Ajker Patrika

হেলে পড়ল নবনির্মিত ভবন

গাজী আব্দুল কুদ্দুস, ডুমুরিয়া
আপডেট : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১১: ১৫
হেলে পড়ল নবনির্মিত ভবন

ডুমুরিয়ায় একটি বিদ্যালয়ের চারতলা একাডেমিক ভবন নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার আগেই হেলে পড়েছে ও দেবে গেছে। এই অবস্থায় ঠিকাদার নির্মাণকাজ চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, প্রায় ৩ কোটি টাকা ব্যয়ে উপজেলার পল্লিশ্রী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের চারতলা একাডেমিক ভবন নির্মাণকাজ এখন শেষ পর্যায়ে। উপজেলার শোভনা ইউনিয়নের পার মাদারতলা এলাকায় এ স্কুলটি অবস্থিত। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগ ও শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পের আওতায় ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এ স্কুল ভবন নির্মাণকাজের জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হয়।

খুলনার দৌলতপুরের এমএসরৈতি এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি পায়। ১৮ মাসে কাজ শেষ করার সময় বেঁধে দিলেও নির্ধারিত সময়ের দ্বিগুণ সময়েও ভবনের মাত্র ৮০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এরই মধ্যে নির্মাণাধীন ভবনের পেছনের (উত্তর) পাশ দেবে গিয়ে কিছুটা হেলে পড়লেও কাজ অব্যাহত রেখেছেন শ্রমিকেরা।

বিদ্যালয় এলাকার আশপাশে বসবাসরত বাসিন্দা বৃদ্ধা আজিরুন বেগম, সুমন মণ্ডলসহ অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্কুল এলাকার উত্তর পাশে বড় ধরনের জলাশয় (পুকুর) ছিল। যেখানে মাছ চাষ হতো। বছর পাঁচেক আগে জলাশয়টি বালু দ্বারা ভরাট করা হয়। প্রথমে পিলার (পাইলিং) করার সময় তা হেলে পড়েছিল। যাঁরা কাজ করছিলেন, তাঁরা রাগ করে চলে গিয়েছিলেন। পরে আবার বালু দিয়ে কাজ শুরু করা হয়। এখন তো স্কুল ভবন হেলে পড়েছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য দেবব্রত সরদার ও মৃণাল কান্তি বিশ্বাস বলেন, ‘ভবনটি প্রায় দুই ফুটের মতো উত্তরে হেলে পড়েছে। পরে পেছন দিকে একটু গাঁথুনি বাড়িয়ে সমান করা হয়। তবে ফ্লোরগুলো এখনো ডাউন। এভাবে থাকলে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করতে হবে।’

পল্লিশ্রী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রভাস মণ্ডল বলেন, ভবন নির্মাণের শুরুতে পাইলিং করার সময় পিলার দেবে গেলে তা তুলে আবারও পাইলিং করা হয়। তারপরও ছয় ইঞ্চির মতো দেবে যাওয়ায় ভবনটি হেলে পড়ে। এরপর আর কোনো সমস্যা হয়নি। কিন্তু বৈদ্যুতিক লাইনের কারণে করা যায়নি। প্রকৌশলীরা বলেছেন, এতটুকু সমস্যায় কিছুই হবে না। তবে ভবনের ডিজাইনে ত্রুটি আছে বলে মনে করেন তিনি।

বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি ও স্থানীয় পল্লিশ্রী মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ সুভাষ চন্দ্র সরদার বলেন, ভবনটি ব্যবহারে একটু ঝুঁকি রয়েই যাবে। কারণ ভবন নির্মাণের পর এমনিতেই কম-বেশি দেবে যায়। এ ভবন তো কাজ শেষের আগেই দেবে গেছে। একই প্রকল্পের আওতায় গত দুই বছর আগে নির্মাণকাজ শেষ হওয়া পল্লিশ্রী মহাবিদ্যালয় ও পল্লিশ্রী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের চারতলাবিশিষ্ট একাডেমিক ভবনের পূর্ব পাশ ছয় ইঞ্চির মতো দেবে গেছে। ওই এলাকার মাটির গুণাগুণের সঙ্গে সমন্বয় রেখে ভবনের নকশা তৈরি না হওয়ায় এমন সমস্যা দেখা দিচ্ছে বলে মনে করেন তিনি।

কাজের দায়িত্ব পাওয়া ঠিকাদার টিপু হাওলাদার দাবি করেন, নির্ধারিত স্থানে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ভবন করতে দেয়নি। তাঁদের কারণেই ডোবা ভরাটের ওপর কাজ করতে হয়েছে। কাজ করার সময় পেছন পাশটা একটু হেলে যায়। খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশলীদের দেখানো হলে তাঁরা সমস্যা হবে না জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল দপ্তরের একজন অবসরপ্রাপ্ত সহকারী প্রকৌশলী মো. আতিয়ার রহমান বলেন, ভবনের নকশা, নির্ধারিত স্থানের মাটি পরীক্ষা ও পাইলিংয়ে কারিগরি ত্রুটির কারণে ভবন দেবে গিয়ে থাকতে পারে। শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর খুলনা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। খবর নিয়ে সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বিলুপ্তের সিদ্ধান্ত হয়নি, নাহিদের মন্তব্যের জবাবে উমামা

জাতীয় নির্বাচন: ভোট কমিটির নেতৃত্বে ডিসি–ইউএনওকে না রাখার চিন্তা

আ.লীগ নেতার গ্রেপ্তার নিয়ে রাজশাহীতে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ

খামেনিকে চিঠি দিয়ে যে প্রস্তাব দিলেন ট্রাম্প

ঢাবি ছাত্রীকে যৌন হেনস্তাকারী বাধ্যতামূলক ছুটিতে, মামলা এখন আদালতের এখতিয়ারে

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত