নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
ভারতীয় শিল্পগোষ্ঠী আদানির কাছ থেকে স্বার্থবিরোধী কঠিন শর্তে বিদ্যুৎ কেনার চুক্তি এখন বাংলাদেশে আলোচনার কেন্দ্রে। চুক্তির পদে পদে অসম শর্ত আর আদানি কর্তৃক তথ্য গোপন করে অতিমুনাফার সব আয়োজন সর্বস্তরে প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। এরপরও সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের নীরবতা সন্দেহ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা এ ধরনের চুক্তিকে স্বার্থবিরোধী খারাপ চুক্তি বলে অভিহিত করেছেন।
মাসখানেক ধরে আদানির কর্মকাণ্ড বিশ্বব্যাপী প্রশ্নবিদ্ধ। এর জেরে শেয়ার ধসের কারণে প্রতিষ্ঠানটির বিশাল বিত্তবৈভব এখন পতনের মুখে। সারা বিশ্বে যখন আদানির মহিরুহ হয়ে ওঠার ঘটনা ‘টক অব দ্য ওয়ার্ল্ড’, তখন বাংলাদেশেও এর অতিমুনাফার বিষয়টি সবার সামনে আসে।
বাংলাদেশ আদানির সঙ্গে প্রায় ১ হাজার ৪৯৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেনার চুক্তি করে। এই চুক্তির আওতায় চলতি মাস থেকেই তাদের বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হওয়ার কথা। আদানি বাংলাদেশ থেকে কম খরচেও বেশি মুনাফা নেওয়ার সব আয়োজন সম্পন্ন করেছে। আর বাংলাদেশ চুক্তি করে এখন অসম স্বার্থের বিষয়টি আলোচনায় আসার পর তা সংশোধনের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরছে। যদিও এর পক্ষে খুব একটা সায় পাওয়া যাচ্ছে না আদানি থেকে।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ড. ম তামিম বলেন, ‘আদানির সঙ্গে করা এই চুক্তি আরও বেশি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা উচিত ছিল। এই একপেশে চুক্তি আমাদের বিদ্যুৎ খাতে কেমন প্রভাব পড়বে, সেটা এখন বলা যাচ্ছে না। তবে মোটা দাগে বলা যায়, এই চুক্তি আমাদের অনুকূলে নয়। এ ধরনের একপেশে চুক্তি থেকে বের হওয়ার সুযোগ আছে, তবে বেশ কঠিন। আমরা আসলে জেনেবুঝে চুক্তিটা স্বাক্ষর করেছি। বিপিডিবি বিদ্যুৎ না কিনলে পেনাল্টি দিতে হবে আর যদি আদানি কোনো কারণে বিদ্যুৎ না দিতে পারে, তাহলেও আদানিকে শাস্তির আওতায় আনা যাবে না। এটা খুবই একপেশে।’
২৫ বছর ধরে আদানির কাছ থেকে বিদ্যুৎ কেনার এই চুক্তি বাংলাদেশের স্বার্থের পরিপন্থী বলে উল্লেখ করেছেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ইজাজ হোসেন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যেভাবে চুক্তিটি করা হয়েছে, তাতে বোঝা যাচ্ছে, এই চুক্তি খুবই খারাপ। কয়লার দাম নির্ধারণ থেকে শুরু করে ক্যাপাসিটি চার্জ—সবকিছুই আদানির অনুকূলে করা হয়েছে। আমার মনে হয়, এই চুক্তি খুবই তাড়াহুড়ো করে করা হয়েছে।’
এ মাসেই যখন আদানির কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ আসার কথা, তখনই জানা গেল প্রতিষ্ঠানটি এর জ্বালানি হিসেবে কয়লার দাম অতিরিক্ত মাত্রায় নির্ধারণ করেছে। অথচ বেশি মুনাফার আশায় ভারত সরকার থেকে প্রতিষ্ঠানটি শুল্কছাড় নিয়েও বাংলাদেশের কাছে এ তথ্য গোপন করেছে।
জানা যায়, বাংলাদেশের কাছে বিদ্যুৎ বিক্রি করা হবে বলে ২০১৯ সালে বিদ্যুৎকেন্দ্রের জমিকে ভারত সরকার বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করে। বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল ঘোষণার কারণে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করার জন্য যন্ত্রপাতি ও কয়লা আমদানি বাবদ সব ধরনের শুল্ক-কর ছাড় পায় আদানি।
চুক্তি অনুযায়ী, এই শুল্ক-কর ছাড়ের বিষয়টি বাংলাদেশকে ৩০ দিনের মধ্যে জানানোর কথা। চুক্তিতে বলা আছে, শুল্ক-কর ছাড় পেলে ক্যাপাসিটি চার্জ ও কয়লা আমদানি ব্যয় কমে যাবে। তবে আদানি গ্রুপ ছাড়ের বিষয়টি বাংলাদেশকে জানায়নি। বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল ঘোষণার ফলে আদানির গড্ডা বিদ্যুৎকেন্দ্রটি প্রথম পাঁচ বছর শতভাগ শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে। আর পরবর্তী পাঁচ বছর পাবে ৫০ শতাংশ শুল্ক সুবিধা। এ সুবিধার কারণে দামের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ কিছুটা সুবিধা পাওয়ার কথা।
অথচ এদিকে কোনো সায় নেই আদানির। উল্টো আদানি গ্রুপ বিদ্যুৎ উৎপাদনে জন্য মাত্রাতিরিক্ত কয়লার দাম নির্ধারণ করেছে। আদানি প্রতি টন কয়লার দাম ৪০০ ডলার নির্ধারণ করে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কাছে চাহিদাপত্র পাঠিয়েছে। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ও বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা আজকের পত্রিকাকে বলেন, আদানি গ্রুপ কয়লার যে দাম প্রস্তাব করেছে, তা রামপাল ও পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের তুলনায় অনেক বেশি।
শুল্ক-কর ছাড় নিয়ে এবং কয়লার দাম নির্ধারণে বিপিডিবি ইতিমধ্যে আদানি গ্রুপের সঙ্গে বৈঠকও করেছে। বৈঠকে আদানি গ্রুপ যে কয়লার দাম নির্ধারণ করেছে, সেটা দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। ক্যাপাসিটি চার্জসহ কয়লার দাম পুনর্নির্ধারণ না হওয়া পর্যন্ত আদানি থেকে বিদ্যুৎ কেনার জন্য চাহিদাপত্র দেওয়া হবে না বলেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে বিদ্যুৎসচিব মো. হাবিবুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি আদানির বিষয়টি স্পর্শকাতর উল্লেখ করে এ বিষয়ে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেন, ‘আমি আসলে আদানির এই বিষয়ে তেমন কিছু জানি না। আর এ নিয়ে আমার কিছু বলার নেই।’
সম্প্রতি বিপিডিবি রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য কয়লা কেনার দরপ্রস্তাব আহ্বান করে। তাতে প্রতি টনের দাম প্রস্তাব করা হয়েছে ২৩২ ডলার। অথচ আদানি গড্ডা বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য কয়লার দাম প্রস্তাব করেছে ৪০০ ডলার।
বিদ্যুৎ বিভাগের দুজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ২০১৭ সালে করা এই চুক্তিতেই আদানি গ্রুপকে নিম্নমানের কয়লা কিনে বেশি দাম রাখার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। চুক্তিতে বলা হয়, আদানি গড্ডা বিদ্যুৎকেন্দ্রে অর্ধেক ইন্দোনেশিয়ার কয়লা ও অর্ধেক আন্তর্জাতিক মানের (নিউ ক্যাসেল ইনডেক্স) কয়লা ব্যবহার করতে পারবে।
কয়লার দাম নির্ধারণের সময় বিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ ইন্দোনেশিয়ার নিম্নমানের কয়লা ব্যবহার করেও আন্তর্জাতিক মানের কয়লার দাম নিতে পারবে আদানি। বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, চুক্তির এই ধারা ব্যবহার করে আদানি গ্রুপ ইন্দোনেশিয়ার ৪ হাজার ৬০০ কিলোক্যালরির কয়লার দাম নিতে চাচ্ছে ৬ হাজার ৩২২ কিলোক্যালরির, যা আন্তর্জাতিক মানের কয়লার দাম বলা হয়।
বিদ্যুৎ বিভাগের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এত ছাড়ের পরও আদানি গ্রুপ বিপিডিবি থেকে কয়লার দাম বেশি নিতে চাচ্ছে। আমরা বিষয়টি আদানির কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাম্প্রতিক সময়ে হওয়া বৈঠকে জানিয়েছি। তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছে, কয়লার দাম পুনর্নির্ধারণ করা হবে।’
এদিকে আদানির সঙ্গে চুক্তির শর্ত অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটি থেকে উৎপাদিত বিদ্যুতের ন্যূনতম ৩৪ শতাংশ কিনতেই হবে বাংলাদেশকে। পিডিবি যদি কোনো কারণে বিদ্যুৎ না কেনে, তাহলে ৩৪ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদন বাবদ কয়লার খরচ দিতে হবে। একই সঙ্গে গুনতে হবে কয়লা সরবরাহকারী, পরিবহনকারী এবং বন্দর অপারেটরদের সব জরিমানা ও ক্ষতিপূরণ।
দামের তুলনা
পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন সক্ষমতা এক হাজার ২৪৪ মেগাওয়াট। পূর্ণ সক্ষমতায় চললে জ্বালানি ও ক্যাপাসিটি চার্জসহ বিদ্যুৎ উৎপাদনে গড় ব্যয় পড়বে ১৮ দশমিক ০৬ টাকা। রামপাল পূর্ণমাত্রা উৎপাদনে গেলে গড় উৎপাদন ব্যয় হবে ১৯ দশমিক ৮৩ টাকা। চট্টগ্রামের বাঁশখালীর এস আলমের এসএস পাওয়ার প্ল্যান্ট আগামী এপ্রিলে মূল উৎপাদনে যাবে। এ কেন্দ্রের গড় উৎপাদন ব্যয় পড়বে ১৯ দশমিক ৯২ টাকা।
আগামী মার্চে ভারত থেকে আসার কথা আদানির গড্ডা কেন্দ্রের বিদ্যুৎ বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা এক হাজার ৪৯৬ মেগাওয়াট। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পূর্ণ সক্ষমতায় চললে জ্বালানি ব্যয় পড়বে ইউনিটপ্রতি ১৯ দশমিক ২৬ টাকা। ক্যাপাসিটি চার্জ আছে ৪ দশমিক ৫৯ টাকা। গড় উৎপাদন ব্যয় পড়বে ২১ দশমিক ৬৩ টাকা।
ভারতীয় শিল্পগোষ্ঠী আদানির কাছ থেকে স্বার্থবিরোধী কঠিন শর্তে বিদ্যুৎ কেনার চুক্তি এখন বাংলাদেশে আলোচনার কেন্দ্রে। চুক্তির পদে পদে অসম শর্ত আর আদানি কর্তৃক তথ্য গোপন করে অতিমুনাফার সব আয়োজন সর্বস্তরে প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। এরপরও সরকারের সংশ্লিষ্ট মহলের নীরবতা সন্দেহ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা এ ধরনের চুক্তিকে স্বার্থবিরোধী খারাপ চুক্তি বলে অভিহিত করেছেন।
মাসখানেক ধরে আদানির কর্মকাণ্ড বিশ্বব্যাপী প্রশ্নবিদ্ধ। এর জেরে শেয়ার ধসের কারণে প্রতিষ্ঠানটির বিশাল বিত্তবৈভব এখন পতনের মুখে। সারা বিশ্বে যখন আদানির মহিরুহ হয়ে ওঠার ঘটনা ‘টক অব দ্য ওয়ার্ল্ড’, তখন বাংলাদেশেও এর অতিমুনাফার বিষয়টি সবার সামনে আসে।
বাংলাদেশ আদানির সঙ্গে প্রায় ১ হাজার ৪৯৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেনার চুক্তি করে। এই চুক্তির আওতায় চলতি মাস থেকেই তাদের বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হওয়ার কথা। আদানি বাংলাদেশ থেকে কম খরচেও বেশি মুনাফা নেওয়ার সব আয়োজন সম্পন্ন করেছে। আর বাংলাদেশ চুক্তি করে এখন অসম স্বার্থের বিষয়টি আলোচনায় আসার পর তা সংশোধনের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরছে। যদিও এর পক্ষে খুব একটা সায় পাওয়া যাচ্ছে না আদানি থেকে।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ড. ম তামিম বলেন, ‘আদানির সঙ্গে করা এই চুক্তি আরও বেশি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা উচিত ছিল। এই একপেশে চুক্তি আমাদের বিদ্যুৎ খাতে কেমন প্রভাব পড়বে, সেটা এখন বলা যাচ্ছে না। তবে মোটা দাগে বলা যায়, এই চুক্তি আমাদের অনুকূলে নয়। এ ধরনের একপেশে চুক্তি থেকে বের হওয়ার সুযোগ আছে, তবে বেশ কঠিন। আমরা আসলে জেনেবুঝে চুক্তিটা স্বাক্ষর করেছি। বিপিডিবি বিদ্যুৎ না কিনলে পেনাল্টি দিতে হবে আর যদি আদানি কোনো কারণে বিদ্যুৎ না দিতে পারে, তাহলেও আদানিকে শাস্তির আওতায় আনা যাবে না। এটা খুবই একপেশে।’
২৫ বছর ধরে আদানির কাছ থেকে বিদ্যুৎ কেনার এই চুক্তি বাংলাদেশের স্বার্থের পরিপন্থী বলে উল্লেখ করেছেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ইজাজ হোসেন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘যেভাবে চুক্তিটি করা হয়েছে, তাতে বোঝা যাচ্ছে, এই চুক্তি খুবই খারাপ। কয়লার দাম নির্ধারণ থেকে শুরু করে ক্যাপাসিটি চার্জ—সবকিছুই আদানির অনুকূলে করা হয়েছে। আমার মনে হয়, এই চুক্তি খুবই তাড়াহুড়ো করে করা হয়েছে।’
এ মাসেই যখন আদানির কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ আসার কথা, তখনই জানা গেল প্রতিষ্ঠানটি এর জ্বালানি হিসেবে কয়লার দাম অতিরিক্ত মাত্রায় নির্ধারণ করেছে। অথচ বেশি মুনাফার আশায় ভারত সরকার থেকে প্রতিষ্ঠানটি শুল্কছাড় নিয়েও বাংলাদেশের কাছে এ তথ্য গোপন করেছে।
জানা যায়, বাংলাদেশের কাছে বিদ্যুৎ বিক্রি করা হবে বলে ২০১৯ সালে বিদ্যুৎকেন্দ্রের জমিকে ভারত সরকার বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করে। বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল ঘোষণার কারণে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করার জন্য যন্ত্রপাতি ও কয়লা আমদানি বাবদ সব ধরনের শুল্ক-কর ছাড় পায় আদানি।
চুক্তি অনুযায়ী, এই শুল্ক-কর ছাড়ের বিষয়টি বাংলাদেশকে ৩০ দিনের মধ্যে জানানোর কথা। চুক্তিতে বলা আছে, শুল্ক-কর ছাড় পেলে ক্যাপাসিটি চার্জ ও কয়লা আমদানি ব্যয় কমে যাবে। তবে আদানি গ্রুপ ছাড়ের বিষয়টি বাংলাদেশকে জানায়নি। বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল ঘোষণার ফলে আদানির গড্ডা বিদ্যুৎকেন্দ্রটি প্রথম পাঁচ বছর শতভাগ শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে। আর পরবর্তী পাঁচ বছর পাবে ৫০ শতাংশ শুল্ক সুবিধা। এ সুবিধার কারণে দামের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ কিছুটা সুবিধা পাওয়ার কথা।
অথচ এদিকে কোনো সায় নেই আদানির। উল্টো আদানি গ্রুপ বিদ্যুৎ উৎপাদনে জন্য মাত্রাতিরিক্ত কয়লার দাম নির্ধারণ করেছে। আদানি প্রতি টন কয়লার দাম ৪০০ ডলার নির্ধারণ করে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কাছে চাহিদাপত্র পাঠিয়েছে। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ও বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা আজকের পত্রিকাকে বলেন, আদানি গ্রুপ কয়লার যে দাম প্রস্তাব করেছে, তা রামপাল ও পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের তুলনায় অনেক বেশি।
শুল্ক-কর ছাড় নিয়ে এবং কয়লার দাম নির্ধারণে বিপিডিবি ইতিমধ্যে আদানি গ্রুপের সঙ্গে বৈঠকও করেছে। বৈঠকে আদানি গ্রুপ যে কয়লার দাম নির্ধারণ করেছে, সেটা দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। ক্যাপাসিটি চার্জসহ কয়লার দাম পুনর্নির্ধারণ না হওয়া পর্যন্ত আদানি থেকে বিদ্যুৎ কেনার জন্য চাহিদাপত্র দেওয়া হবে না বলেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে বিদ্যুৎসচিব মো. হাবিবুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি আদানির বিষয়টি স্পর্শকাতর উল্লেখ করে এ বিষয়ে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেন, ‘আমি আসলে আদানির এই বিষয়ে তেমন কিছু জানি না। আর এ নিয়ে আমার কিছু বলার নেই।’
সম্প্রতি বিপিডিবি রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য কয়লা কেনার দরপ্রস্তাব আহ্বান করে। তাতে প্রতি টনের দাম প্রস্তাব করা হয়েছে ২৩২ ডলার। অথচ আদানি গড্ডা বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য কয়লার দাম প্রস্তাব করেছে ৪০০ ডলার।
বিদ্যুৎ বিভাগের দুজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ২০১৭ সালে করা এই চুক্তিতেই আদানি গ্রুপকে নিম্নমানের কয়লা কিনে বেশি দাম রাখার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। চুক্তিতে বলা হয়, আদানি গড্ডা বিদ্যুৎকেন্দ্রে অর্ধেক ইন্দোনেশিয়ার কয়লা ও অর্ধেক আন্তর্জাতিক মানের (নিউ ক্যাসেল ইনডেক্স) কয়লা ব্যবহার করতে পারবে।
কয়লার দাম নির্ধারণের সময় বিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ ইন্দোনেশিয়ার নিম্নমানের কয়লা ব্যবহার করেও আন্তর্জাতিক মানের কয়লার দাম নিতে পারবে আদানি। বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, চুক্তির এই ধারা ব্যবহার করে আদানি গ্রুপ ইন্দোনেশিয়ার ৪ হাজার ৬০০ কিলোক্যালরির কয়লার দাম নিতে চাচ্ছে ৬ হাজার ৩২২ কিলোক্যালরির, যা আন্তর্জাতিক মানের কয়লার দাম বলা হয়।
বিদ্যুৎ বিভাগের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এত ছাড়ের পরও আদানি গ্রুপ বিপিডিবি থেকে কয়লার দাম বেশি নিতে চাচ্ছে। আমরা বিষয়টি আদানির কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাম্প্রতিক সময়ে হওয়া বৈঠকে জানিয়েছি। তারা আমাদের আশ্বস্ত করেছে, কয়লার দাম পুনর্নির্ধারণ করা হবে।’
এদিকে আদানির সঙ্গে চুক্তির শর্ত অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটি থেকে উৎপাদিত বিদ্যুতের ন্যূনতম ৩৪ শতাংশ কিনতেই হবে বাংলাদেশকে। পিডিবি যদি কোনো কারণে বিদ্যুৎ না কেনে, তাহলে ৩৪ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদন বাবদ কয়লার খরচ দিতে হবে। একই সঙ্গে গুনতে হবে কয়লা সরবরাহকারী, পরিবহনকারী এবং বন্দর অপারেটরদের সব জরিমানা ও ক্ষতিপূরণ।
দামের তুলনা
পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন সক্ষমতা এক হাজার ২৪৪ মেগাওয়াট। পূর্ণ সক্ষমতায় চললে জ্বালানি ও ক্যাপাসিটি চার্জসহ বিদ্যুৎ উৎপাদনে গড় ব্যয় পড়বে ১৮ দশমিক ০৬ টাকা। রামপাল পূর্ণমাত্রা উৎপাদনে গেলে গড় উৎপাদন ব্যয় হবে ১৯ দশমিক ৮৩ টাকা। চট্টগ্রামের বাঁশখালীর এস আলমের এসএস পাওয়ার প্ল্যান্ট আগামী এপ্রিলে মূল উৎপাদনে যাবে। এ কেন্দ্রের গড় উৎপাদন ব্যয় পড়বে ১৯ দশমিক ৯২ টাকা।
আগামী মার্চে ভারত থেকে আসার কথা আদানির গড্ডা কেন্দ্রের বিদ্যুৎ বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা এক হাজার ৪৯৬ মেগাওয়াট। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি পূর্ণ সক্ষমতায় চললে জ্বালানি ব্যয় পড়বে ইউনিটপ্রতি ১৯ দশমিক ২৬ টাকা। ক্যাপাসিটি চার্জ আছে ৪ দশমিক ৫৯ টাকা। গড় উৎপাদন ব্যয় পড়বে ২১ দশমিক ৬৩ টাকা।
গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২ দিন আগেঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৬ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৬ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৬ দিন আগে