প্রতিবন্ধী হাবুর পাশে এসপি

ঘিওর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১২: ০৫
Thumbnail image

মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার পয়লা গ্রামে ২২ বছর ধরে দড়িতে বাঁধা প্রতিবন্ধী হাবিবুর রহমান হাবুর বাড়িতে হঠাৎ হাজির পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান। তিনি হাবুর পরিবারের খোঁজ নেন। তাঁদের একটি ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার পাশাপাশি প্রতি মাসে আর্থিক সহায়তা দেওয়া এবং হাবুর উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করার আশ্বাস দেন।

গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে হাবুর বাড়িতে যান এসপি। তাঁকে দেখে এবং পাশে দাঁড়ানোর আশ্বাস পেয়ে বিস্মিত হাবুর মা-বাবা। এ সময় হাবুর মায়ের হাতে নগদ টাকা দিয়ে হাবু বলেন, ‘ভরসা রাখুন। মানিকগঞ্জ পুলিশ আপনার পাশে আছে।’

সম্প্রতি আজকের পত্রিকায় ‘২২ বছর দড়িতে বাঁধা জীবন’ শিরোনামে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সংবাদটি তাঁর দৃষ্টিগোচর হলে এসপি সরেজমিনে হাবুর বাড়ি পরিদর্শনে আসেন। এ সময় তিনি সেদিনের পত্রিকার একটি কপিও সঙ্গে আনেন। তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শিবালয় সার্কেল) তানিয়া সুলতানা, ঘিওর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মো. হাবিবুর রহমান হাবিব, ঘিওর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বিপ্লব, পরিদর্শক (তদন্ত) মহব্বত খান, পয়লা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মো. হারুন অর রশিদ, ঘিওর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক রাম প্রসাদ সরকার দীপু প্রমুখ।

মানসিক ভারসাম্যহীন হাবু (৩৪) কথাও বলতে পারেন না। চোখের আড়াল হলেই যে দিক মন চায় চলে চান। এ কারণে তাঁকে রশি দিয়ে বেঁধে রেখে অন্যের বাড়িতে কাজ করেন পঞ্চাশ ঊর্ধ্ব মা সামেলা বেগম। আর তাঁর বাবা মো. মন্জুর আলী দিনমজুর। এখন অসুস্থ হয়ে কর্মহীন। মা সামেলাও নানা অসুখে ভুগছেন। ভারী কোনো কাজ করতে পারেন না তিনি।

এসপির আশ্বাসে হাবুর মা-বাবা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। তাঁরা বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। ছেলেকে দেখতে এত বড় বড় মানুষ বাড়িতে আসছে। আমরা খুব খুশি। আল্লাহর কাছে দোয়া করি, আল্লাহ যেন তাঁদের ভালো করেন।’

জানতে চাইলে এসপি মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান বলেন, ‘হাবুর ঘটনাটি মনে দাগ কাটে। পরে খোঁজ খবর নেই। শেষমেশ আমরা তাঁদের বাড়ি এসে দেখলাম। আমরা পরিবারটির পাশে দাঁড়াব। হাবুর বাড়িতে একটা ঘরের ব্যবস্থা করে দেব, যাতে তাঁকে আর বাইরে থাকতে না হয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রতি মাসে চিকিৎসা বাবদ কিছু আর্থিক সহায়তা করব। এ ছাড়া আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে ওর চিকিৎসা করার ব্যবস্থা করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত