প্রথম বিসিএসেই পুলিশ ক্যাডার

এম এম মুজাহিদ উদ্দীন।
প্রকাশ : ০১ জুন ২০২৩, ১০: ০৮

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থী এ এন এম সাইফুজ্জামান ৪০তম বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে পুলিশ ক্যাডার হয়েছেন। এটি তাঁর প্রথম বিসিএস ছিল। তাঁর এই সাফল্যগাথা লিখেছেন এম এম মুজাহিদ উদ্দীন।

সেনাবাহিনীর জুনিয়র কমিশন্ড অফিসার মো. কামরুজ্জামান ও সুফিয়া জামানের প্রথম সন্তানের জন্ম খুলনা হলেও বাবার কর্মসূত্রে বেড়ে ওঠা দেশের উত্তরে অবস্থিত বগুড়া ক্যান্টনমেন্টে। ছাত্র হিসেবে ছেলেবেলায় অমনোযোগী হলেও শৈশব ছেড়ে কৈশোরে পদার্পণের সঙ্গে সঙ্গে লেখাপড়ায় ক্রমান্বয়ে আন্তরিক হতে থাকেন। পরে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী হিসেবে বগুড়া ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিকে এবং ক্যান্টনমেন্ট কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিকে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। 

প্রস্তুতি ও সাফল্য
দেশসেরা বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশবিজ্ঞানে ভর্তি হয়ে নিজের লেখাপড়ার পাশাপাশি অনেক মেধাবী শিক্ষার্থীকে পড়ানোর কাজে সময় দিয়ে সাহায্য করতেন সম্মান শ্রেণির শুরু থেকেই। প্রতিবছরই তাঁর অভিজ্ঞতায় নানান পালক সংযুক্ত হতে থাকে। চতুর্থ বর্ষ থেকে বন্ধুদের সঙ্গে বিসিএসের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেন। সম্মান ফল প্রকাশের আগেই আবেদন করেন ৪০তম বিসিএসে।

আগে থেকেই গণিত ও বিজ্ঞানের চর্চা থাকায় বেশি সময় দিতেন সাধারণ জ্ঞান এবং ইংরেজির মতো বিষয়গুলোতে। প্রস্তুতিকালে সব সময় পিএসসি প্রদত্ত সিলেবাসটি ভালোভাবে বিশ্লেষণ এবং বিগত বছরের প্রশ্ন দেখে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় বা টপিক নির্ধারণ করে নিতেন। কোন সাবজেক্ট থেকে কত নম্বর তুলবেন, এটার একটা খসড়া হিসাবও তিনি শুরুতেই করে নিতেন। সব বিষয়ে নোট করে সময় নষ্ট করতেন না।

শুধু কঠিন অথচ গুরুত্বপূর্ণ কিংবা সহায়ক বইগুলোতে ভালো উত্তর নেই এমন সব টপিক নিজে নোট করতেন। ৪০তম বিসিএসেই তিনি নিজের শীর্ষ পছন্দ পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হন। 

সাফল্য অর্জনে 
বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে সফল হতে সময় লেগে যাওয়ায় পরীক্ষার্থীরা অনেক ক্ষেত্রেই সফলদের পরামর্শ নেন। এ সময় সফলদের অন্ধের মতো অনুকরণ করতে গিয়ে পরীক্ষার্থীরা নিজের পথ হারিয়ে ফেলেন। যেমন একজন সফল ব্যক্তি দিনে রুটিন অনুসরণ করে ১০ ঘণ্টা লেখাপড়া করেন। নতুন একজন পরীক্ষার্থী হয়তো নানান ব্যস্ততা মিলিয়ে থেকে দিনে ৬ ঘণ্টা পড়তে পারেন এবং ১০ ঘণ্টার পড়া তিনি ৬ ঘণ্টায় সম্পন্ন করতে পারেন। এখন এই ৬ ঘণ্টা পড়া প্রার্থী যদি মনে করেন আমি ১০ ঘণ্টা পড়তে পারছি না আমাকে দিয়ে সফলতা আসবে না এবং তিনি যদি এই চিন্তা থেকে লেখাপড়া বাদ দিয়ে দেন, তাহলে কত বড় ভুল তিনি করবেন নিশ্চয়ই তা বোঝা যাচ্ছে।

এ ক্ষেত্রে পরামর্শ হিসেবে তিনি বলেছেন, একজন পরীক্ষার্থী যেহেতু নিজে সফলতার সঙ্গে সম্মান পাস করেছেন, স্বভাবতই তিনি সফল হতে একটি কৌশল অবলম্বন করেছেন। তাই তাঁর উচিত হবে সেই কার্যকর কৌশলটি চাকরি প্রস্তুতির ভিত্তি হিসেবে গ্রহণ করা। তারপর অভিজ্ঞ এবং সফল এমন কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে নিজের কৌশলের দুর্বল দিকগুলো খুঁজে বের করা। এরপর সেগুলো নিয়ে কাজ করা। অনন্তকাল ধরে প্রত্যেকের সফলতার গল্প ভিন্ন ছিল আর ভবিষ্যতেও থাকবে। তাই অন্যের সফলতার গল্পে অন্ধ অনুকরণ পরিহার করুন এবং নিজের গল্প নিজেই লিখুন। মনে রাখবেন, সবাই সব বিষয়ে সমানভাবে পারদর্শী হয় না। তবে সফলরা তাঁদের দুর্বলতাকে ফেলে না রেখে ধীরে ধীরে শাণিত করেন। তাই যে বিষয়ে আপনি অনেক বেশি দুর্বল, সেটার জন্য স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি দুটি পরিকল্পনা করুন।

বিগত বিসিএসের প্রশ্নপত্র বিশ্লেষণে বলা যায় ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত এনসিটিবি প্রণীত বইগুলো প্রিলিমিনারি এবং লিখিত উভয় পরীক্ষায় আপনার শ্রেষ্ঠ সহায়ক বই হিসেবে কাজে দেবে। আর ভাইভার জন্য ‘ভাইভা বোর্ডের মুখোমুখি’ বইটি সহায়ক হিসেবে দারুণ কাজে দেবে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আবু সাঈদকে ৪–৫ ঘণ্টা পরে হাসপাতালে নেওয়া হয়—শেখ হাসিনার দাবির সত্যতা কতটুকু

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

বিমানবন্দরে সাংবাদিক নূরুল কবীরকে হয়রানির তদন্তের নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

ভারত ও তরুণ প্রজন্মের নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রসঙ্গে যা বললেন মির্জা ফখরুল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত