স্কোয়াশ চাষে সফল তরুণ

বরুড়া প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১০: ৩০
আপডেট : ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৫: ৪৯

বরুড়া উপজেলার মহেশপুর গ্রামের সবুজ হোসেন নামের এক তরুণ ইউটিউবে দেখে স্কোয়াশ চাষ করেছেন। ইতিমধ্যে তিনি ফল বিক্রি শুরু করেছেন। উৎপাদন খরচের চাইতে তাঁর কয়েক গুণ বেশি লাভ হবে বলে আশা করছেন তিনি।

কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার ইলিয়টগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে স্কোয়াশ চাষ হলেও বরুড়া উপজেলায় ফসলি জমিতে এটিই প্রথম চাষ— এমনটা দাবি করছেন এই তরুণ। উপজেলা কৃষি অফিসও এতে সায় দিয়েছে। তবে তারা বলছে, এর আগে বাড়ির উঠানে কিংবা শখের বশে ছোট পরিসরে চাষ হয়েছে।

জানা গেছে, স্কোয়াশ বিদেশি সবজি। সবুজ ও হলুদ দুই ধরনের রঙের হয়ে থাকে। বাংলাদেশে দিন দিন এর চাষ বাড়ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্কোয়াশে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘এ’ রয়েছে। এর পাতা ও কাণ্ড-ও সবজি হিসেবে খাওয়া যায়। এটি শীতকালীন সবজি।

কৃষি অফিসের তথ্যমতে, স্কোয়াশ চাষের জন্য বেলে-দোআঁশ মাটি উপযুক্ত। ভালো ফলন পেতে হলে জমি গভীরভাবে চাষ করতে হয়। ভালো ফল পেতে সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে বীজ বপন করা হয়। তবে আগাম শীতকালীন ফসলের জন্য আগস্টের মাঝামাঝি থেকে সেপ্টেম্বরে জমিতে সরাসরি বীজ রোপণ করা হয়।

বীজ রোপণের অল্পদিনের মধ্যেই গাছ বেড়ে ওঠে। ৩৫ থেকে ৪০ দিনের মধ্যে গাছে ফুল আসে। পরাগায়নের ১০ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে ফল সংগ্রহ করতে হয়। বীজ লাগানো থেকে ফল তুলতে সময় লাগে দুই থেকে আড়াই মাস।

মহেশপুর গ্রামে সরেজমিন দেখা গেছে, স্কোয়াশের লতা কুমড়ার লতার মতো। লতার নিচে ধরে আছে স্কোয়াশ। কোনোটির ওজন দুই থেকে দেড় কেজির মতো। গাছের গোড়ায় স্কোয়াশের বোঁটা লাগানো।

বরুড়ার মহেশপুর গ্রামের চাষি সবুজ হোসেন দাবি করে বলেন, উপজেলায় তিনিই প্রথম এই সবজির চাষ করছেন। ভালো ফলন পাচ্ছেন। নিজে খাচ্ছেন এবং বাজারে বিক্রি করছেন। তিনি ৩৪ শতাংশ কৃষি জমিতে স্কোয়াশের পাশাপাশি আধুনিক পদ্ধতিতে ক্যাপসিকাম চাষ করছেন।

সবুজ হোসেন জানান, একটি স্কোয়াশ গাছে গড়ে ১২ থেকে ১৬ কেজি ফল হয়। প্রতি বিঘা জমিতে স্কোয়াশ উৎপাদনের জন্য খরচ হয় ৯ থেকে ১০ হাজার টাকা। মুনাফা হয় ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা। স্থানীয় বাজারে স্কোয়াশ পরিচিত সবজি না হলেও বিভিন্ন সুপারশপে এর চাহিদা ব্যাপক। কুমিল্লার মাটিতে স্কোয়াশের ভালো ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। এই সবজি চাষে কৃষকেরা লাভবান হতে পারবেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বরুড়ায় বড় পরিসরে স্কোয়াশ সবজি চাষ এটায় প্রথম। তবে এর আগে ছোট পরিসরে আরও কয়েকজন চাষ করেছেন। আমিও আমার অফিসের পাশে ছোট পরিসরে স্কোয়াশ সবজির চাষ করছি। এটি বাংলাদেশের নতুন সবজি হিসেবে জনপ্রিয় হচ্ছে। এটি খেতে সুস্বাদু ও ভিটামিন সমৃদ্ধ। এর চাষ লাভজনক। বাজারে এর চাহিদা বাড়ছে।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরও বলেন, কৃষি অফিস চাষি সবুজ হোসেনকে পরামর্শ দিয়েছে। কর্মকর্তারা বিভিন্ন সময়ে সবুজ হোসেনের স্কোয়াশ সবজি খেত পরিদর্শন করেছেন।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত