Ajker Patrika

মাল্টাবনে তিতিরের কলরব

সাইফুল আলম তুহিন, ত্রিশাল (ময়মনসিংহ)
আপডেট : ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৮: ৫০
মাল্টাবনে তিতিরের কলরব

গাছ ভরে আছে মাল্টায়। একটা-দুটো নয়, দুই একর জমিজুড়েই এমন শত শত মাল্টার গাছ ফলের ভারে যেন নুয়ে পড়তে চাইছে। কোনো কোনো গাছ তো লাঠি দিয়ে ঠেকনা দিতে হয়েছে। শুধু মাল্টা নয়, দেশি-বিদেশি আরও নানা প্রজাতির ফলদ ও ঔষধি গাছ রয়েছে মাল্টাগাছের ফাঁকে ফাঁকে। এর মাঝেই এখানে সেখানে দৌড়ে বেড়ায় পাঁচ শতাধিক তিতির পাখি।

ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার মোক্ষপুর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চল কৈতরবাড়ী গ্রামে গেলে এই খামারের দেখা মেলে। এর উদ্যোক্তা রফিকুল ইসলাম। এখন তাঁর চোখমুখে বিজয়ীর হাসি। তাঁর এই বহুমুখী খামারের সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে অনেকেই এখন এমন খামার করতে উদ্যোগী হয়েছেন। প্রতিদিনই কেউ না কেউ রফিকের কাছে আসেন এ ধরনের খামার গড়ে তোলার কলাকৌশল জানতে।

তবে রফিকের শুরুটা এমন সুখকর ছিল না। সংসারে সুদিন আনতে একসময় প্রবাসজীবন বেছে নিয়েছিলেন। রফিক জানান, বেশ কয়েক বছর বিদেশে কাটিয়ে দেশে ফেরেন তিনি। ২০১৪ সালে বাড়ির পাশের দুই একর অনাবাদি জমিতে মাল্টার চাষ শুরুর মাধ্যমে যাত্রা শুরু হয় তাঁর ‘রফিক ফলদ ও কৃষি খামার’-এর। এরপর গড়ে তোলেন এই খামারটি। বাড়ির পাশের দুই একর অনাবাদি জমিতে প্রথমে মাল্টার চাষ শুরু করেন। এই ফলদ বাগানই তাঁর ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে দেয়। এরপর খামারে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রজাতির ফলদ ও ঔষধি গাছও রোপণ করেন। এখন তাঁর খামারে রয়েছে মরিয়ম ও বারবারি জাতের খেজুরগাছও। রয়েছে বিশেষ উপকারী করোসলগাছ। সুস্বাদু শণ ফলও লাগিয়েছেন রফিক। আছে দেশীয় বিভিন্ন ফল গাছের সমাহারও। তাঁর খামারের আয়তন বেড়ে এখন হয়েছে ছয় একর। এখানে জামরুল, সফেদা, আনার, ডালিম ও মসলা-জাতীয় এলাচিসহ ২৬ প্রজাতির গাছ রয়েছে। পাশাপাশি খামারেই পাঁচ শতাধিক তিতির পাখিও লালন-পালন করছেন রফিক।

রফিক আজকের পত্রিকাকে জানালেন, গত বছর তিনি মাল্টাসহ অন্যান্য ফলফলাদি বিক্রি করে আয় করেছেন ১০ লাখ টাকা। খরচ হয়েছে ৪ লাখ টাকা। এখানে উৎপাদিত মাল্টা যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। দেশের অর্থনীতিতে ও পুষ্টি চাহিদা পূরণে বিশেষ অবদান রাখায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বেশ কয়েকটি সম্মাননা ক্রেস্ট ও প্রশংসাপত্রও পেয়েছেন তিনি।

সফল খামারি রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমি প্রবাসে অনেক পরিশ্রম করেও সংসারে সুদিন আনতে পারছিলাম না। তবে দেশে ফিরে খামার করে সফলতা পেয়েছি। খামার থেকে যে টাকা আয় হয় তা দিয়েই খামারের পরিধি বাড়িয়েছি। আর তিতির পাখিগুলো আমার শখের ও ভালোবাসার। এটিও বেশ লাভজনক।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তানিয়া রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, রফিক নিজ উদ্যোগেই বাগান করেছেন। ওই বাগানে কোনো প্রকার রাসায়নিক দ্রব্যের ব্যবহার হয় না। তাঁকে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। তাঁর বাগানের ফলগুলো অত্যন্ত সুস্বাদু। তাঁকে দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে বেশ কয়েকজন স্থানীয় কৃষক ফলদ বাগান করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আমিনুল ইসলাম নন, শিক্ষা উপদেষ্টা হচ্ছেন অধ্যাপক আবরার

গণপিটুনিতে নিহত জামায়াত কর্মী নেজাম ও তাঁর বাহিনী গুলি ছোঁড়ে, মিলেছে বিদেশি পিস্তল: পুলিশ

উপদেষ্টা হচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আমিনুল ইসলাম

বসুন্ধরায় ছিনতাইকারী সন্দেহে ২ বিদেশি নাগরিককে মারধর

বিএনপির দুই পেশাজীবী সংগঠনের কমিটি বিলুপ্ত

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত