বিভিন্ন ওয়ার্ডে সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠন করছে সিলেট নগর আওয়ামী লীগ। এরই ধারাবাহিকতায় নগরের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় গত সোমবার রাতে। সম্মেলনে নিজের পছন্দের ব্যক্তিকে সাধারণ সম্পাদক করতে গিয়ে তোপের মুখে পড়ে সম্মেলনস্থল থেকে দৌড়ে পালিয়েছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে ঘোষিত কমিটি স্থগিত করেছেন নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ।

জানা গেছে, গত সোমবার রাত আটটায় নগরের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের সম্মেলন শুরু হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ। আর প্রধান বক্তা ছিলেন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন। সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন শেষে দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হয় রাত ১০টায়। নগরের মিরাবাজার আগপাড়ার কো-অপারেটিভ মাঠে অনুষ্ঠিত কাউন্সিলে সভাপতি ও সম্পাদক পদের প্রার্থীদের  নাম সংগ্রহ করা হয়। এ সময় সভাপতি পদে চারজন ও সাধারণ সম্পাদক পদে পাঁচজন প্রার্থিতা ঘোষণা করেন। এ সময় প্রার্থীরা ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেননি। ফলে ভোটের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়।

কিন্তু ভোটে যেতে রাজি হননি অধ্যাপক জাকির। পরবর্তীতে কমিটি গঠনে শীর্ষ নেতাদের কাছে দায়িত্ব তুলে দেন প্রার্থীরা। এ সময় শীর্ষ দুই পদসহ তিন পদে নেতৃত্ব নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু সাধারণ সম্পাদক পদে শফিকুল ইসলাম আলকাছ প্রার্থিতা ঘোষণা না করেও অধ্যাপক জাকিরের চমকে সম্পাদক হয়ে যান। এমন পরিস্থিতিতে নেতা-কর্মীরা উত্তেজিত হয়ে ভাঙচুর শুরু করলে সম্মেলনস্থল থেকে পালিয়ে যান অধ্যাপক জাকির। আর নেতা-কর্মীদের তোপের মুখে পড়ে কমিটি স্থগিত করেন নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ। সম্মেলনস্থলে ভাংচুরকান্ডে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং তিনজনকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন বলেন, ‘আমরা সুন্দরভাবে সম্মেলন করেছি। কমিটিও ঘোষণা করেছি। পরে হয়তো সামান্য বিশৃঙ্খলা হয়েছে।’
এক প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক জাকির বলেন, ‘পালিয়ে আসব কেন? এটা তো আমার এলাকা। আর সবার ঐকমত্যের ভিত্তিতে কমিটি গঠন করেছি। পছন্দের কোনো প্রার্থী নাই, যারা আওয়ামী লীগ করে সবাই আমার পছন্দের লোক।’

কেন ভোটে যাননি প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক জাকির বলেন, ‘কমিটিতে ঝামেলা আছে এ জন্য আমরা ভোটে যাইনি। প্রার্থীরা আমাদের ওপর দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছেন।’
এসব বিষয়ে নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ বলেন, ‘সম্মেলনে আমরা কমিটি ঘোষণা করলে কিছু বিশৃঙ্খলা হয়। এ সময় সেক্রেটারি আমাদের রেখে চলে যান। পরবর্তীতে আমরা কমিটি স্থগিত করে এসেছি।’