আ.লীগের সংগ্রাম ও অর্জনের ৭৩ বছর

শেখ মাজেদুল হক
প্রকাশ : ২৪ জুন ২০২২, ০৭: ৪৩
আপডেট : ২৪ জুন ২০২২, ১৭: ০৮

গৌরব-ঐতিহ্যের ধারক-বাহক, আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্বদানকারী সংগঠন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ও প্রাচীন রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ পূর্ণ করেছে ৭৩ বছর। ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী রোজ গার্ডেনে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে এই রাজনৈতিক দলটি প্রতিষ্ঠিত হয়।

প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই ধর্মনিরপেক্ষ-অসাম্প্রদায়িক রাজনীতি, বাঙালি জাতীয়তাবাদ, গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি, শোষণমুক্ত সাম্যের সমাজ নির্মাণের আদর্শ এবং একটি উন্নত সমৃদ্ধ আধুনিক, প্রগতিশীল সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থা বিনির্মাণের রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দর্শনের ভিত্তি রচনা করে আওয়ামী লীগ। যার পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৫৫ সালের কাউন্সিলে অসাম্প্রদায়িক নীতি গ্রহণের মাধ্যমে সংগঠনটির নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ’।

১৯৫২ সালের মায়ের ভাষা বাংলা প্রতিষ্ঠার আন্দোলন হয়েছিল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে যুক্তফ্রন্ট পাকিস্তানের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে সরকার গঠন করেছিল। ’৬২ সালে গণবিরোধী শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন, ’৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলন, ’৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থানসহ সব আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।

’৭০-এর নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করার পরও পাকিস্তানিরা ক্ষমতা হস্তান্তরে গড়িমসি করলে ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে তিনি স্বাধীনতার ডাক দেন। আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীরা এ দেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে পাকিস্তানিদের এ দেশ থেকে তাড়িয়ে একটি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ বিশ্বের মানচিত্রে উপহার দেয়।

স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব বাংলাদেশ যখন অর্থনৈতিক মুক্তির পথে এগিয়ে যাচ্ছিল তখনই কুচক্রী মহল জাতির পিতাকে সপরিবারে এবং জেলখানায় জাতীয় চার নেতাকে হত্যার মাধ্যমে এই সংগঠনকে নিশ্চিহ্ন করার অপচেষ্টা চালায়।

১৯৮১ সালের ১৭ মে আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা দেশে ফিরে আসেন। দলের নেতা-কর্মীরা নব-উদ্যামে সংগঠিত হয়। আওয়ামী লীগ এ দেশের মাটি ও মানুষের দল। ১৯৯৬ সালে জনগণের ভোটে আবারও রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয় আওয়ামী লীগ। ১৯৯৬-এর সরকার ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণে অগ্রণী ভূমিকা রাখে।

২০০৮ সালে পুনরায় সরকার গঠন করে ‘রূপকল্প ২০২১’-এর আলোকে মধ্যম আয়ের সুখী-সমৃদ্ধিশালী ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখান বঙ্গবন্ধুর কন্যা। পরে তিনি ‘রূপকল্প ২০৪১’-এর আলোকে বাংলাদেশকে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ, আধুনিক দেশ হিসেবে বিনির্মাণের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

আওয়ামী লীগের ইতিহাস বাঙালি জাতির গৌরবোজ্জ্বল অর্জন ও সংগ্রামের ইতিহাস। জাতির পিতার নেতৃত্বে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাসহ বাঙালি জাতির যা কিছু শ্রেষ্ঠ অর্জন, তার মূলে রয়েছে জনগণের এই প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্ব। জন্মলগ্ন থেকে এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের শক্তির উৎস জনগণ, শক্তির উৎস সংগঠনের তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা। আওয়ামী লীগের লক্ষ্য-দেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের ‘সোনার বাংলাদেশ’ এবং বাঙালি জাতিকে বিশ্বের বুকে একটি আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা।

লেখক: সহযোগী অধ্যাপকমার্কেটিং বিভাগবেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি চাকরিজীবীরা সম্পদের হিসাব না দিলে যেসব শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন

শেখ হাসিনাকে নিয়ে যুক্তরাজ্যে এম সাখাওয়াতের বিস্ফোরক মন্তব্য, কী বলেছেন এই উপদেষ্টা

শিক্ষকের নতুন ২০ হাজার পদ, প্রাথমিকে আসছে বড় পরিবর্তন

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

শ্রীপুরে পিকনিকের বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু, আহত ৩

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত