মেঘনার তীরে বাঁধ নির্মাণকাজে অনিয়মের অভিযোগ

নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ৩০ জানুয়ারি ২০২২, ০৭: ৩৪
আপডেট : ৩০ জানুয়ারি ২০২২, ১১: ৩৬

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের বড়িকান্দি ইউনিয়নে মেঘনা নদীর তীরে বাঁধ নির্মাণকাজে অনিয়ম ও ধীরগতির অভিযোগ উঠেছে। প্রায় ৭১ কোটি টাকার এ বাঁধ নির্মাণকাজ চলছে কচ্ছপগতিতে। বাঁধের ব্লক তৈরিতে ব্যবহার হচ্ছে নিম্নমানের পাথর। এ ছাড়া উপকরণ মিশ্রণে সিমেন্টের সঙ্গে সাদা বিটি বালু কম দেওয়া হচ্ছে বলেও জানা গেছে।

এতে তীর রক্ষায় এ বাঁধ কতটা সুফল দেবে, তা নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে সংশয় দেখা দিয়েছে। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে শুরু হলেও এখনো শেষ হয়নি কাজ। এ নিয়ে স্থানীয় সাংসদ বারবার ঠিকাদারকে দ্রুত কাজ সম্পন্ন করার তাগিদ দিলেও কোনো কাজে আসছে না বলে জানা গেছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, ব্লক তৈরিতে উন্নত মানের পাথর, সিলেকশন বালু ও সিমেন্ট ব্যবহার করার কথা। অথচ ব্যবহার করা হচ্ছে মেঘনা নদী থেকে তোলা নিম্নমানের সাদা বিটি বালু, কিন্তু স্যাম্পল হিসেবে সিলেকশন মোটা বালু পাশে রাখা আছে। আর কালো পাথরের সঙ্গে মেশানো হয় লাল পাথর (মরা পাথর)। উপকরণ মিশ্রণে সিমেন্টের পরিমাণ অনেক কম ও বালুর পরিমাণ বেশি দেওয়া হচ্ছে। যে কারণে ব্লকগুলোর স্থায়িত্ব কম হবে বলে জানান এলাকাবাসী। তা ছাড়া প্রতিটি প্রকল্পের কাজের বর্ণনাযুক্ত সাইনবোর্ড টাঙানোর নিয়ম থাকলেও বেশির ভাগ প্রকল্পে টাঙানো হয়নি।

এলাকাবাসীর দাবি, টেন্ডারে এস্টিমেট যা ধরা আছে, সেভাবে কাজ করলে আগামী ৫০ বছরেও বাঁধটির কিছুই হবে না। তাই সরকার ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের ইঞ্জিনিয়ারদের কাছে সঠিকভাবে কাজের তদারকি করার জোর দাবি করছেন এলাকাবাসী।

এ ব্যাপারে স্থানীয় বাসিন্দা হাজি জলিল মিয়া, মিন্টু মিয়া ও মোস্তফা মিয়াসহ অনেকে জানান, তাঁরা দু-তিন বছর ধরে ধীরে ধীরে কাজ করছেন। তাঁরা পাশে রাখা ভালো নমুনার মালামাল কাজে ব্যবহার করেন না। কম দামে চরের বালু, ময়লা পাথর ব্যবহার করছেন এবং সিমেন্ট কম দিচ্ছেন, বালু দিচ্ছেন বেশি।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী রঞ্জন কুমার দাস বলেন, ‘করোনার কারণে গত দুই বছর কাজ করতে না পারায় কিছুটা ধীরগতিতে হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৪২ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি কাজ চলতি বছরের মধ্যে শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে। অভিযোগের কথা আমিও শুনেছি। তবে সব পর্যায়ে গুণগত মান পরীক্ষা করে ঠিকাদারের কাছ থেকে ব্লগগুলো বুঝে নেব। টেস্ট করার সময় ফেল করলে আমরা ওই ব্লক বাতিল বলে গণ্য করব। আমাদের প্রতিনিধিও সেখানে থাকে। বালু, সিমেন্ট, সিলেকশন কম দেওয়ার অভিযোগ যাচাই করে দেখব।’

নবীনগরের স্থানীয় সাংসদ মোহাম্মদ এবাদুল করিম বুলবুল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কাজটা নিয়ে আমি বিব্রত। আজ পর্যন্ত কাজটি শেষ হয়নি। আবার নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে ব্লকগুলো তৈরি করেছে বলে এলাকাবাসী আমাকে অভিযোগ দিয়েছেন। এ ছাড়া চর থেকে বালু তুলে তা ব্যবহার করছেন। কিছুদিনের মধ্যে আমি ঘটনাস্থলে যাব। কাজে অনিয়ম হলে কাউকে ছাড় দেব না।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত