Ajker Patrika

পর্যটকে মুখরিত কক্সবাজার

মাইনউদ্দিন শাহেদ, কক্সবাজার
আপডেট : ১২ অক্টোবর ২০২৪, ১০: ৩১
পর্যটকে মুখরিত কক্সবাজার

দুর্গাপূজার সঙ্গে সাপ্তাহিক ছুটি মিলিয়ে চলছে চার দিনের ছুটি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও ১৯ অক্টোবর পর্যন্ত ছুটি চলছে। এই সুযোগে ভ্রমণপিপাসুরা বেরিয়ে পড়েছেন। পার্বত্য তিন জেলায় ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা থাকায় তার প্রভাব পড়েছে কক্সবাজারে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, আগামীকাল রোববার পর্যন্ত কক্সবাজার শহরের পাঁচ শতাধিক হোটেল-মোটেল ও রিসোর্টের সিংহ ভাগ কক্ষ ভাড়া হয়ে গেছে। পাশাপাশি পর্যটনসংশ্লিষ্ট ব্যবসা-বাণিজ্যেও চাঙাভাব।

সম্প্রতি দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে পর্যটকশূন্য হয়ে পড়েছিল কক্সবাজার। সেই খরা কাটাতে হোটেল-মোটেল ও পর্যটনসংশ্লিষ্ট সেবা খাতগুলোয় আকর্ষণীয় ছাড় দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাতেও পর্যটক মেলেনি। তবে পর্যটন মৌসুমের শুরুতে লম্বা ছুটি পেয়ে এবার কক্সবাজারমুখী হয়েছেন পর্যটকেরা।

গতকাল শুক্রবার সকাল থেকেই কক্সবাজারে ছিল তপ্ত রোদ। এর মধ্যেই দুপুর ১২টার দিকে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের সুগন্ধা পয়েন্ট ছিল পর্যটকদের পদচারণে মুখর। সেখানে দুটি ঘোড়া নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন ফরিদা আক্তার। তিনি ঘোড়া মালিক সমিতির সভাপতি। তাঁদের সমিতির অধীনে ৬০টির মতো ঘোড়া আছে।

মুখভরা হাসি নিয়ে ফরিদা বলেন, ‘চার মাস পর্যটক ছিল না। সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছিলাম। দেশের পরিস্থিতিও ভালো যাচ্ছিল না। তবে পর্যটনের মৌসুমটা শুরু হলো ভালো পর্যটক সমাগম দিয়ে। আশা করি সামনের দিনগুলো ভালো যাবে।’

ফরিদা আক্তারের মতো হাজারো পরিবারের কর্মসংস্থানের জায়গা লাবণী পয়েন্ট থেকে কলাতলী পর্যন্ত তিন কিলোমিটার সমুদ্রসৈকত। এখানে পর্যটনসংশ্লিষ্ট অন্তত ২২ খাতের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও হকাররা নব উদ্যমে ব্যবসায় নেমেছেন।

দুপুরে সমুদ্রে ভাটার সময় লাল পতাকা ওড়ানো হয়। জেগে ওঠা বিস্তীর্ণ বালিয়াড়িতে আনন্দ-উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠেন পর্যটকেরা। কেউ বিচ বাইক, কেউ ঘোড়ায়, আবার কেউ ওয়াটার বাইকে চড়ে সাগরের নীল জলরাশি দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। ভাটার সময় সাগরমুখী টান প্রবল থাকায় লাইফ গার্ডকর্মীরা পর্যটকদের গোসলে নামতে নানাভাবে সতর্ক করছিলেন। সি সেইফ লাইফ গার্ডের সুপারভাইজার সাইফুল্লাহ সিফাত বলেন, ‘সাগরের অবস্থা না বুঝে গোসলে নেমে পড়েন অনেকে। কথা শুনতে চান না। এতে অনেকে বিপদে পড়েন।’

কুমিল্লার দেবিদ্বার থেকে সপরিবারে এসেছেন আদিলুর রহমান। তিনি একটি বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি করেন। আদিলুর বলেন, ‘চার দিন ছুটি পেয়েছি। বাচ্চাদের স্কুলও বন্ধ। পাহাড়-সমুদ্র দুটিই দেখার সুযোগ আছে কক্সবাজারে। এ জন্য বরাবরের মতো এখানেই এসেছি।’ পাবনার ঈশ্বরদীর আবদুল ওহাবও এসেছেন পরিবার নিয়ে। তিনি বলেন, ‘পর্যটকের চাপ বেড়ে যাওয়ায় খাবারদাবারে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।’

কক্সবাজার শহর ছাড়াও মেরিন ড্রাইভ, দরিয়ানগর পর্যটনপল্লি, হিমছড়ির জাতীয় উদ্যান, ছড়া ও ঝরনা, ইনানী ও পাটুয়ারটেক পাথুরে সৈকত, টেকনাফ, মহেশখালীর আদিনাথ মন্দির, রামু বৌদ্ধপল্লি, চকরিয়ার ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক ও নিভৃতে নিসর্গেও পর্যটক ভিড় করছেন বলে জানা গেছে।

কক্সবাজার শহরের পাঁচ শতাধিক হোটেল-মোটেল, গেস্ট হাউসে ও রিসোর্টে ১ লাখ ৭০ হাজার পর্যটক রাত যাপনের ব্যবস্থা রয়েছে বলে জানান ফেডারেশন অব ট্যুরিজম ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ কক্সবাজারের সাধারণ সম্পাদক ও হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার। তিনি বলেন, ‘শুক্র থেকে রোববার পর্যন্ত তারকা ও মাঝারি মানের সব হোটেল-মোটেলে শতভাগ কক্ষ বুকিং হয়েছে।’

ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার অঞ্চলের সহকারী পুলিশ সুপার আবুল কালাম জানান, পর্যটকের বাড়তি চাপ সামাল দিতে ট্যুরিস্ট পুলিশের টহল ও সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন বলেন, ‘চলতি মৌসুমে এবারের ছুটিতে সর্বোচ্চ পর্যটক এসেছে। ভ্রমণে এসে যেন কোনো পর্যটক হয়রানির শিকার না হন, তার জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে একাধিক ভ্রাম্যমাণ আদালত মাঠে নামানো হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

চীন সফরে সেভেন সিস্টার্স নিয়ে ড. ইউনূসের বক্তব্যে ভারতে তোলপাড়

বাংলাদেশের ১৮ বছরের সেই অপেক্ষা তবে ফুরোচ্ছে

খাবারে চেতনানাশক মিশিয়ে সিঁধ কেটে চুরির সময় গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগ

জুলাই আন্দোলনের নারীদের সম্মাননা নিয়ে প্রশ্নে যা বলল মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর

চোর সন্দেহে যুবককে পিটুনি, প্রতিবাদ করায় দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত