রাশেদ নিজাম, ঢাকা
সড়কে গত আট বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে ২০২২ সালে। ওই বছর সড়কে প্রাণহানি ঘটেছে ৭ হাজার ৭১৩ জনের। প্রায় তিন মাস আগে শেষ হওয়া বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির সংখ্যাটিকে যেন ছাড়িয়ে যাওয়ার প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে নতুন বছরে। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) হিসাবেই, ২০২৩ সালের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে ৬৩০টি দুর্ঘটনায় মারা গেছে ৬৩৬ জন। যদিও বেসরকারি সংস্থাগুলোর হিসাবে এই সংখ্যা আরও বেশি। বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, এভাবে চলতে থাকলে চলতি বছর সড়কে মৃত্যুর সংখ্যা ছাড়িয়ে যাবে সব রেকর্ড। ট্রিপ বাড়ানোর আশায় চালকেরা ফিটনেসবিহীন গাড়ি নিয়ে আগের মতোই বেপরোয়া গতিতে ছুটে চলতে থাকলে এমন নির্মমতা থামবে না।
পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যমতে, সারা দেশে প্রায় ৮৭ শতাংশ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে চালকের বেপরোয়া গতির কারণে। ৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ দুর্ঘটনা হয় ভুল ওভারটেকিংয়ে (সামনের গাড়িকে টপকে যাওয়া)। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) দুর্ঘটনা গবেষণা কেন্দ্রের (এআরআই) তথ্যমতে, সড়কে নজরদারির চরম অভাব, আছে বিশৃঙ্খলাও। এর সুযোগ পান চালকেরা। পুলিশসহ নিয়ন্ত্রণকারীদের ম্যানেজ করে চলছে গণপরিবহন।
গত বছর বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় যারা মারা যায়, তাদের ৬৭ শতাংশই অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্ষম। এআরআইয়ের গবেষণা মতে, দেশে সড়ক দুর্ঘটনা এবং সংশ্লিষ্ট প্রভাবের কারণে বছরে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়।
বিশ্লেষকদের মতে, বিশৃঙ্খলার আয়োজনে বিআরটিএ
যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও বুয়েটের অধ্যাপক এম হাদিউজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনায় চালকদের অদক্ষতার চেয়ে বড় বিষয় হলো বিশৃঙ্খলা। যেভাবে নিয়মনীতি মানা উচিত; ধীরগতির ও দ্রুতগতির গাড়ির লেন মানা উচিত; তা মানা হচ্ছে না। দিন দিন বিশৃঙ্খলা বাড়ছে। এটা যানজট ও দুর্ঘটনার বড় কারণ। যত দিন পর্যন্ত সুশৃঙ্খল করা না যাবে, এই প্রতিযোগিতা চলতেই থাকবে। এই বিশৃঙ্খলার আয়োজন করেছে বিআরটিএ। তারা একই করিডরে মাল্টিপল অপারেটরকে লাইসেন্স দিয়েছে। বাণিজ্যিক লাভের জন্য ট্রিপ হিসাবে গাড়ি চালানো হয়। চালকও বেশি টাকার আশায় প্রতিযোগিতায় নামে। নিজে অসুস্থ হয়, উগ্র হয়ে যায়।’
যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘চালকের চোখে ঘুম, লাইসেন্সের মেয়াদ নেই, টায়ার নষ্ট, গাড়ির ফিটনেস নেই, আবার অতিরিক্ত গতি; ওই চালক একটানা আট ঘণ্টার বেশি গাড়ি চালাচ্ছিলেন। মাদারীপুরের একটা দুর্ঘটনা থেকেই সবকিছু আমাদের সামনে পরিষ্কার। এসব কিছুর জবাব দিতে পারবে বিআরটিএ এবং মন্ত্রণালয়।’
মোটরসাইকেল, ফিটনেসবিহীন যানে বাড়ছে দুর্ঘটনা
পরিবহন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে মোটরসাইকেল বেড়ে যাওয়া এবং সড়কে কোনো নিয়ন্ত্রণ না থাকায় দুর্ঘটনা বাড়ছে। সরকার বিভিন্ন সময় জাতীয় মহাসড়ক এবং গুরুত্বপূর্ণ সড়কে ছোট অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধ করার ঘোষণা দিলেও তা সফল হয়নি। সাড়ে ৫৬ লাখ বাহনের ৪০ লাখই মোটরসাইকেল। কিন্তু হেলমেট পরিধান নিশ্চিত করা, গতি নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং চালকের লাইসেন্স থাকার বিষয়টিও সেভাবে নজরদারিতে নেই।
বিআরটিএর গত বছরের হিসাব অনুযায়ী, দেশে ৪০ লাখের বেশি মোটরসাইকেল নিবন্ধিত থাকলেও লাইসেন্স আছে ২৫ লাখেরও কম। অর্থাৎ ১৫ লাখ মোটরসাইকেলের বৈধ চালক নেই।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘৪০ শতাংশ মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মানুষ মারা যাচ্ছে। আমরা নীতিমালা করছি।’
বিআরটিএর হিসাবে, গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশে মোটরচালিত নিবন্ধিত যানবাহনের সংখ্যা ৫৬ লাখ ৬১ হাজার ৪১৮। এর মধ্যে মোটরসাইকেলই ৪০ লাখ ৬৫৭টি এবং বাস ৫২ হাজার ৪৬৮। এ দুটোই দেশে সড়ক দুর্ঘটনার বড় কারণ বলে উঠে আসছে বিভিন্ন গবেষণায়। সম্প্রতি মাদারীপুরের শিবচরে দুর্ঘটনার পরও সামনে আসে ইমাদ পরিবহনের বাসের চালকের ক্লান্তি, বেপরোয়া গতি এবং গাড়ির ফিটনেস না থাকার বিষয়টি।
দেশে ৫ লাখ ফিটনেসবিহীন যানবাহন থাকার তথ্য অনেক পুরোনো হওয়ায় হালনাগাদ করার চেষ্টা চালাচ্ছে বিআরটিএ। সংস্থার এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘সংখ্যাটা ১০ লাখের কাছাকাছি হবে। তবে তথ্য পাওয়ার আগপর্যন্ত নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না।’
অভিযোগ নিয়ন্ত্রণকারীদের বিরুদ্ধে
যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশে পরিবহনও নিয়ন্ত্রণ হতে হবে ডিজিটালি। কোন গাড়ির ফিটনেস সনদ স্থগিত, রুট পারমিট স্থগিত আছে; ঘরে বসেই দেখতে পাওয়া উচিত। এটা দেখার দায়িত্ব নিয়ন্ত্রণকারীদের। কিন্তু যাঁরা দেখবেন, তাঁরা সহজেই ম্যানেজ হয়ে যান।’
হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত আইজি মো. শাহাবুদ্দিন খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, নজরদারি শতভাগ না হলেও পুলিশের পক্ষ থেকে মামলা ও সতর্ক করার মতো বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়। তিনি জানান, গত বছর মহাসড়কে ১ লাখ ৪১ হাজার ৮৪১টি মামলা হয়েছে। বেশি গতির জন্য মামলা দেওয়া হয়েছে ২৭ হাজার বাহনের বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, ‘মহাসড়কে পুলিশকে ম্যানেজ করে চলার বিষয়টি অস্বীকার করা যাবে না। তবে ঢালাওভাবে বললেও ঠিক হবে না। কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা আছে। যারা জড়িত তাদের শাস্তির আওতায় আনা হয়, হচ্ছে।’
এক লাইসেন্সে অন্য যান চালানো
বিআরটিএর গত বছরের হিসাব অনুযায়ী, দেশে নিবন্ধিত ভারী যানবাহনের সংখ্যা ২ লাখ ৬৪ হাজার ৩৪৪, যার বিপরীতে লাইসেন্স আছে ১ লাখ ৫ হাজার ৭৪৬ জনের। অর্থাৎ ১ লাখ ৫৮ হাজার ৫৯৮টি গাড়ি চালাচ্ছেন অন্য ক্যাটাগরির চালকেরা।
বাংলাদেশ পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বলেন, ‘দেশে চালকের সংখ্যা বেশি হলে এ অবস্থা তৈরি হতো না। বছরের পর বছর বিআরটিএ কয়েক লাখ লাইসেন্স বরাদ্দ করতে পারছে না, ফলে বাড়ছে চালকসংকট। এক লাইসেন্স দিয়ে আরেক গাড়ি চালাতে হচ্ছে।’
সার্বিক বিষয়ে মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী বলেন, সফলতার পাশাপাশি ব্যর্থতাও থাকবে। দেশের প্রায় ৫ কোটি মানুষের জীবন-জীবিকার পরিবহন পেশাকে নিরাপদ করতে কাজ চলছে।
মামলা খুবই কম
যাত্রী কল্যাণ সমিতির এক জরিপে উঠে আসে, দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ৮০ শতাংশ ভুক্তভোগী মামলা করে না। সমিতির মহাসচিব বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনার ৮০ শতাংশই আপসে সমাধান হয়ে যায়। ২০ শতাংশ মামলা হলেও তার ৯৯ ভাগ ক্ষেত্রেই আসামিরা খালাস পেয়ে যায়। শিবচরের ঘটনা দেখুন, একেকজনের একেক জেলায় বাড়ি। কীভাবে মামলা করবে? অন্য দেশে সরকার বাদী হয়ে মামলা করে।’
অতিরিক্ত আইজিপি শাহাবুদ্দিন বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের পক্ষে বেশির ভাগ মীমাংসা করে ফেলে। পুলিশের পক্ষ থেকে মামলার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু ক্ষতিপূরণ পেলে আইনের পথে আসতে চায় না। তদন্ত ঝুলে থাকার অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, কিছু বিশেষ ইস্যুতে হয়তো সময় লাগে। প্রমাণ না মেলা, সাক্ষী না পাওয়া। তবে মামলার বড় অংশই তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়।
সড়কে গত আট বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে ২০২২ সালে। ওই বছর সড়কে প্রাণহানি ঘটেছে ৭ হাজার ৭১৩ জনের। প্রায় তিন মাস আগে শেষ হওয়া বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির সংখ্যাটিকে যেন ছাড়িয়ে যাওয়ার প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে নতুন বছরে। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) হিসাবেই, ২০২৩ সালের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে ৬৩০টি দুর্ঘটনায় মারা গেছে ৬৩৬ জন। যদিও বেসরকারি সংস্থাগুলোর হিসাবে এই সংখ্যা আরও বেশি। বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, এভাবে চলতে থাকলে চলতি বছর সড়কে মৃত্যুর সংখ্যা ছাড়িয়ে যাবে সব রেকর্ড। ট্রিপ বাড়ানোর আশায় চালকেরা ফিটনেসবিহীন গাড়ি নিয়ে আগের মতোই বেপরোয়া গতিতে ছুটে চলতে থাকলে এমন নির্মমতা থামবে না।
পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যমতে, সারা দেশে প্রায় ৮৭ শতাংশ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে চালকের বেপরোয়া গতির কারণে। ৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ দুর্ঘটনা হয় ভুল ওভারটেকিংয়ে (সামনের গাড়িকে টপকে যাওয়া)। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) দুর্ঘটনা গবেষণা কেন্দ্রের (এআরআই) তথ্যমতে, সড়কে নজরদারির চরম অভাব, আছে বিশৃঙ্খলাও। এর সুযোগ পান চালকেরা। পুলিশসহ নিয়ন্ত্রণকারীদের ম্যানেজ করে চলছে গণপরিবহন।
গত বছর বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় যারা মারা যায়, তাদের ৬৭ শতাংশই অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্ষম। এআরআইয়ের গবেষণা মতে, দেশে সড়ক দুর্ঘটনা এবং সংশ্লিষ্ট প্রভাবের কারণে বছরে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়।
বিশ্লেষকদের মতে, বিশৃঙ্খলার আয়োজনে বিআরটিএ
যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও বুয়েটের অধ্যাপক এম হাদিউজ্জামান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনায় চালকদের অদক্ষতার চেয়ে বড় বিষয় হলো বিশৃঙ্খলা। যেভাবে নিয়মনীতি মানা উচিত; ধীরগতির ও দ্রুতগতির গাড়ির লেন মানা উচিত; তা মানা হচ্ছে না। দিন দিন বিশৃঙ্খলা বাড়ছে। এটা যানজট ও দুর্ঘটনার বড় কারণ। যত দিন পর্যন্ত সুশৃঙ্খল করা না যাবে, এই প্রতিযোগিতা চলতেই থাকবে। এই বিশৃঙ্খলার আয়োজন করেছে বিআরটিএ। তারা একই করিডরে মাল্টিপল অপারেটরকে লাইসেন্স দিয়েছে। বাণিজ্যিক লাভের জন্য ট্রিপ হিসাবে গাড়ি চালানো হয়। চালকও বেশি টাকার আশায় প্রতিযোগিতায় নামে। নিজে অসুস্থ হয়, উগ্র হয়ে যায়।’
যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘চালকের চোখে ঘুম, লাইসেন্সের মেয়াদ নেই, টায়ার নষ্ট, গাড়ির ফিটনেস নেই, আবার অতিরিক্ত গতি; ওই চালক একটানা আট ঘণ্টার বেশি গাড়ি চালাচ্ছিলেন। মাদারীপুরের একটা দুর্ঘটনা থেকেই সবকিছু আমাদের সামনে পরিষ্কার। এসব কিছুর জবাব দিতে পারবে বিআরটিএ এবং মন্ত্রণালয়।’
মোটরসাইকেল, ফিটনেসবিহীন যানে বাড়ছে দুর্ঘটনা
পরিবহন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে মোটরসাইকেল বেড়ে যাওয়া এবং সড়কে কোনো নিয়ন্ত্রণ না থাকায় দুর্ঘটনা বাড়ছে। সরকার বিভিন্ন সময় জাতীয় মহাসড়ক এবং গুরুত্বপূর্ণ সড়কে ছোট অবৈধ যানবাহন চলাচল বন্ধ করার ঘোষণা দিলেও তা সফল হয়নি। সাড়ে ৫৬ লাখ বাহনের ৪০ লাখই মোটরসাইকেল। কিন্তু হেলমেট পরিধান নিশ্চিত করা, গতি নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং চালকের লাইসেন্স থাকার বিষয়টিও সেভাবে নজরদারিতে নেই।
বিআরটিএর গত বছরের হিসাব অনুযায়ী, দেশে ৪০ লাখের বেশি মোটরসাইকেল নিবন্ধিত থাকলেও লাইসেন্স আছে ২৫ লাখেরও কম। অর্থাৎ ১৫ লাখ মোটরসাইকেলের বৈধ চালক নেই।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘৪০ শতাংশ মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মানুষ মারা যাচ্ছে। আমরা নীতিমালা করছি।’
বিআরটিএর হিসাবে, গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশে মোটরচালিত নিবন্ধিত যানবাহনের সংখ্যা ৫৬ লাখ ৬১ হাজার ৪১৮। এর মধ্যে মোটরসাইকেলই ৪০ লাখ ৬৫৭টি এবং বাস ৫২ হাজার ৪৬৮। এ দুটোই দেশে সড়ক দুর্ঘটনার বড় কারণ বলে উঠে আসছে বিভিন্ন গবেষণায়। সম্প্রতি মাদারীপুরের শিবচরে দুর্ঘটনার পরও সামনে আসে ইমাদ পরিবহনের বাসের চালকের ক্লান্তি, বেপরোয়া গতি এবং গাড়ির ফিটনেস না থাকার বিষয়টি।
দেশে ৫ লাখ ফিটনেসবিহীন যানবাহন থাকার তথ্য অনেক পুরোনো হওয়ায় হালনাগাদ করার চেষ্টা চালাচ্ছে বিআরটিএ। সংস্থার এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘সংখ্যাটা ১০ লাখের কাছাকাছি হবে। তবে তথ্য পাওয়ার আগপর্যন্ত নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না।’
অভিযোগ নিয়ন্ত্রণকারীদের বিরুদ্ধে
যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশে পরিবহনও নিয়ন্ত্রণ হতে হবে ডিজিটালি। কোন গাড়ির ফিটনেস সনদ স্থগিত, রুট পারমিট স্থগিত আছে; ঘরে বসেই দেখতে পাওয়া উচিত। এটা দেখার দায়িত্ব নিয়ন্ত্রণকারীদের। কিন্তু যাঁরা দেখবেন, তাঁরা সহজেই ম্যানেজ হয়ে যান।’
হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত আইজি মো. শাহাবুদ্দিন খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, নজরদারি শতভাগ না হলেও পুলিশের পক্ষ থেকে মামলা ও সতর্ক করার মতো বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়। তিনি জানান, গত বছর মহাসড়কে ১ লাখ ৪১ হাজার ৮৪১টি মামলা হয়েছে। বেশি গতির জন্য মামলা দেওয়া হয়েছে ২৭ হাজার বাহনের বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, ‘মহাসড়কে পুলিশকে ম্যানেজ করে চলার বিষয়টি অস্বীকার করা যাবে না। তবে ঢালাওভাবে বললেও ঠিক হবে না। কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা আছে। যারা জড়িত তাদের শাস্তির আওতায় আনা হয়, হচ্ছে।’
এক লাইসেন্সে অন্য যান চালানো
বিআরটিএর গত বছরের হিসাব অনুযায়ী, দেশে নিবন্ধিত ভারী যানবাহনের সংখ্যা ২ লাখ ৬৪ হাজার ৩৪৪, যার বিপরীতে লাইসেন্স আছে ১ লাখ ৫ হাজার ৭৪৬ জনের। অর্থাৎ ১ লাখ ৫৮ হাজার ৫৯৮টি গাড়ি চালাচ্ছেন অন্য ক্যাটাগরির চালকেরা।
বাংলাদেশ পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বলেন, ‘দেশে চালকের সংখ্যা বেশি হলে এ অবস্থা তৈরি হতো না। বছরের পর বছর বিআরটিএ কয়েক লাখ লাইসেন্স বরাদ্দ করতে পারছে না, ফলে বাড়ছে চালকসংকট। এক লাইসেন্স দিয়ে আরেক গাড়ি চালাতে হচ্ছে।’
সার্বিক বিষয়ে মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী বলেন, সফলতার পাশাপাশি ব্যর্থতাও থাকবে। দেশের প্রায় ৫ কোটি মানুষের জীবন-জীবিকার পরিবহন পেশাকে নিরাপদ করতে কাজ চলছে।
মামলা খুবই কম
যাত্রী কল্যাণ সমিতির এক জরিপে উঠে আসে, দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ৮০ শতাংশ ভুক্তভোগী মামলা করে না। সমিতির মহাসচিব বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনার ৮০ শতাংশই আপসে সমাধান হয়ে যায়। ২০ শতাংশ মামলা হলেও তার ৯৯ ভাগ ক্ষেত্রেই আসামিরা খালাস পেয়ে যায়। শিবচরের ঘটনা দেখুন, একেকজনের একেক জেলায় বাড়ি। কীভাবে মামলা করবে? অন্য দেশে সরকার বাদী হয়ে মামলা করে।’
অতিরিক্ত আইজিপি শাহাবুদ্দিন বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের পক্ষে বেশির ভাগ মীমাংসা করে ফেলে। পুলিশের পক্ষ থেকে মামলার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু ক্ষতিপূরণ পেলে আইনের পথে আসতে চায় না। তদন্ত ঝুলে থাকার অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, কিছু বিশেষ ইস্যুতে হয়তো সময় লাগে। প্রমাণ না মেলা, সাক্ষী না পাওয়া। তবে মামলার বড় অংশই তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়।
ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
৩ দিন আগেদেশের পরিবহন খাতের অন্যতম নিয়ন্ত্রণকারী ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কমিটির বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সাইফুল আলমের নেতৃত্বাধীন এ কমিটিকে নিবন্ধন দেয়নি শ্রম অধিদপ্তর। তবে এটি কার্যক্রম চালাচ্ছে। কমিটির নেতারা অংশ নিচ্ছেন ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের...
৩ দিন আগেআলুর দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে এবার নিজেই বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে আলু বিক্রি করা হবে। একজন গ্রাহক ৪০ টাকা দরে সর্বোচ্চ তিন কেজি আলু কিনতে পারবেন...
৩ দিন আগেসপ্তাহখানেক আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকের ওয়াল বিষাদময় হয়ে উঠেছিল ফুলের মতো ছোট্ট শিশু মুনতাহাকে হত্যার ঘটনায়। ৫ বছর বয়সী সিলেটের এই শিশুকে অপহরণের পর হত্যা করে লাশ গুম করতে ডোবায় ফেলে রাখা হয়েছিল। প্রতিবেশী গৃহশিক্ষকের পরিকল্পনায় অপহরণের পর তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়...
৩ দিন আগে