মধ্যে সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৯৭৭ জন মা। ২০২০ সালে মারা গিয়েছিলেন ১ হাজার ১৩৩ জন। বিভিন্ন শারীরিক জটিলতা নিয়ে জন্ম নেওয়া ১৫ হাজার ১৮টি নবজাতক মারা গেছে ২০২১ সালে; ২০২০ সালে এ ধরনের মৃত্যু ছিল কমপক্ষে ১৫ হাজার ৫০০।
এমন প্রেক্ষাপটে আজ শনিবার দেশে পালিত হবে নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘মা ও শিশুর জীবন বাঁচাতে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে হবে যেতে’। দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা এ সপ্তাহে বিভিন্ন সচেতনতামূলক কর্মসূচি পালন করবে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক বেগম নাসরীন বলেছেন, করোনার সময়ে অনেক গর্ভবতী নারী আতঙ্কে ছিলেন। এ ছাড়া দীর্ঘদিনের লকডাউনের ফলে অনেকে ইচ্ছাকৃতভাবে সেবা নিতে যাননি। হাসপাতালগুলোতেও স্বাভাবিক সেবা পাওয়া ছিল দুষ্কর। ফলে বাড়িতেই সন্তান প্রসব করতে গিয়ে অনেক মা মারা গেছেন। বহু নবজাতকেরও মৃত্যু হয়েছে।
জাতিসংঘ জনসংখ্যা সংস্থার চলতি বছরের মার্চে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন বলছে, গত বছর বাংলাদেশে প্রসূতিদের ২০ ভাগের বয়স ছিল ১৮ বছরের কম। অধিকাংশই অপ্রত্যাশিতভাবে গর্ভধারণ করেছিলেন। অপ্রত্যাশিত গর্ভধারণের ফলে জন্ম নেওয়া শিশুর বেশ কম ওজন নিয়ে জন্ম নেওয়ার ঝুঁকি থাকে।
পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের হিসাবে, বাড়িতে সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে মৃত্যুঝুঁকিতে পড়েছেন ৭০ ভাগেরও বেশি মা ও শিশু। কারণ বাড়িতে প্রসব সেবাদানকারী প্রায় ৯০ ভাগেরই প্রাতিষ্ঠানিক কোনো প্রশিক্ষণ নেই।
সংস্থাটির কর্মকর্তারা বলছেন, দেশে স্বাভাবিক সময়েও ৫০ ভাগ সন্তান প্রসব হয় বাড়িতে। প্রাতিষ্ঠানিক সেবা নেওয়া নারীদের ২৮ শতাংশের প্রসব হয় হাসপাতালে, ২৬ শতাংশ ক্লিনিকে এবং ২ শতাংশ মা ও শিশু হাসপাতালে। করোনাকালে স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে জনবল ঘাটতির কারণে প্রসূতিসেবা ব্যাহত হয়েছে।
পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের পরিচালক (মা ও শিশু) ডা. মাহমুদুর রহমান বলেন, গর্ভবতী মায়েরা সঠিক পরামর্শ না পাওয়ায় জটিলতা বাড়ছে। ৫০ শতাংশ পর্যন্ত প্রাতিষ্ঠানিক প্রসব করানো গেলেও বাকি অর্ধেক এখনো বাড়িতেই হচ্ছে। নবজাতকের মৃত্যুহার কমাতে হলে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রসব নেওয়া বাড়াতে হবে।
গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
৬ ঘণ্টা আগেঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৪ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৪ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৪ দিন আগে