জরাজীর্ণ ভবনে ডাকসেবা

কেশবপুর (যশোর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২০ মার্চ ২০২২, ১৫: ২৫

জরাজীর্ণ ভবনে ঝুঁকির মধ্যে চলছে যশোরের কেশবপুর উপজেলা পোস্ট অফিসের কার্যক্রম। ছাদের ভীমে ফাটল ও পলেস্তারা খসে পড়া একটি কক্ষে পোস্ট মাস্টার, পোস্টাল অপারেটর ও পোস্টম্যানেরা ঝুঁকি নিয়েই কাজ করছেন। এ অবস্থায় ভবনটির সংস্কার কিংবা পোস্ট অফিসের জন্য নতুন ভবন নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন এখানকার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

গতকাল শনিবার পোস্ট অফিসে গিয়ে দেখা গেছে, পোস্ট মাস্টারের মাথার ওপরের বৈদ্যুতিক পাখার হুক ভেঙে ও পলেস্তারা খসে পড়েছে। ঝুলে আছে বিদ্যুতের তার। অফিসের ৩টি বৈদ্যুতিক পাখা খুলে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া ভবনের পেছনে পোস্ট মাস্টারের আবাসিক ভবনটির অবস্থাও জরাজীর্ণ। অনেক আগেই আবাসিক ভবনটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে।

আরও দেখা গেছে, পাশের ছোট একটি কক্ষে পোস্ট ই-সেন্টারে কম্পিউটারের প্রশিক্ষণ চলে সারা বছর। কিন্তু ভবনের ভেতরে বা বাইরে প্রশিক্ষণার্থী ও সেবা প্রত্যাশীদের জন্য কোনো ওয়াশ রুম এবং শৌচাগার নেই।

জানা গেছে, উপজেলা পোস্ট অফিসের নতুন ভবন উদ্বোধন করা হয় ১৯৮০ সালে। কেশবপুর পৌর শহরের ৪ নম্বর আলতাপোল ওয়ার্ডের উত্তর অংশে হাসপাতাল সড়কের পাশে ভবনটি নির্মাণ করা হয়। পৌরসভা ও সদর ইউনিয়ন ছাড়াও আশপাশের ইউনিয়নের মানুষ ওই পোস্ট অফিস থেকে ডাকসেবা নিয়ে থাকেন। তা ছাড়া প্রতিদিন উপজেলার ২৪টি শাখা পোস্ট অফিসের চিঠিপত্র আদান-প্রদান ও অন্যান্য ডাকসেবার সমন্বয় এ পোস্ট অফিস থেকে করা হয়ে থাকে।

গত চার দশকে পোস্ট অফিসের দুই পাশের সড়ক দুটিকে কয়েকবার সংস্কার করা হয়েছে। একাধিকবার সংস্কারের ফলে সড়ক দুটি উঁচু হয়ে যাওয়ায় পোস্ট অফিস ভবনটি চলে গেছে দুই থেকে আড়াই ফুট নীচে। ফলে বর্ষাকালে ভবনের চারপাশে পানি জমে স্যাঁতসেঁতে পরিবেশের সৃষ্টি হয়। বেশ কয়েক বছর আগে কক্ষটির ছাদ থেকে পলেস্তারা খসে পড়া শুরু হয়েছে। এখানে সেবা নিতে আসা মানুষেরা বলছেন, তাঁরাও ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। যে কোনো মুহূর্তে ছাদের পলেস্তারা খসে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা করছেন অনেকেই।

দায়িত্ব প্রাপ্ত পোস্টাল অপারেটর পলাশ কুমার আইচ বলেন, ‘গত বছর ছাদের পলেস্তারা ও পোস্ট মাস্টারের মাথার ওপরের বৈদ্যুতিক ফ্যানটি হুকসহ খসে পড়ে। অল্পের জন্য দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পান পোস্ট মাস্টার। এরপর থেকে অন্য ৩টি বৈদ্যুতিক ফ্যানও খুলে রাখা হয়েছে। অন্যান্য ডাকসেবা ছাড়াও শুধু সঞ্চয়পত্র সংক্রান্ত কাজে আসা ব্যক্তিদের প্রতিদিন কিছু সময় অপেক্ষা করতে হয়। গরমের মধ্যে ফ্যান না থাকায় সেবাপ্রত্যাশীসহ আমাদেরও চরম বিপাকে পড়তে হবে।’ 
পোস্টমাস্টার রবিউল হক রয়েল বলেন, ‘পোস্ট অফিসের ফাটল ধরা ভবনে ঝুঁকি নিয়েই কাজ করতে হচ্ছে। ভবনের ভেতরে ভালো কোনো ওয়াশ রুম নেই। পরিচিতজনেরা ওয়াশ রুমের কথা বললে লজ্জায় পড়তে হয়। স্টাফরা নানান সংকটের মধ্য দিয়েই কাজ করে যাচ্ছেন। পথচারীরা ভবনের পাশে মলমূত্র ত্যাগ করেন। তা ছাড়া বৃষ্টির পানি জমে স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে নানা সমস্যা দেখা দেয়।’

যশোর ডাক বিভাগের ডেপুটি পোস্ট মাস্টার জেনারেল মিরাজুল হক বলেন, ‘কেশবপুর উপজেলা পোস্ট অফিস ভবনটির জরাজীর্ণ অবস্থার বিষয়টি আমার অবগত আছে। নতুন ভবনের জন্য প্রস্তাবনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। খুব শিগগিরই নতুন ভবনের বরাদ্দ আসবে বলে আশা করা যায়।’ 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আবু সাঈদকে ৪–৫ ঘণ্টা পরে হাসপাতালে নেওয়া হয়—শেখ হাসিনার দাবির সত্যতা কতটুকু

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

বিমানবন্দরে সাংবাদিক নূরুল কবীরকে হয়রানির তদন্তের নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

হইহুল্লোড় থেমে গেল আর্তচিৎকারে

ভারত ও তরুণ প্রজন্মের নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রসঙ্গে যা বললেন মির্জা ফখরুল

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত